You are currently viewing রামাদান দোয়া কবুলের মাস। যেভাবে দোয়া করলে আপনার দোয়া ও কবুল হবে ইনশাআল্লাহ।

রামাদান দোয়া কবুলের মাস। যেভাবে দোয়া করলে আপনার দোয়া ও কবুল হবে ইনশাআল্লাহ।

এবারের রামাদান রচিত হোক অসংখ্য দোয়া কবুলের গল্পের। রামাদান দোয়া কবুলের এক অনন্য মাস।হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রোজাদার ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার কাছে এতটাই ভালোবাসার পাত্র যে, সে কিছু চাইলে আল্লাহতায়ালা তা ফিরিয়ে দেন না।

প্রিয় ভাই বোন,আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস, কিংবা দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকা আপনার দোয়া গুলো এ মাসে কবুল হোক। দোয়া কবুলের আনন্দে হৃদয়টা ভরে উঠুক।

এ রমজানে দশটি অপূর্ণ বিষয়ের তালিকা করুন।
যে দোয়া গুলো আপনি দীর্ঘ সময় থেকে করতেছেন, কিন্তু কবুল হয়নি!তা তালিকার মধ্যে আনুন।তালিকায় অবশ্যই হালাল রিজিক, উত্তম জীবনসঙ্গী,ভয়াবহ এ ফিতনার জামানায় বারাকাহপূর্ণ, সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে থাকার হায়াত কামনা করুন।বিবাহিত ভাইয়েরা নেক সন্তানের জন্য দোয়া করুন।উম্মাহর জন্য দোয়া করুন।

এ সাস যেহেতু দোয়া কবুলের মাস। তাই ইখলাস ও বিশ্বাসের সাথে দোয়া করুন। দোয়া করার সময় বিশ্বাস রাখুন আপনার দোয়া কবুল হবেই, হবে।আর অবশ্যই চাওয়াটা হালাল হতে হবে। মনে রাখবেন আপনি এমন একজনের কাছে চাচ্ছেন যার কাছে কোন কিছুই অসম্ভব না।হাদিসে বর্ণিত আছে : মহান আল্লাহ বলেছেন, “আমার প্রতি বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সঙ্গে আচরণ করি। আর আমি (জানা ও দেখার মাধ্যমে) তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে।

 

দোয়া কবুলের জন্য! দোয়া কবুলের মুহূর্ত গুলো সর্বোচ্চ ভাবে তালাশ করুন। আপনার চেষ্টা প্রচেষ্টাই সফলতায় এনে দিবে,মনে রাখবেন পরিশ্রমিরাই সফল হয়।আর আল্লাহর ছেয়ে কে আছে শ্রেষ্ঠ? উত্তম বদলা দেয়ার? আল্লাহ আপনাকে দেখছেন এবং জানেন আপনার হৃদয়ের খবর। মরিয়া হয়ে চাইতে হবে,মায়ের কাছে শিশু সন্তান যেভাবে বায়না ধরে সেভাবে। মা তো কিছুই দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু আপনার, আমার রবের কাছেই একমাত্র সব কিছু পাওয়া যায়।

আমার রব্ব,অত্যধিক লজ্জাশীল, দয়াময় ও পরম করুণাময়। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে তখন তিনি তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ সুরা মুমিন, আয়াত, ৬০।

যে সময় গুলোতে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

আজান ও ইকামতের সময়টুকুতে দোয়া করুন। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (তিরমিজি, হাদিস: ২১২)।

আজানের সময় দোয়া করুন। এ মাসে বেশি বেশি হাজতের নামজ পড়ে দোয়া করুন। ওযু করার পর তাহিয়াতুল অজুর নামাজ পড়ে দোয়া করুন।বৃষ্টির সময় দোয়া করুন। আসরের পরে পুরোটা সময় দোয়া আজকারের পিছনে ব্যয় করার চেষ্টা করুন।বাবা মায়ের থেকে দোয়া চাইবেন। রমজান প্রত্যেক জুমার দিন আলাদা পরিকল্পনা রাখুন। জৃমার দিন এমনিতেই দোয়া কবুলের দিন, তার উপর রামাদান ব্যাপারটা সুন্দর না? জুম্মার দিন আসর এবং মাগরিবের মধ্যবর্তী সময় দোয়া কবুল হয়।

ইমাম আহমদ (রহ.)-ও আসরের পর বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়ার কথা বলেছেন। বিখ্যাত হাদিসের গ্রন্থ তিরমিজি শরিফের ২য় খণ্ডের ৩৬০ নং পৃষ্ঠায় তাঁর সবিশেষ কথাটি উল্লেখ আছে।

বিশেষ করে তাহাজ্জুতের সময় দোয়া করবেন। সেহরি খাওয়ার কিছু সময় আগে উঠে ৪ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়বেন,কিছু সময় দুরুদ ইস্তেগফার পড়ে, চোখের পানি চেড়ে, সম্পূর্ণ আবেগ নিয়ে মুনাজাতে বসবেন, মনে রাখবেন তাহাজ্জুদের দোয়া বিফলে যায় না।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে দুনিয়ার কাছাকাছি আকাশে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেন-
> কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেবো।কে আছে এমন যে, আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে তা দেবো।> কে আছে এমন যে, আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করবো।’ (মুসলিম, বুখারি, মুসনাদে আহমাদ)

ইফতারির সময় দোয়া করুন। ইফতারের সময়টি মহান আল্লাহ তাআলার কাছে খুবই পছন্দনীয়। এ সময় যখন কোনো মুমিন ইফতার সামগ্রী নিজের সামনে রেখে নিদিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, তখন আরশের মালিক ওই মুমিনের তাকওয়া (আল্লাহর প্রতি ভয়) ও আনুগত্য দেখে ব্যাপক খুশি হন। যে কারণে ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে আমাদের দোয়া সহজেই কবুল হয়।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুইটি আনন্দঘন মুহূর্ত রয়েছে। একটি হলো ইফতারের সময় (এ সময় যেকোনো নেক দোয়া কবুল করা হয়)। অন্যটি হলো (কেয়ামতের দিবসে) নিজ প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।’ (তিরমিজি ৭৬৬, বুখারি ৭৪৯২, মুসলিম ১১৫১)

প্রিয় ভাই ও বোন,যে কোন সময় দোয়া কবুল হতে পারে, তবে এ সময়টুকু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ সময়গুলো আমাদের সর্বোচ্চ ভালোভাবে তালাশ করা উচিত। এছাড়া আপনার জানার মধ্যে যে সময় গুলো আছে সে সময়।

আন্তরিকতা নিয়ে দোয়া করুন!একে অপরের জন্য দোয়া করুন, প্রিয় মানুষের জন্য, বাবা মায়ের জন্য মুসলিম উম্মাহর জন্য। দোয়া করবেন সাইদুল ইসলাম সজীবের জন্য ও। আল্লাহ আমাদের দোয়াগুলো কবুল করুন আমীন।

সাইদুল ইসলাম সজীব
১২/৩/২০২৪

Leave a Reply