You are currently viewing আসুন দূরে থেকেই ভালবাসি।

আসুন দূরে থেকেই ভালবাসি।

আসুন ধুর থেকেই ভালোবাসি!!

আমার কাজিন,বয়সে আমার থেকে, ছয় মাসের ব্যবধান হবে!! ঢাকায় পড়াশোনা করে, এ সুবাদে থাকা হয় ঢাকায়। কিছুদিন আগে বেড়াতে গেলাম তাদের বাসায়। অনেকদিন পর দেখা হওয়ায় নানান রকম খোশ গল্প ব্যস্ত ছিলাম। আমার বিয়ে প্রসঙ্গ উঠাতে কথার ফাঁকে জিগ্যেস করলাম, তোর ভাবি কেমনরে?বিয়েতে তো আসা হয়নি!!তবে আগে থেকেই আশা করছি ভাবি খুব দিনদার হবে।কারণ বড়ো ভাইয়া একজন প্রাক্টিসিং মুসলমান।

আমার কাজিন থেকে তার ভাবির গল্প শুনছিলাম। কথা গুলো ছিলো পরম আনন্দের।যে অনুভূতি আল্লাহর দিকে রজ্জু করে সুবহানাল্লাহ❣️

কাজিনঃ

আমি ভাবিকে এখনো দেখিনি,দেখতে চাই ওনা! মায়ের থেকে শুনলাম ভাবি খুব সুন্দরী,দিনদার, খুবই ভালো।আম্মুর খুব কেয়ার করে।পুরোটা সংসার নিজে আগলে রাখে।খুব অল্প সময়ে সবাইকে আপন করে নিয়েছে।মনে হয় উনি আমাদের কতো আগ থেকে চেনাজানা।

 

আমি যখন ছুটিতে বাড়িতে আসি। অনুভূতি গুলো কেমন তা বুঝাতে পারবোনা তোকে।আগে বাড়িতে আসলে, মা কেয়ার করতো খাওয়া দাওয়া, নামাজের জন্য খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠানো,সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে সব মা-ই করতো।কিন্তু মায়ের ছোট ছেলে বলে কথা, খাওয়া দাওয়া সব উলটো চলতো। বাড়ির ছোট ছেলে মনে হয় সবসময় মায়েদের একটু বেশি বিরক্ত করে। আমিও তাদের মধ্যে একজন।

কিন্তু ভাইয়ার বিয়ের পর থেকে আমার ভাবি,আল্লাহর নেয়ামত হয়ে যেন সব কিছু নিজের কাঁধে নিয়েছে। ভোরে মা আমাকে ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত হয়ে যেতো, কিন্তু আমার হুঁশ থাকতোনা, কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পুর্ন ভিন্ন। ফজরের সময় ভাইয়ার নিয়মিত ফোন পেতে পেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। নামাজ শেষ করে ভাইয়াকে ভিডিও কল করা ছিল নিয়মিত রুটিন। ঢাকায় ও সেম কন্ডিশন। আর এসবের পিছনে ছিলো সম্পুর্ন ভাবির অবদান। ভাইয়াকে দিয়ে ভাবি আমাকে পোন দেয়াতো।

জোহরের নামাজ পড়তে মসজিদে থাকার সময়টুকুর মধ্যে, ভাবি খাবার টেবিলে সব রেডি করে রাখেন। আজ ২ বছর হয়ে গেছে,কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে এমন কোন দিন হয়নি যেদিন আমার একটা জিনিস শর্ট হয়েছে।সবে তো বললাম সকাল ও দুপুরের কথা। বিকেলে যখন বাহিরে ঘুরতে বেরোই, আমার মানিব্যাগে আলাদিনের চেরাগের মতো টাকা খুঁজে পাই।এ টাকা আর কেউ নয় আমার ভাবি দিয়েছ। ভাইয়া ভাবিকে হাত খরছের জন্য যে টাকা দেয় তার একটা অংশ আমার ভাবি তার বেকার দেবরের জন্য জমিয়ে রাখেন। একটা সাদা কাগজে টাকা গুলো মুড়িয়ে মানিব্যাগে রেখে দেয়। আর লিখে দেয় দেবরের ফিতনা মৃত্যুর সমান।

জানিস আমার মায়ের অনেক অসুস্থতা ছিলো ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কয়েকদিন পরপর মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়া ছিলো একটা রুটিনের মতো।কিন্তু যেদিন থেকে ভাবি এ বাড়িতে এসেছে, মায়ের অসুস্থতা যেন শরীর থেকে উদাও হয়ে গেছে। শেষ কবে ডাক্তারের কাছে মা গেছে ভুলে গেছি।খাবারের বিষয় ব্যালেন্স ডায়েট মেইনটেইন!! নিয়ম করে মর্নিং ওয়ার্ক আলহামদুলিল্লাহ মা এখন সুস্থ।মায়ের সব কিছু এখন ভাবি দেখে, আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ভাবি যখন বাবার বাড়িতে যায়, আমার মা ভাবিকে যতবার ফোন দেয় ততবার আমার বোনদের ও দেয়নি।

এতক্ষন ভাবির নামে তোকে এতো প্রশংসা করলাম কিন্তু একটা ধ্রুবসত্য কি জানিস??আমি আমার ভাবিকে কখনো দেখিইনি। দেখতে চাই ওনা। ভাবিকে দেখিনি কিন্তু অনুভব করেছি অভিভাবকতুল্য একজন বড় বোনকে।

শেষ কথা!!

একটা সংসার সুখী করতে টাকাপয়সা বা আলাদিনের চেরাগ প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন আমার ভাবীর মত একজন দ্বীনদার বড়ো ভাবি।

Leave a Reply