You are currently viewing বিজয়ের শতাব্দীতে ইসলাম।

বিজয়ের শতাব্দীতে ইসলাম।

ব্যথিত হৃদয় নিয়ে নিয়ে লিখতে বসেছি,যে ব্যথা হৃদয়কে করে ক্ষতবিক্ষত। একরাশ শূন্যতা লেগে আছে মনে! আজ আমি, আমরা,গোটা মুসলিম উম্মাহ বড়ো অভিভাবকহিন।মোসলমানদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তর! চোখের সামনে ধর্ষিত হচ্ছে, আমাদের মা বোনরা!আমারা তাদের সন্তান, কিংবা ভাই,হয়ে চুপচাপ দেখে যাচ্ছি! মনে হয় আমাদের অবস্থা এমন। ৭০ বছর বৃদ্ধা যেমন করুন চাহুনি দিয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনে।আজ আমাদের অবস্থা হয়েছে ঠিক তেমন, লাঞ্চনা,অসহায়ত্ব, মার খেতে খেতে পেরিয়ে গেল ১০০ বছর। তবুও আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হলো না।প্রতিনিয়তই লাঞ্ছনার শিরোনাম হচ্ছে আফিয়ার মত আমাদের অসংখ্য বোনেরা।

এ যেন পবিত্র কুরাআনের সুরা আননিসার ৭৫ আয়াতের আহবান । আমাদের নির্যাতিত বোনদের আর্তনাদ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন।

আর তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করছ না! অথচ দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুরা বলছে, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করুন এ জনপদ থেকে যার অধিবাসীরা যালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারণ করুন। আর নির্ধারণ করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী।’ সুরা আন নিসা।

তাহলে কি আমাদের অবস্থা অপরিবর্তনীয় রয়ে যাবে?না কখনোই না ইনশা আল্লাহ জুলুম নির্যাতনের পিচ্ছিল পথ ধরেই আসবে সফলতা!!

পবিত্র কোরআনের ঘোষণা: ‘অভিযোগ তো হচ্ছে তাদের উপর, যারা মানুষদের ওপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীর বুকে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহের আচরণ করে বেড়ায়; এমন (ধরণের জালেম) লোকদের জন্যই রয়েছে কঠোর আজাব। -সুরা আশ সূরা:৪২

অবশ্যই তাদের কথা আলাদা যারা (আল্লাহর ওপর) ঈমান আনে ও (সে অনুযায়ী) নেক কাজ করে এবং বেশি করে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করে। তাদের ওপর জুলুম করার পরই কেবল তারা (আত্মরক্ষামূলক) প্রতিশোধ গ্রহণ করে; আর যারা জুলুম করে তারা অচিরেই জানতে পারবে তাদের পরিণতি কী হতে যাচ্ছে। -সূরা শুআরা:২২৭

রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। কিন্ত যখন তিনি তাকে গ্রেফতার করেন, তখন আর তাকে ছাড়েন না। অত:পর নবী (সা:) এ আয়াত পাঠ করলেন, “আর তোমার রব যখন কোন জালিম জনবসতিকে পাঁকড়াও করেন, তখন তাঁর পাঁকড়াও এমনই হয়ে থাকে। তাঁর পাকড়াও বড়ই কঠিন, নির্মম ও পীড়াদায়ক।” -বুখারী

যখন আমাদের লাঞ্ছনা আর অপদস্তের ইতিহাস লিখতে ব্যস্ত গোটা পৃথিবী। ঠিক সে সময়, দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া উম্মাহর জন্য ধ্রুবতারা হয়ে আলো চড়াচ্ছে মুষ্টিমিও কিছু ঈমান দীপ্ত মুজাহিদরা । স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিজয়ের!যদিও তাদের সংখ্যা খুবই কম, কিন্তু হতাশ হওয়ার কিছু নেই!সংখ্যাদিক্য দিয়ে কখনো মুসলমানরা বিজয়ী হয়নি, বিজয়ী হয়েছে তাওয়াক্কুল এবং ঈমান দিয়ে।সেটি বদরের শিক্ষা কিংবা মুসলমানদের শেষ খেলাফত ওসমানী খেলাফতের সূচনার কথা! মঙ্গলদের,আক্রমণে আনাতলিয়ায় আশ্রয় নিয়ে কিছু মুষ্টিমে যোদ্ধা, যাদের ঈমান এবং তাওয়াক্কুলের কারণে আল্লাহ তাদেরকে, পুরো পৃথিবীর শাসন করার ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছেন। আর তা ৮০০ বছর পর্যন্ত টিকে ছিল।

আমি যদি এ মুহূর্তে বলি, পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে ১০০০/অথবা ২০০০ মোসলমান! যাদের ঈমান, আমল, এবং তাওয়াক্কুল সবার চেয়ে এগিয়ে। আর ২০ বছর পরে আল্লাহ তাদের হাতেই নেতৃত্ব দান করছেন। খুব বেশি কি অবাক হওয়ার মতো কিছু বলেছি!ইসলামের ইতিহাস কিন্তু তাই বলে।

হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন,

لاَ تَزَالُ طَائِـفَةٌ مِنْ أُمَّتِى ظَاهِرِيْنَ عَلَى الْحَقِّ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى يَأْتِىَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَالِكَ-

‘চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল হক-এর উপরে বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে’। এখানে ‘বিজয়ী’ অর্থ আখেরাতে বিজয়ী।
ছহীহ মুসলিম ‘ইমারত’ অধ্যায় ৩৩, অনুচ্ছেদ ৫৩, হা/১৯২০; অত্র হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ ঐ, দেউবন্দ ছাপা শরহ নববী ২/১৪৩ পৃঃ; বুখারী, ফাৎহুল বারী হা/৭১ ‘ইল্ম’ অধ্যায় ও হা/৭৩১১-এর ভাষ্য ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়

হযরত ইমরান বিন হুছায়েন (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِّنْ أُمَّتِىْ يُقَاتِلُوْنَ عَلى الْحَقِّ ظَاهِرِيْنَ عَلى مَنْ نَاوَأَهُمْ حَتَّى يُقَاتِلَ آخِرُهُمُ الْمَسِيْحَ الدَّجَّالَ، رواه أبوداؤد- ‘আমার উম্মতের মধ্যে সর্বদা একটি দল থাকবে যারা হক-এর উপর লড়াই করবে। তারা শত্রুপক্ষের উপর বিজয়ী থাকবে। তাদের সর্বশেষ দলটি দাজ্জালের সঙ্গে যুদ্ধ করবে’।

আবুদাউদ হা/২৪৮৪, মিশকাত হা/৩৮১৯।

ইমাম নববী এই দলটির পরিচয় সম্পর্কে বলেছেন- তাদের মাঝে রয়েছেন মুজাহিদ, ফকীহ, মুহাদ্দিছ, দুনিয়াবিমুখ, ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধকারীসহ অন্যান্য উত্তম কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ (নববী, শরহ মুসলিম হা/১২৪-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।

উক্ত দলটির বৈশিষ্ট্য হবে এই যে, তারা আল্লাহর কালেমাকে সমুন্নত রাখার জন্য পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে এবং ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের তরীকা মতে সকল প্রকার বাতিলের বিরুদ্ধে সকল যুগে সর্বাত্মকভাবে আপোষহীন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

বস্ত্ততঃ পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদে চিরকাল আহলুল হাদীছের উক্ত দল থাকবে এবং পথভোলা মানুষকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পথে ডাকবে। তারাই হ’ল হাদীছে বর্ণিত ফিরক্বা নাজিয়াহ বা মুক্তিপ্রাপ্ত দল’। যারা সর্বাবস্থায় পবিত্র কুরআন, ছহীহ হাদীছ ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের উপর আমল করে থাকে।[6]

ইয়াহুদীরা শত-শত বছর চেষ্টা করে মুসলমানদের ঐক্য( খিলাফত) ধ্বংস করে দেয় যার শত বছর পূরণ হয়ে গেছে. ।ইনশাআল্লাহ তারা বেশি দিন রাজত্ব করতে পারবে না।নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের ওয়াদা সত্য।

হযরত আবু হুরায়রাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে রাসুলুল্লাহ(সঃ) বলেছেন “মহান আল্লাহ্ এই উম্মতের জন্য প্রতি শতাব্দীর শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ পাঠাবেন যিনি ঐ সময়ে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে সঞ্চারিত করবেন”হারিয়ে যাওয়া দিনকে, আবার রি-নিউ করবেন। (সুনান আবু দাউদ ৫/১০০)

হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন,
“এই পৃথিবীর যদি মাত্র একদিন বাকি থাকে আল্লাহ্ সেই দিনটিকে প্রলম্বিত করে দিবেন যতক্ষন না আমার বংশধরের থেকে একজন প্রেরিত হয়।”
(সুনান আবু দাউদ, ৫/৯২)

যুগে যুগে অনেক মুজাদ্দিদ এসেছেন!!ইতিহাস পর্যালোচনা করেন,রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মৃত্যুর পর, পৃথিবী থেকে এভাবে পুরো খেলাফত উঠে যায় নি,যেটি হয়েছে ওসমানী খেলাফত পতনের পর। তাহলে কি দাঁড়ালো?পরিস্থিতি তখনকার থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন। এখন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগ, এ যুগ সামাল দিতে অবশ্যই একজন শক্তিশালী মুজাদ্দিদ প্রয়োজন।যিনি হবেন কামেল মুজাদ্দিদ(ইমাম মাহদী) ইনশা আল্লাহ। অবশেষে আল্লাহর ওয়াদা সত্যে প্রণীত হয়েছে।

খোরাসান বিজিত হয়েছে!!সাম্রাজ্যবাদীদের মাথা নুয়ে গেছে!!ফোরাতের পানি ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে!!

খেলাফাত আবারও প্রতিষ্ঠা হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে!সেটা ইমারতর ইসলামীয়া আফগান, কিংবা সোমালিয়ার ভূখণ্ড থেকে ,খোরাসানের হক দল চিহ্নিত হয়েছে এটা অনেক বড় নিদর্শন!!এটা নিয়ে আর কোন বিতর্ক থাকতে পারেনা!!দরবারী আলেমদের ও মানুষ চিনতে পেরেছে!! এখন সময় আল্লাহর সিদ্ধান্তের!!এখন সময় বিজয়ের!! দেখা যাক নিভু নিভু ফোরাত আমাদের কি চমক দেখায়!!

ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত এবং এ শতাব্দীতেই ইনশা আল্লাহ।

 

Leave a Reply