You are currently viewing গাজওয়ায়ে হিন্দ!!অতএব : ঢংকা বেজে গিয়েছে।

গাজওয়ায়ে হিন্দ!!অতএব : ঢংকা বেজে গিয়েছে।

গাজওয়ায়ে হিন্দ!!

অতএব : ঢংকা বেজে গিয়েছে।

ভারত! তোমার পতন ঘনিয়ে আসছে!!
.

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের পর আলেম-উলামাদের উপর নির্যাতনের ষ্টিমরোলার নেমে আসে। অর্ধ লাখ আলেমকে সে সময় ফাঁসি দেওয়া হয়। হাজার হাজার আলেমকে আন্দামান, মালটা, সাইপ্রাস, কালাপানিতে দ্বীপান্তর করা হয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাড়িয়েছিল যে, নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আলেম পাওয়া দূরের কথা, কাফন-দাফন দেওয়ার জন্য আলেম পাওয়া যেত না। নেতৃত্বের জন্য যোগ্য লোক তৈরি এবং সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় দারুল উলুম দেওবন্দ। সে সময়টা সত্যি আলেমদের জন্য ছিল ভীষণ কঠিন। ব্রিটিশদের অত্যাচারের পাহাড় মাড়িয়ে যে হাতেগোনা কয়েকজন আলেম জীবিত ছিলেন, তারাও মুখ খুলতে সাহস করতেন না। দারুল উলূম দেওবন্দের প্রথম ছাত্র শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দি রাহ. সে আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করলে মৃতপ্রায় উলামায়ে হক্বের রাজনৈতিক অঙ্গন আবার সরব হয়ে ওঠে। এরপর ইংরেজদের কালো হাত থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য শায়খুল হিন্দ রাহ.-এর রেশমি রুমাল আন্দোলন, আমির হাবিবুল্লাহ খানের ইংরেজ থেকে বিরাট অংকের আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে রেশমি রুমালের তথ্য ইংরেজ সরকারকে সরবরাহ করা, এরপর মাওলানা আবদুর রহিমের বাড়ি থেকে সে রুমাল ইংরেজদের হাতে চলে যাওয়া, রেশমি রুমাল আন্দোলন ব্যর্থ হওয়া, আরব থেকে শায়খুল হিন্দ রাহ.-কে বন্দি করা, এরপর মাল্টার কারাগারে দ্বীপান্তর করা সবই ইতিহাসে সোনালি অক্ষরে লেখা আছে।

এরপরের ইতিহাস আরও দীর্ঘ। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান এবং ভারত নামে হিন্দুস্তান দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জন্ম হয় আলাদা দুটি রাষ্ট্রের।

১৯৪৭-এর পর থেকে হিন্দুস্তানে মুসলমানরা ভয়াবহ নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছে। দেশ বিভক্তির সময় হাজার হাজার নিরীহ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। দিল্লির রাজপথে উন্মাদনা সৃষ্টি করে মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করে অতীতে মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে। এখনো হচ্ছে। গুজরাটে মুসলমানদের কচুকাটা করা হয়েছে। বাদ পড়েনি আসামও। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে। কাশ্মিরে তো যুগের পর যুগ ঠান্ডা মাথায় মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতি আরও করুণ। দাদারা বলেন, তারা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু মুসলমনরা সে গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করে না। মুসলমান হওয়ার অপরাধে ট্রেনে নিশৃংসভাবে এখন দাদারা হত্যা করেন মুসলমানদের। একজন মুসলমানদের ঘরের ফ্রিজে ছাগলের গোশত ছিল। কিন্তু দাদারা প্রচার করেন যে, সে তাদের প্রভু গরুকে হত্যা করে গোশত ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রেখেছে! এ অপরাধে নিরীহ সেই মুসলমানকে পাথরের আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে হত্যা করা হয়। শুধু গরুর গোশত খাওয়া বা রাখার অপরাধে হিন্দুস্তানে নাম না জানা কত মুসলমানকে জীবন দিতে হয়েছে হচ্ছে। আজকের স্যোসাল মিডিয়া চালু করলেই এসব বর্বরতা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।

আগে বলে এসেছি যে, মুসলমানরা ৮০০ বছর ভারতবর্ষ শাসন করেছে। ৮০০ বছরের ইতিহাসে কখনো মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে হিন্দুদের হত্যা করেনি। মুসলমানরা যদি দাদাদের দিকে একটু বাঁকা চোখে তাকাতো, তাহলে হিন্দুস্তানে দাদারা থাকতে পারতেন না। মুসলমানদের শাসনামলে দাদারা ভালোই ছিলেন। শুধু হিন্দুস্তানে কেন? মুসলমানরা যেখানেই শাসন করেছে, সেখানেই বিধর্মীদের নিজেদের আমানত মনে করেছে। তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করেছে। দাদারা ক্ষমতা পাওয়ার ১০০ বছর এখনো হয়নি। কিন্তু বাবরি মসজিদ-সহ আরও অনেক মসজিদকে ধ্বংস করেছেন। কিন্তু মুসলমানরা কখনো হিন্দুদের মন্দির ধ্বংস করেনি। সব মিলিয়ে আজকে হিন্দুস্তানে মুসলমানরা ভালো নেই। মুছে ফেলতে চেষ্টা করা হচ্ছে হিন্দুস্তানে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে। নানুতবি, শায়খুল হিন্দ আর শায়খুল ইসলামের দারুল উলুম দেওবন্দ আজও হিন্দুস্তানে মুসলমানদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। শত অত্যাচারের পাহাড় মাড়িয়েও দেওবন্দ উপমহাদেশের মুসলমানদের মাঝে দ্বীনের সঠিক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।

হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায় যে, মুসলিম বাহিনী যখন হিন্দুস্তানে আক্রমণ করতে আসবে, তখন মুসলমানরা সেখানে নির্যাতিত হবে। বিধর্মীরা শক্তিশালী হবে। মুসলমানদের সাথে তাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হবে। সে যুদ্ধে আল্লাহ মুসলমানদের বিজয় দান করবেন। এরপর মুসলিম বাহিনী হিন্দুস্তানের বাদশাহকে বন্দি করবে। তাকে গলায় শিকল লাগিয়ে নিয়ে যাবে। যখন তারা সিরিয়ায় পৌঁছবে, তখন ঈসা আ.-এর সাথে তাদের সাক্ষাৎ হবে।

বর্তমানের হিন্দুস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটু চিন্তা করলে দেখা যায় যে, মুসলমানদের পুনরায় উত্থান হতে হলে বড় কোনো যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় দরকার। যে যুদ্ধে হিন্দুস্তানের বাদশাহ পরাজিত হবে। বর্তমানে হিন্দুস্তানের দাদাদের জয়জয়াকার। মুসলমানদেরকে সর্বদিক থেকে অত্যাচার করা হচ্ছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভবিষ্যদ্বাণী করা গাজওয়ায়ে হিন্দ কি তাহলে অত্যাসন্য?

Leave a Reply