শাহনাজ(চন্দ নাম) ” রাজধানী কাবুলের ঐতিহ্যবাহী রাবেয়া বলখী বালিকা বিদ্যালয়ের
দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাবা রমিজ খান ছিলেন কাবুলে কমিউনিস্ট পার্টির একজন উঁচু দরের মানুষ ।
ছােটবেলায় মা মারা যাওয়ায় আরি হয়ে উঠেছিল স্বভাবতই একটু ধর্মভীরু ও নম্র প্রকৃতির মেয়ে। তাছাড়া মেধাবী ছাত্রী হিসেবে তার সুনাম সারা শহরময় ছড়িয়ে পড়েছিলাে।
আল্লাহ তাআলা তাঁকে রূপ-সৌন্দর্যও দান করেছিলেন অন্য দশ জনের চেয়ে বেশি। পরিবেশ ও শিক্ষা-দীক্ষার গুণে শাহ নাজ মনে দেশপ্রেম ও ধর্ম সচেতনতা ছােটবেলা থেকেই শিকড় গেড়ে বসে।
স্বাধীন মুসলিম আফগানিস্তানে সােভিয়েত বাহিনীর আগ্রাসন ও খােদাদ্রোহী কমিউনিস্টদের শাসনক্ষমতা দখলে নাহিদের কোমল হৃদয় আহত হয়। কিন্তু তিনি অত্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে তাঁর মনােভাব চেপে
যেতে থাকেন। একজন কমিউনিস্ট নেতার কন্যা হওয়ার সুবাদে বাড়ীতে বসেই তিনি অনেক আগাম সংবাদ ও গােপন পরিকল্পনা জানার সুযােগ পেতেন।
আফগানিস্তানের স্বাধীনতা ও ইজ্জতের লড়াইয়ে নিবেদিতপ্রাণ মুজাহিদদের সাথে শাহানাজ সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং অনেক গােপন তথ্য মুজাহিদদের আগাম জানিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আযাদীর লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেন।
পাশাপাশি তার স্কুলে সহপাঠিনীদের মাঝেও জিহাদের উত্তাপ ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট হন। শাহানাজের মতাে সচেতন ছাত্রীদের অব্যাহত প্রচেষ্টারই সুফল হিসেবে গােটা আফগান জিহাদে মুসলিম নারী সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ সম্ভব হয়।
কাবুলের রাবেয়া বলখী ও সুরিয়া গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা যেদিন আফগান মুজাহিদদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে। গগনবিদারী শ্লোগান তুলে কাবুলের রাজপথে নেমেছিলাে, সেদিনই দুশমনরা বুঝে গিয়েছিল যে, গােটা আফগানিস্তান এবার রাজপথে নামবে।
এ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরাই একদা রুশ দখলদার বাহিনী ও কারমাল সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের লক্ষ্যে নিজেদের কালাে ওড়না উড়িয়ে রাজপথে বের হয়ে এসেছিলাে।রুশ বাহিনী এদের বিক্ষোভ মিছিলে গুলি চালিয়েছিল নির্বিচারে গুলিতে বেশ কিছু ছাত্রী হতাহত হয়।
সে মিছিলের পুরােভাগে একটি আফগান কিশােরী পতাকা বহন করছিলাে। সেনাবাহিনীর গুলিতে তার দুটো হাতই অচল হয়ে যাওয়ায় সে তার সহপাঠিনীর হাতে পতাকাটি তুলে দিয়ে বলেছিলঃ “এটা শক্ত করে ধর বােন। এ তাে ইসলামের পতাকা, স্বদেশের আযাদীর পবিত্র ঝাণ্ডা এটা। একে কিছুতেই নিচে নামানাে যায় না।
”
আযাদী ও সম্মানের জন্যে প্রাণ দিতে প্রস্তুত এসব ছাত্রীরা ছিল শাহানাজের স্কুলেরই বান্ধবী।
শাহানাজদের বাড়ীতে প্রায়ই বেড়াতে আসতাে সােভিয়েত সেনা অফিসারেরা।তাঁর বাবার সাথে উঁচু পর্যায়ের লােকদের ওঠাবসা-সখ্যতা।
একদিন এক রুশ কর্মকর্তা শাহানাজদের বাড়ী এসে শাহানাজকে এক নজর দেখে ফেলে। সাথে সাথে সােভিয়েত সেনা কর্মকর্তার মনে একটা কুমতলবের উদয় হয়।
শাহানাজের বাবা ফরিদ খানকে সে লােকটি বলেঃ তােমার মেয়ের নাচ দেখতে হবে ফরিদ খান। সেনা অফিসারটি মনে মনে ভাবতে থাকে, এতাে খুবসুরত কন্যা ঘরে রেখে ফরিদ খান আমাদের সাথে বেঈমানী করছে।
তার তাে আরও আগেই এ মেয়েটিকে ক্লাবে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। মুক্তচিন্তা ও উদার মনের অধিকারী,
প্রগতিশীল কমিউনিস্ট নেতা ফরিদ খানের পক্ষে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা ছিল নিতান্ত সহজ। এছাড়া রুশ বাহিনীর সামনে ‘না’ শব্দটি উচ্চারণ করার মতাে দুঃসাহস তাে কাবুলের সরকার প্রধানেরও নেই।
কিন্তু ফরিদ খান খুব ভালাে করেই জানেন যে, তার মেয়ে শাহানাজকে কোনক্রমেই ক্লাবে নিয়ে নাচানাে যাবে না।
অতএব, খুবই নরম স্বরে ফরিদ খান বলে চললেনঃ শাহানাজ খুব লাজুক মেয়ে। ক্লাবে গিয়ে সে নাচতে রাজী হবে না।
রুশ কর্মকর্তা ধমকের সুরে বললেনঃ তুমি না কমিউনিস্ট! ফরিদ খান দৃঢ়কণ্ঠে জবাব দিলেনঃ জি, অবশ্যই আমি কমিউনিস্ট।
রুশ কর্মকর্তা অত্যন্ত রাগতস্বরে চিবিয়ে চিবিয়ে বললেনঃ না, তুমি কমিউনিস্ট হতে পারােনি। কোন কমিউনিস্টই এমন সেকেলে হতে পারে না।কোন কমিউনিস্টের স্ত্রী-কন্যাই বিদ্রোহী মৌলবাদীদের মতাে প্রতিক্রিয়াশীল হতে পারে না। আমাদের মেয়েরা তাে স্বাচ্ছন্দ্যে নেচে-গেয়ে ক্লাবগুলােকে মাতিয়ে রাখে।যদি আসলেই তােমরা দেশের সত্যিকার উন্নতি আর সমৃদ্ধি চাও, তবে পাক্কা কমিউনিস্ট হয়ে যাও। নিজেদের স্ত্রী, কন্যাদের তথাকথিত লজ্জা-শরমের শিকল মুক্ত করে স্বাধীনতার স্বাদ নিতে দাও। এ ব্যাপারেই তাে আমরা এতােদূর থেকে তােমাদের সহায়তায় ছুটে এসেছি।
রুশ কর্মকর্তার এসব কথা শুনে ফরিদ খান খুবই লজ্জিত হলেন। রুশ সেনা অফিসারটি ফরিদ খানকে প্রগতিশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শাহানাজকে ক্লাবে নিয়ে যাওয়ার কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে চলে গেলেন।
নিজেকে পাকা কমিউনিস্ট প্রমাণিত করার আকাক্ষার পাশাপাশি রুশ প্রভুদের অসন্তুষ্টির ভয়ও ফরিদ খানের মনে।
মেয়েকে বুঝাতে চেষ্টা করলেন তিনি। শাহানাজ যদি ক্লাবে গিয়ে রুশ সৈন্যদের সাথে একটু নাচতে সম্মত হয়, তাহলে তার বাবার পদমর্যাদা বাড়বে। বৃদ্ধি পাবে সােভিয়েত ইউনিয়নের সাথে তার সম্পর্কের সকল সুফল।
এসব শুনে শাহানাজের ভেতরে ভেতরে অগ্নিদগ্ধ হতে থাকে। সে অত্যন্ত শান্ত অথচ কঠোর উচ্চারণে বাবাকে বলে, আপনাকে আমি খুব ভালােবাসি আর শ্রদ্ধা করি বলেই একজন খােদাদ্রোহী নাস্তিক হওয়া সত্ত্বেও আপনার সাথেই আমি এখনাে বসবাস করছি। আমি ভাবতেও পারি না যে, কোন জন্মদাতা পিতা এতাে আত্মমর্যাদাহীন হতে পারে।
আপনি তাে শুধু ইসলামই ত্যাগ করেননি; বরং আমাদের দেশীয় এবং সামাজিক নিয়ম-নীতিগুলাে পর্যন্ত পরিত্যাগ করেছেন।
ফরিদ খান তার কিশােরী কন্যাকে স্নেহমাখা গলায় বুঝাতে শুরু করেনঃ “শােন | মা , তুমি বেশি সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছো
একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখাে। ইসলাম একটা মধ্যযুগীয় আদর্শ। অনেক পুরনাে কিছু নীতিকথা।
একশ্রেণীর ধর্মব্যবসায়ী সরলমনা জনসাধারণকে শােম্বণ করার উদ্দেশে এসব বিধি-নিষেধের জাল পেতেছে। দেড় হাজার বছর আগে একসময় ইসলাম হয়তাে আধুনিক একটা জীবনাদর্শ হিসেবে সফল হয়েছিলাে, কিন্তু তাই বলে বর্তমান উন্নতি ও প্রগতির যুগে সেটিই আঁকড়ে রাখতে হবে কেন?
কী করে সম্ভব হাজার বছর আগের একটা আদর্শ এ সময়েও অনুসরণ করে চলা। , তুমি কি কোনদিন চিন্তা করে দেখেছ? লজ্জা-শরম ও শালীনতার দোহাই দিয়ে আফগান নারীসমাজের উপর কী পরিমাণ নির্যাতন চলছে।
এসব মৌলবীরা যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ট, সেই আমেরিকার অবস্থাই চিন্তা কর। ওখানে তাে নারীরা স্বাধীন। ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। কল-কারখানায় পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। সভা-সমিতিতে মহিলারা অবাধে যাতায়াত করছে। কিন্তু এসব হুজুররা আবার ইসলামের নামে স্বদেশী নারীসমাজকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। যদি তুমি নিজকে সময়ের সাথে পরিচালিত না কর, তাহলে অনেক পেছনে পড়ে যাবে। আমি চাই তুমি সামাজিক হও। তুমি যতােটুকু সুন্দরী সে পরিমাণ সামাজিকতা যদি তােমার মাঝে সৃষ্টি হয়, তাহলে শুধু তােমার বাবার মর্যাদাই বাড়বে না, তােমার জীবনেরও একটা হিল্লে হয়ে যাবে। মনের মতাে সঙ্গী পাবে তুমি। বড় বড় সােভিয়েত কর্মকর্তারাও তােমাকে বিয়ে করার জন্যে ঘুর ঘুর করবে।”
তার বাবা যে এতাে বেশি প্রগতিশীল হয়ে গেছে, আত্মমর্যাদাবোেধ বা সামাজিক মূল্যবােধ বলতে আর কিছুই যে তার মধ্যে অবশিষ্ট নেই, এ বিষয়টি এতে স্পষ্টভাবে আর কখনাে ধরা পড়েনি শাহানাজের কাছে।
নিজের কোমল হৃদয়ে অত্যন্ত আঘাত পেয়েও সে খুবই স্বাভাবিক হয়ে বললােঃ “আপনি যে জীবনাদর্শকে মধ্যযুগীয় ও প্রাচীন বলছেন, সে জীবনাদর্শই নারী জাতিকে ঐ মর্যাদা দিয়েছে যা আমেরিকা আর রাশিয়াও দিতে পারেনি।
ইসলামে মা, বােন ও কন্যার যে সম্মান রয়েছে, দুনিয়ার অন্য কোন আদর্শে, ধর্মে বা মতবাদে কি সে মর্যাদা দেয়া হয়েছে তাদের? স্ত্রীকে যে অধিকার ইসলাম দিয়েছে তার কি কোন তুলনা হয়?
আপনার বক্তব্য শুনে তাে আপনাকে বাবা বলে ডাকতেও আমার লজ্জাবােধ হচ্ছে। আপনি নিজের দ্বীন ও ঈমান বিক্রি করেছেন। নিজের মাতৃভূমির স্বাধীনতা বেচে দিয়েছেন। এখন নিজের কন্যার মান-ইজ্জতও বিকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন।
আপনি কি চান যে, আপনার কন্যা নাস্তিক কাফেরদের সামনে নৃত্য করুক? তাদের হাতে হাত রেখে মাখামাখি করুক? এসব তাে আমি কোন মুসলমানের সামনেও করতে রাজী নই। আপনি এখন আর আমার পিতা হওয়ার যােগ্য নন। আপনি এখন একজন ঈমান বিক্রেতা দেশের স্বাধীনতা ও আপন কন্যা সন্তানের সম্ভ্রমের সওদাগর।”জওয়াব শুনে ফরিদ খান খুবই চিন্তিত হলাে। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে, বললাে।
তােমার ধর্ম তােমাকে কি এ শিক্ষা দিয়েছে যে, নিজের পিতার সাথে এমন বেআদবীসূচক কথাবার্তা বলবে। যে পিতা শুধু তােমার উন্নতি ও সুখের কথাই ভেবে থাকে।
হাঁ, আমার ধর্ম আমাকে এ শিক্ষাই দেয় যে, নিজের জন্মদাতা পিতাও যদি ইসলাম-বিদ্বেষী ও খােদাবিমুখ মুরতাদ হয়ে যায়, তবে তার পিতৃত্বের বন্ধনও ছিন্ন হয়ে পড়ে।
নাচতে যাওয়ার জন্যে ফরিদ খান শাহানাজকে অনেকভাবেই রাজী করতে চেষ্টা করলাে। প্রথম আদর করে, বুঝিয়ে, অবশেষে ধমকের স্বরেও তাকে রাজী করতে চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত জোর করেই একদিন ফরিদ খান শাহানাজকে ক্লাবে নিয়ে গিয়ে রুশ সেনা অফিসারদের সাথে রেখে বাইরে চলে যায়।
রুশরা তাকে নাচতে অনুরােধ করে ব্যর্থ হয়। শাহানাজ কিছুতেই নাচবে না ।সে সামরিক ব্যক্তিদের সুস্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, আমি মুসলমান। আল্লাহর রাস্তায় আমার এ নগণ্য প্রাণটা দিয়ে দিতে পারি, কিন্তু তােমাদের সাথে আমি নাচে শরীক হবে না। এক রুশ সেনা অফিসার বললাে: ইসলাম তাে আফগানিস্তান থেকে অনেক আগেই বিদায় দিয়েছে। আর এ ক্লাবের জলসা ঘরে তােমার আল্লাহ আসবেন । নরম কথায় যদি তুমি রাজী না হও, তবে অন্য রাস্তাও আমাদের জানা আছে।
শাহানাজঃ তুমিও হয়তাে ভুলে যাচ্ছে যে, আমি এক পাহাড়ী মেয়ে। সব ধরনের | নিপীড়ন সওয়ার মতাে মনােবল ও ধৈর্য আমার রয়েছে।
আফিসারঃ তােমারও মনে হয় জানা নেই যে, রুশীয়দের হাতে এমন শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে, যা বিশালকায় পর্বতকেও চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিতে সক্ষম।
শাহানাজঃ আমার আল্লাহ তােমাদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী। | তাঁর এক দুর্বল বান্দিকে কষ্ট দিতে যদি তােমাদের এততাই ইচ্ছে হয়ে থাকে,
তবে ইনশাআল্লাহ, আমাকে একটা মজবুত পাহাড়ের চেয়েও শক্ত ও কঠোর দেখতে পাবে।
রুশ সেনা অফিসার নিরাশ হয়ে নির্যাতনের পথই বেছে নিলাে। নাহিদের গায়ের কাপড়-চোপড় ছিড়ে তার শরীরে জ্বলন্ত সিগারেটের সাকা দিতে লাগলাে সৈন্যরা।
খোঁচায় তাঁর শরীরে নিজের অপবিত্র নাম লিখতে লাগলাে সে পাষণ্ড অফিসার।সবকিছু চরম ধৈর্যের সাথে মুখ বুজে সয়ে গেলাে শাহানাজ। সে এমন এক পর্বত বনে গেলাে, যার সাথে টক্কর দিলে যে কেউ গুঁড়াে গুঁড়াে হয়ে যায়।
সারা রাতভর পাশবিক নির্যাতনে শেষ রাতের দিকে শাহানাজ শহীদ হয়ে গেলাে। কিন্তু রুশ সৈন্যরা তাকে নাচাতে পারেনি।
মৃত্যুর সময় শাহানাজের শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে দুটো শ্লোগান তুলেছিলাে।’আল্লাহু আকবর’ ও ‘আফগানিস্তান জিন্দাবাদ।’ এই ছিল তার শেষ কথা। | শহীদ হওয়ার পর রুশীয়রা শাহানাজের অনাবৃত দেহ একটি মসজিদের চত্বরে। ফেলে রাখে। ফজরের সময় আগত মুসল্লীরা লাশটি দেখতে পেলে গােটা এলাকা জুড়ে শােক ও দুঃখের ছায়া নেমে আসে।
পরদিন স্কুলের ছাত্রীরা যখন শাহানাজের শাহাদতের সংবাদ পেলাে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের নেত্রী, তাদের বান্ধবীর লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্যে সেই মসজিদের চত্বরে সমবেত হয়।
শাহানাজের লাশ ছুঁয়ে তারা জিহাদের শপথ নেয় এবং তার রক্ত দিয়ে মসজিদের প্রাচীরে এজন ছাত্রী লিখে দেয় ‘আযাদী।’
এরপর যখন রাবেয়া বলখী স্কুলের ছাত্রীরা শাহানাজের লাশ নিয়ে মিছিল করতে | থাকে; শুরু হয় গােলাবর্ষণ। একে একে ২৩ জন মুসলিম ছাত্রী শাহাদতবরণ করে। আহত হয় অনেকে। এ ঘটনার পর অনেক দিন পার হয়ে গেছে কিন্তু আফগান মুসলিম জনসাধারণ তথা আযাদীর সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ মুজাহিদদের হৃদয়ে শাহানাজ ও তার বান্ধবীদের স্মৃতি আজো অম্লান হয়ে আছে।
মসজিদের প্রাচীরে এখনাে রয়ে গেছে শাহানাজের রক্তে লেখা আযাদীর পয়গাম। |
allah amader amn iman dan korun