You are currently viewing ইস্তেগপারের গুরুত্ব ও ফজিলত।

ইস্তেগপারের গুরুত্ব ও ফজিলত।

এ রমজানে ইস্তেগফারকে, জিব্বার সঙ্গী বানিয়ে নিন।নিঃসন্দেহে আমরা খুব কঠিন সময় পার করতেছি। ডানে, বামে, সামনে, পিছনে চতুর দিকে ফিতনা আমাদের ঘিরে রেখেছে। গুনাহ থেকে পালায়ন করার জন্য আমাদের মুমিন ভাই, বোনদেন অনেক বেগ পেতে হচ্ছে ।আল্লাহ আমাদের হৃদয়ের খবর জানেন।

গুনাহের একটা শাস্তি হলো দোয়া কবুল হয় না। আপনার আমার অনেক দোয়া কবুল হওয়া প্রয়োজন। যদি আমাদের রব আমাদের থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন তবে আমরা তো ধ্বংস হয়ে যাব। ইস্তেগফার মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়, দোয়া কবুল হয়। তাই ক্ষমা ও নাজাতের এই মাসে ইস্তেগফারের সাথে লেগে থাকুন সার্বক্ষণিক।

আপনি কি এমন ব্যক্তি হতে চান??
যে ব্যক্তি কোনো দোয়া করার সাথে সাথেই কবুল হয়ে যায়।তাহলে উঠতে বসতে চলতে ফিরতে সবসময় পড়ুন ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’তবে আপনি আসলে কি পড়তেছেন তার অর্থ বুঝে পড়বেন। অর্থ না জানলে আপনি কিভাবে বুজবেন আপনি কোন বিষয়টা আল্লাহর কাছে তুলে ধরলেন। তাই যা পড়েন তার অর্থ জানা আবশ্যক।’আস্তাগফিরুল্লাহ’ অর্থ আল্লাহ আমাকে তুমি ক্ষমা করো।

 

শয়তান আমাদের ওয়াসওয়াসা দেয়।সে চায় আমরা যেন ইস্তেগফার না করি। কারন ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ এর আরেকটা ব্যাখ্যা হলো এটা একটা ‘রাবার’
যাকে বলে ‘লিখা মুছার ডাস্টার’।আমরা যতবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়ব ততবারই আমাদের পাপের খাতা থেকে পাপ মুছে ফেলা হবে।তাহলে আমরা যদি প্রতিদিন এক হাজার বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়ি তাহলে আমাদের এক হাজার টা পাপ মুছে ফেলা হবে। এভাবে প্রতিনিয়ত ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়তে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই আমরা সম্পুর্ণ নিষ্পাপ হয়ে যাব।

কোরআনে এরশাদ হয়েছে,
‘হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো অতঃপর তার কাছে তওবা করো, তাহলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সঙ্গে আরও শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না।’ (সূরা হুদ, আয়াত ৫২)।

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে।
আল্লাহ তাদের আজাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ইস্তেগফার করছে।’ (সূরা আনফাল : আয়াত ৩৩)।

নিয়মিত ইস্তেগফার পাঠকারী ব্যক্তির জন্য আনন্দের বিষয় হচ্ছে। একটা সময়ে এসে ফেরেশতারা আল্লাহকে বলবে হে আল্লাহ_আপনার এই বান্দা এত বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ’ পাঠ করেছে যে,,তার আমলনামায় এখন আর কোন পাপই লিপিবদ্ধ নেই। সব পাপ মুছে ফেলা হয়ে গেছে। কিন্তু আপনার বান্দা এখনও ইস্তেগফার পড়তেছে, এখন কি করব আমরা।

তখন আল্লাহ বলবেন। খাতার মধ্যে প্রতিটা লিখার যে দাগ গুলা রয়ে গেছে সেগুলা মুছে দাও। ফেরেশতারা আবার বলবে হে আল্লাহ_ দাগ মুছাও শেষ। এখন কি করব।আল্লাহ তখন বলবেন,, এবার তাহলে একটা ইস্তেগফার এর পরিবর্তে একটা সওয়াব তার
আমলনামায় লিখে রাখো।

সুবহানআল্লাহ,,,

ইস্তেগফারে রয়েছে বহুমুখী উপকারিতা।

ইস্তিগফারের কারণে প্রচুর বৃষ্টিবর্ষণ হয়। বাগান ও শস্যে ভালো ফসল হয়। নদীনালা থাকে জীবন্ত।
ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ উত্তম সন্তান, সম্পদ ও জীবিকার দ্বারা সম্মানিত করেন।দ্বীন পালন সহজ হয়, কর্মজীবন হয় সুখের।দয়াময় আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে যে দূরত্ব আছে, তা মিটে যায়।ইস্তিগফারকারীর কাছে দুনিয়াকে খুব তুচ্ছ করে দেওয়া হয়।মানব ও জিন শয়তান থেকে তাকে হেফাজত করা হয়।
দ্বীন ও ইমানের স্বাদ আস্বাদন করা যায়।

আল্লাহর ভালোবাসা অর্জিত হয়।বিচক্ষণতা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর হয়।বেকারত্ব দূর হয়।আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জিত হয়। আর তওবার কারণে আল্লাহ আনন্দিত হন।মৃত্যুর সময় ফেরেশতারা তার জন্য সুসংবাদ নিয়ে আসে।

হাশরের মাঠে মানুষ যখন প্রচন্ড গরম ও ঘামের মধ্যে থাকবে, তখন ইস্তিগফারকারী থাকবে আরশের ছায়াতলে। কিয়ামতের দিন মানুষ যখন অস্থির থাকবে, ইস্তিগফারকারী তখন ডানপন্থি মুত্তাকিনদের দলে থাকবে। মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকা যায়।
আরশ বহনকারী ফেরেশতারাও তার জন্য দোয়া করেন। (নাজরাতুন নাইম ফি মাকারিমি আখলাকির রাসুল: ২/৩০২) সহিহ হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী ইস্তেগফারে রয়েছে আরো অনেক ফজিলত, আমি সংক্ষেপে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছি মাত্র ।

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করে আল্লাহ তায়ালা তার সব সংকট থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করে দেন, তার সব পেরেশানী দূর করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস, ১৫১৮)

 

তাওবা ও ইস্তেগফার মুমিন ও মুত্তাকীদের এক বিশেষ গুণ। মানুষকে আল্লাহ তাআলা তার ইবাদত-বন্দেগী ও তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলার জন্য সৃষ্টি করেছেন।তাই আসুন এ রমজানে বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। এবং ইস্তেগফারকে জিহ্বার সঙ্গী বানিয়ে নি। আল্লাহ আমাদের সকল ছাওয়া গুলো কবুল করুক, মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ বানিয়ে দিক।

দুর্বল লাগতেছে ইস্তেগফার পাঠ করুন, উঠতে, বসতে, চলতে ফিরতে,মা বোনেরা রান্না করার সময় ইস্তেগপার পাঠ করুন। জিব্বা থাকুক আল্লাহর স্মরণে। যদি এ আমল নিয়মিত করতে পারেন, আল্লাহ আপনার সকল দোয়া কবুল করবেনই করবেন। ইনশাআল্লাহ।

সাইদুল ইসলাম সজীব
১৬/০৩/২০২৪

Leave a Reply