You are currently viewing আদিপের মিশন পর্বঃ৩

আদিপের মিশন পর্বঃ৩

ফাতেমাঃ : আচ্ছা একটা কথা বলি রাগ করবেন না তো?
আদিপঃনা করবোনা পুল বানু বলেন?
ফাতেমাঃআচ্ছা আপনার চিন্তা দারা গুলো এমন কেন?সবাই আপনাকে নিয়ে কতো কথা বরে।কেউ পজিটিভ কেউ নেগেটিভ। আপনাকে নিয়ে যে মানুষ এভাবে বলে আপনার কষ্ট হয় না!জানেন আপনার সাথে আমি কারো মিল দেখিনা!!সমাজ টাতে আজ আপনার মত পান্ডামেন্টাল ইসলাম পালন করা মানুষ খুব কম।

আদিপঃহুম কষ্ট তো হয়, কিন্তু আমি হতাশ না।রাসুলুল্লাহ সঃ গুরাবাদের সংজ্ঞা দিতে বলেছেন কেয়ামতের আগ মুহূর্তে আমার কিছু উম্ম আবির্ভাব হবে যারা হবে সম্পূর্ণ সমাজবিরোধী। যাদেরকে পরিবার খারাপ বলবে, সমাজ খারাপ বলবে, আত্মীয়রা সম্পর্ক ছিন্ন করবে কিন্তু তারাই সফলকাম। আল্লাহর রাসুল তাদের গুরাবা বলছেন।তাদেরকে ভাই বলছেন।বলেছেন তারা আমার সাথে একসাথে সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এবং এদের সংখ্যা হবে খুবই কম। জানেন আমার খুব ইচ্ছে নবীজি মৃত সুন্নত গুলোকে জিন্দা করা.এই যে আপনাকে বিয়ে করছি, আলহামদুলিল্লাহ্‌ অনেক গুলো সুন্নত জিন্দা হলো!

বিধবা স্ত্রী কে বিয়ে করা,চাচাতো খালাতো বোনের মেয়েকে বিয়ে এটা তো আমাদের দেশেদেশে এখন উঠেই গেছে।এখন তো বিয়ের পর সবাই হাসি ঠাট্টা গান বাজনাতে ব্যস্ত! কয়জনে খেজুর বিতরন করে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের বিয়েরর পর সবাইকে খেজুর খাওয়ানো হলো.সহীহ হাদীসে বর্ণিত রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন। শেষ যমনায় একটা সুন্নত জিন্দা করা ১০০ টা শহীদের সমান

জানেন আমি সপ্ন দেখি একদিন জাহিলি এ সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে, সুন্নতি সমাজ ব্যবস্থায় এ সমাজ রুপান্তরিত হবে। যদি এ বিপ্লবী মিশনে ফরিবার সমাজেের বাধার সম্মুখীন হই আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন নাতো?

ফাতেমা এসব শুনে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলো না! আদিপ কে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।কান্না করতে করতে বললো।কখনোই চেড়ে যাবো না আমার মানুষটিকে। সবাই চলে গেলেও আমি যাবো না. ইনশাআল্লাহ,কখোনোই না।ফাতেমা আদিপকে খুব শক্ত ভাবে জড়িয়ে দরে।মনে হয় এ বুঝি তার আদিপকে কেউ নিয়ে জাবে তার থেকে।কথা গুলো যতই চিন্তা করতেছে আর ততই তার বুকের মাঝে হাহাকার লাগতেছে।ততই আদিপকে শক্ত করে জড়িয়ে দরতেছে ফাতেমা।আর চোখের পানিতে আদিপের বুক বাসিয়ে দিচ্ছে।

আদিপঃআমার লক্ষি ফাতেমা?
ফাতেমাঃজ্বী
আদিপঃএকটা কথা বলি?
ফাতেমাঃআমাকে কথা বলতে বুঝি অনুমতি লাগে?বলুন।
আদিপঃভালোবাসি আপনাকে, খুব বেশি ভালোবাসি!
ফাতেমাঃ জানি তো পাগলা 😚
আদিপঃকে পাগলা?
ফাতেমাঃআপনি আমার পাগলা 😃।এ কথা বলে কাচুমাচু করতে থাকে, ফাতেমা আদিপ দুইজন দুজনের দিকে তাকিকে মিটমিট করে হাঁসতেছে। এই হাঁসি বিজয়ের,এই হাঁসি ভালোবাসার।

আদিপঃএই শুনুন আপনার জন্য আমি কিছু উপহার আনছি দেখবেন?
ফাতেমাঃকই দিন দিন দেখি দেখি কি আনচেন।

আদিপ পাতেমার হাতে একটি প্যাকেট তুলে দেয়।শুনুন প্যাকেট টি আপনি একা খুলে দেখবেন।এটা শুধু আপনার জন্য।ফাতেমা আদিপের হাত দোরে তার কাছে বসায় তার কপালে আলতো করে একটা ভালোবাসার স্পর্শ দেয়।আদিপ মসজিদের দিকে রওনা দেয়।

আদিপ চলে যাওয়ার পর ফাতেমা প্যাকেট খুলে দেখলো সেখানে একটা,তাফহিমুল কুরআন সুর আন নিসার তাফসির।ভালোবাসার চাদর নামে একটি বই। ১টি মেসওয়াক ১টি নামাজের জায়নামাজ ও একটি পুরাতন ডাইরি।ফাতেমা আর দেরি না করে ডাইরির খুললো।ডাইরির প্রথম একটি লেখাতে ফাতেমার চোখ আটকে গেল।সেকানে আদিপ লিখেচে!

প্রিয় হুমায়রা
বিয়ের পর আমি তোমাকে হুমাইরা বলেই ডাকবো। বিশ্বনবী উনার স্ত্রীদের এমন সুন্দর সুন্দর নামে ডাকতেন।তোমায় নিয়ে সাজাবো আমি অনিন্দ সুন্দর এক সংসার।

শুনো প্রিয়,
আমাদের স্বপ্নের সংসারের জন্য ছোট একটা দোতলা ঘর হলেই চলবে।
দোতলায় থাকবে খোলা বেলকনি। যেন তুমি আর আমি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি ছুঁতে পারি। চাদনী রাতের জোছনা যেন ভেসে ভেসে আমাদের বেলকনিতে । যখন আমি জোছনা দেখবো তখন তুমি পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরবে।
এতটুকু রোমান্টিক তো তোমাকে হতেই হবে। ❤

আর হ্যাঁ! আমাদের সংসার জুড়ে থাকবে এত এত বই। বেড রুমের চারপাশে কাঠের দেয়াল জুড়ে হাজার রকমের বই থাকবে আমাদের। ফিকশন, থ্রিলার, ধর্মগ্রন্থ, ভ্রমণকাহিনী, জীবনী গ্রন্থ, কি চাই তোমার!
সর্বদা ঘরজুড়ে বিচরণ করবে বইয়ের মাদকীয় গন্ধ৷ তুমি আর আমি অবসরে ডুবে যাবো বইয়ের মাদকতায়। তোমার আমার ঝগড়া হবে বই নিয়েই। 🤗
আবার মাঝে মাঝে রাগ ভাঙানোর জন্যে তোমাকে আমি হাত ভর্তি বই উপহার দেবো। 😊

আমাদের বেলকনিতে থাকবে শত ফুলের গাছ। কখনো ডিম লাইটের নিয়ন আলোয়, কখনো ভরা পূর্নিমায় বেলকনির পূর্ব-দক্ষিণে রাখা ছোট টেবিলটাতে মুখোমুখি হয়ে বসবো। পরস্পর চোখে চোখ রাখবো। আকস্মিক তোমার কপোলে আমার ঠোঁটের…
থাক এই কথা বাদ থাকুক। এক চিমটি লজ্জা হচ্ছে আজ। 💓

প্রিয় নন্দিনী,
আমরা তো খুব করে ঘুরে বেড়াবো বিশ্বভূবন। আমাদের সফর সঙ্গী হবে লালসবুজের পতাকা আর কিছু বই। তুমি হয়তো জানো না পাহাড়ে ট্রেকিং এর প্রতি আমার দূর্বলতা বেশ। গত বছর যখন রাঙ্গামাটিতে সফরে গেলাম। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে হাঁটু থরথর করে কাঁপছিল। প্রিয় আব্দুল্লাহ আল আজাদ ভাই এর সাহায্যে তখন পাহাড়ের চূড়া থেকে নেমেছি। সে এক রোমাঞ্চকর কথা। কিন্তু তোমাকে নিয়ে জয় করবো!! আমি জয় করতে চাই পাহাড়ের চেয়ে উচ্চবিলাসী স্বপ্ন আমার।

চাঁদনী রাতে বা বেলকুনিতে বসে কবিতা শুনাবো তোমাকে, আমি তোমাকে শুনাবো বিশ্বনবীর তার স্ত্রীদের প্রতি ভালোবাসার কথা।

তোমাকে কিন্তু বইপোকা আর ভ্রমণপিয়াসী হতে হবে প্রিয় ফুল বাগানের( ফুল কলি)

ইতি তোমার মাজলুম হাসবেন্ড–(আদিপ)

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,
আজকের পর্বে শিক্ষা।

১.স্ত্রীকে সুন্দর সুন্দর নামে ডাকা সুন্নাহ।

২. শব্দ করে না হেঁসে মুচকি হাসা সুন্নত। ।

৩.স্ত্রী কে ভালোবাসি বলা সুন্নাহ।

Leave a Reply