You are currently viewing হালাল প্রেম কীভাবে করবেন?

হালাল প্রেম কীভাবে করবেন?

ভালোবাসার সাথে পৃথিবীর অন্য কোনো কিছুর তুলনা হয় না।

হালাল প্রেমের কিছু বৈশিষ্ঠ্য আছেঃ

প্রেমের সাথে কোনোদিন বিবেক সম্পর্কিত হতে পারে না।

জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম আঃ যখন জলন্ত আগুনে ঝাঁপ দেয়, তার বিবেক বলছিল,এই আগুনে ঝাঁপ দিয়ে লাভ কি?কোন যুক্তিতে আগুনে লাফ দিব?

কিন্তু প্রিয় রবের প্রতি ভালোবাসাপ্রেম তাকে বলেছিল,আগুনে ঝাঁপ দেওয়াই পরম প্রাপ্তি,হৃদয়গলানো তৃপ্তি।অবশেষে প্রেম শব্দটা তাকে আগুনে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করলো।বিবেকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক অহি-নুকুল।

প্রেমের আরেক বৈশিষ্ঠ্য হলো প্রেম পরিমাপযোগ্য না।কেও প্রেমকে পরিমাপ করতে পারবে না।

প্রেমের গতি রকেটের গতি। প্রেমের গতি বোরাকের গতি। কেউ এক পা বোরাকে আর এক পা জমিনে রেখে এক মাইক্রোসেকেন্ডও স্থির থাকতে পারবে না।তাকে বাচতে দুই পা-ই জমিনে রাখতে হবে না হয় দুই পা-ই বোরাকে রাখতে হবে।

এই সাধাসিধে ঘটনা আমাদের তীক্ষ্ণ কিছু বিষয় ইঙ্গিত করে।আল্লাহ তায়ালা কাওকে দুইটি হৃদয় দিয়ে সৃষ্টি করেননি।কেও একসাথে দুইজনকে ভালোবাসতে পারে না। দুইজনকে একসাথে ভালোবাসলে সে প্রেমের গতি হবে পিপড়ার গতি আর সে প্রেমকে ছোট একটি নিক্তিতেই পরিমাপ করা যাবে।যা উল্লেখ্য বৈশিষ্ঠ্যের সাথে সাদৃশ্য নয়।

সুতরাং প্রেম করতে হলে,কাওকে ভালোবাসতে হলে আপনার জন্য দুটি অপশন আছেঃ

প্রিয়তম রবকে ভালোবাসতে হবে।

নন-মাহরাম কাওকে ভালোবাসতে হবে।

প্রথমে নন মাহরাম বিষয়টা ক্লিয়ার করি।নন মাহরাম বলতে বোঝায় যাদের সাথে আপনার সম্পর্ক হালাল নয়।নন মাহরাম কে?এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে স্পষ্ট করে দিয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَقُل لِلمُؤمِنٰتِ يَغضُضنَ مِن أَبصٰرِهِنَّ وَيَحفَظنَ فُروجَهُنَّ وَلا يُبدينَ زينَتَهُنَّ إِلّا ما ظَهَرَ مِنها ۖ وَليَضرِبنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلىٰ جُيوبِهِنَّ ۖ وَلا يُبدينَ زينَتَهُنَّ إِلّا لِبُعولَتِهِنَّ أَو ءابائِهِنَّ أَو ءاباءِ بُعولَتِهِنَّ أَو أَبنائِهِنَّ أَو أَبناءِ بُعولَتِهِنَّ أَو إِخوٰنِهِنَّ أَو بَنى إِخوٰنِهِنَّ أَو بَنى أَخَوٰتِهِنَّ أَو نِسائِهِنَّ أَو ما مَلَكَت أَيمٰنُهُنَّ أَوِ التّٰبِعينَ غَيرِ أُولِى الإِربَةِ مِنَ الرِّجالِ أَوِ الطِّفلِ الَّذينَ لَم يَظهَروا عَلىٰ عَورٰتِ النِّساءِ ۖ وَلا يَضرِبنَ بِأَرجُلِهِنَّ لِيُعلَمَ ما يُخفينَ مِن زينَتِهِنَّ ۚ وَتوبوا إِلَى اللَّهِ جَميعًا أَيُّهَ المُؤمِنونَ لَعَلَّكُم تُفلِحونَ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। [সুরা নুরঃ৩১]

মেয়েদের ক্ষেত্রে উল্লেখ্য সম্পর্ক বাদে সবাই নন মাহরাম।

ছেলেদের জন্য মাহরাম হল ১৪ জন। তারা হলেন,

🖋️🖋️মায়ের মত ৫ জন

মা, সৎ মা

নানি (মা এর মা ), সৎ নানি

দাদি (বাবার মা ), সৎ দাদি

শাশুড়ি ( স্ত্রী এর মা ), সৎ শাশুড়ি

দুধ-মা (যে মা ছোট বেলায় দুধ খাইয়ে ছিলেন)

🖋️🖋️বোনের মত ৫ জন

সহদর বোন

খালা ( মা এর বোন )

ফুফু ( বাবার বোন )

নাতনি (আপন ছেলে ও মেয়ের কন্যা

দুধ-বোন

🖋️🖋️মেয়ের মত ৪ জন

মেয়ে

ভাই-এর মেয়ে

বোনের মেয়ে

ছেলের বউ

এই ১৪ জন ছাড়া ছেলেদের জন্য সকল স্ত্রীলোক নন মাহরাম।

প্রথম অপশনটা ছিলো রবের প্রতি ভালোবাসা।এই অপশনে অনেক লাভ।আপনি যদি রবকে ভালোবাসেন তাহলে বাধ্য হয়ে আপনাকে মাহরাম সবাইকে ভালোবাসতে হবে।বাধ্য হয়েই ভালোবাসতে হবে।এমনকি এটা সওয়াবের কাজ।হাদিসে এমনটাই আছে।স্ত্রী, পরিবার পরিজনের প্রতি ভালোবাসা ইবাদতে অন্তর্ভুক্ত।

রাসুল সাঃ বলেন,”সওয়াবের আশায় কোনো মুসলমান যখন তার পরিবার পরিজনের জন্য সময় ব্যয় করে তা তার সদকা হিসেবে গন্য হয়।”

আলহামদুলিল্লাহ! কি সুন্দর কথা!

পরিবার পরিজনের প্রতি ভালোবাসাও সওয়াবের কাজ।এটাই হলো ইসলামের সৌন্দর্য।

এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের আল্লাহ তায়াকে ভালোবাসবেন নাকি নন মাহরাম কাউকে ভালোবাসবেন।

তবে মনে রাখবেন।নন মাহরাম কাওকে যদি ভালোবাসেন সেটা শিরক হবে।সোজা হিসাব।এটা আমার মনগড়া কথা নয়।কোরআনের কথা।আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَمِنَ النّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دونِ اللَّهِ أَندادًا يُحِبّونَهُم كَحُبِّ اللَّه ۖ وَالَّذينَ ءامَنوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ ۗ وَلَو يَرَى الَّذينَ ظَلَموا إِذ يَرَونَ العَذابَ أَنَّ القُوَّةَ لِلَّهِ جَميعًا وَأَنَّ اللَّهَ شَديدُ العَذابِ

“আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আর কতইনা উত্তম হ’ত যদি এ জালেমরা পার্থিব কোন কোন আযাব প্রত্যক্ষ করেই উপলব্ধি করে নিত যে, যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর।”[সুরা বাকারাঃ১৬৫]

কিন্তু মনে রাখবেন এক হৃদয়ে কখনো দু’জনকে ভালোবাসতে পারবেন না।সুতরাং স্থির হোন, ভাবুন, চিন্তা করুন কাকে ভালোবাসবেন।

Leave a Reply