You are currently viewing ইমাম মাহদীর আগমনের সম্ভাব্য সময়কাল।মুসলিম উম্মার মোট হায়াত  ও একটি  পর্যালোচনা

ইমাম মাহদীর আগমনের সম্ভাব্য সময়কাল।মুসলিম উম্মার মোট হায়াত ও একটি পর্যালোচনা

সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রহ.) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, আগেকার উম্মাতের স্থায়িত্বের তুলনায় তোমাদের স্থায়িত্ব হলো ‘আসর হতে নিয়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের ন্যায়। তাওরাত অনুসারীদেরকে তাওরাত দেয়া হয়েছিল। তারা তদনুযায়ী কাজ করতে লাগলো; যখন দুপুর হলো, তখন তারা অপারগ হয়ে পড়লো। তাদের এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়। আর ইনজীল অনুসারীদেরকে ইন্জীল দেয়া হলো। তারা ‘আসরের সালাত পর্যন্ত কাজ করে অপরাগ হয়ে পড়লো। তাদেরকে এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক দেয়া হলো। অতঃপর আমাদেরকে কুরআন দেয়া হলো। আমরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করলাম। আমাদের দু’ দু’ ‘কীরাত’ করে দেয়া হলো। এতে উভয় কিতাবী সম্প্রদায় বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের দু’ দু’ ‘কীরাত’ করে দান করেছেন, আর আমাদের দিয়েছেন এক এক কীরাত করে; অথচ আমলের দিক দিয়ে আমরাই বেশি। আল্লাহ্ তা‘আলা বললেনঃ তোমাদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি কি তোমাদের প্রতি কোনোরূপ যুলুম করেছি? তারা বললো, না। তখন আল্লাহ তা‘আলা বললেনঃ এ হলো, আমার অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেই। (বুখারি হাদিস নং ৫৫৭)

অপর বর্নণায়, ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন,كُنَّا ‘আমরা একদিন রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট বসে ছিলাম। তখন আছরের পর সূর্য কু‘আইকে‘আন পাহাড়ের উপরে অবস্থান করছিল। রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমাদের পূর্বের যেসব উম্মত অতীত হয়ে গেছে তাদের অনুপাতে তোমাদের বয়স হ’ল এখন থেকে দিনের বাকী অংশ পরিমাণ।(আহমাদ হাদিস নং ৫৯৬৬, ছহীহ লি-গায়রিহী ওয়া মু‘জামুল কাবীর হাদিস নং১৩৫১৯)

অন্য বর্ণনায় এসেছে রাসূল (ছাঃ) বলেন তোমাদের পূর্বের যেসব উম্মত অতীত হয়ে গেছে তাদের অনুপাতে তোমাদের বয়স হ’ল আছরের ছালাত এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়টুকুর সমান’।(বুখারী হাদিস নং ৩৪৫৯)

উপরক্ত হাদিসের ব্যাক্ষায় আমরা বলতে পারি, পৃথিবীতে মানুষের সময়কাল পূর্ণ একদিনের সমান।
আর ইবনু আববাসের (রা) মতে, একদিন হল ৭০০০ বছর (ফাৎহুল বারী ৪/৩৩৯)।

এখন আমরা দেখবো, আরো কিছু হাদিস এবং হাদিসের ব্যাক্ষায় হাদিস বিশারদগণ কে কি বলেছেন:

হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন,

(হাদীছটি থেকে) বাহ্যিকভাবে মনে হয় যে, মুসলিম জাতির মেয়াদকাল বিগত জাতিসমূের মেয়াদকালের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। এর উদ্দেশ্য কোনভাবেই এটা নয়। বরং এর অর্থ বিগত জাতিসমূহের মেয়াদ অনুপাতে এই জাতির মেয়াদকাল হ’ল আছর ছালাত থেকে দিনের বাকি অংশ তথা সূর্যাস্ত পর্যন্ত’।(ফাৎহুল বারী ২/৩৯, হা/৫৫৭-এর আলোচনা।)

ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) অন্যত্র বলেন,

এর দ্বারা দলীল গ্রহণ করা হয় যে, এই উম্মতের অবশিষ্ট সময়কাল এক হাযার বছরের উপরে। কেননা হাদীছের ভাষ্য থেকে প্রতীয়মান হয়, ইহূদীদের অবস্থানকাল খৃষ্টান ও মুসলমানদের সময়কালের সমান। আর বিদ্বানগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, রাসূল (ছাঃ)-এর নবুঅতপ্রাপ্তি পর্যন্ত ইহূদীদের অবস্থানকাল হ’ল দুই হাযার বছরের উপরে। এর মধ্যে খৃষ্টানদের বয়স ছয়শ’ বছর। কেউ কেউ বলেছেন, তার থেকে কম। তাহ’লে অকাট্যভাবে মুসলমানদের সময়কাল

হবে এক হাযার বছরের উপরে।(ফাৎহুল বারী ৪/৪৪৯, উমদাতুল ক্বারী ১২/৯০)

জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (রহঃ) বলেন,

হাদীছ সমূহ যা প্রমাণ করে তা হ’ল এই যে, এই উম্মতের বয়স এক হাযারের উপরে তবে পনেরশ’ বছরের বেশী কখনো নয়।(রিসালাতুল কাশফ ফী মুজাওয়াযাতে হাযিহিল উম্মাহ, পৃ. ২০৬, আল-হাবী লিল ফৎওয়া ২/১০৪)

কাযী ইয়ায বলেন
এই হাদীছে শব্দসমূহের ভিন্নতা ছাড়াও ক্বিয়ামত ও মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মাঝে সময়ের স্বল্পতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে’।(ফাৎহুলবারী ১১/৩৪৯, তোহফা ৬/৩৮১)

হাদীছের বর্ণনা মোতাবেক যেহেতু অর্ধেক দিন ইহূদীদের, সুতরাং তা দুই হাযার বছরের বেশী বা ২১শ’ বছর। অপরদিকে মুসলিম ও খৃষ্টানদের সম্মিলিত বয়স অর্ধদিবস তথা ২ হাযার বছরের বেশী বা ২১শ’ বছর। আর খৃষ্টানদের বয়স ৬০০ বছর। যেমনটি সালমান ফারেসী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত বর্নণা হয়েছে
ঈসা এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আগমনের মধ্যে ছয়শ’ বছরের ব্যবধান ছিল’।(বুখারী হাদিস নং ৩৯৪৮, হাকেম হা/৪১৭২)
তাহলে আমরা গানিতিক করলে দেখা যাবে, মুসলিম উম্মাহর বয়স ২১০০-৬০০= ১৫০০ বছর।

সা‘দ বিন আবূ ওয়াক্কাছ (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে। তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِ ‘আমি আশা করি, আমার উম্মত তার প্রতিপালকের নিকট অক্ষম হবে না যে, তিনি তাদেরকে অর্ধ দিবসে (ক্বিয়ামতের) অবকাশ দান করবেন’। তখন সা‘দ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয় ‘অর্ধ দিবস’ কত সময়? তিনি বলেন, এর অর্থ পাঁচশত বছর।(আহমাদ হাদিস নং ১৪৬৫, আবুদাউদ ৪৩৫০,মাজমা‘উয যাওয়ায়ে ৯৬৭, মিশকাত ৫৫১৪,ছহীহাহ ১৬৬৩, ছহীহুল জামে‘ ২৪৮১)
উপরক্ত হাদিসে আল্লাহ প্রদত্ত পাঁচশত বছর বোনাস হিসাবে মুসলিম উম্মাহর মোট বয়স ১৫০০ বছর।

ইবনু জারীর ত্বাবারী পৃথিবীর বয়সের শিরোনাম উল্লেখ করে বলেন, ‘পূর্ববর্তী বিদ্বানগণ এই বিষয়ে বিভিন্ন মত পোষণ করেছেন, তাদের কেউ বলেন, পৃথিবীর সমগ্র সময়কাল হ’ল সাত হাযার বছর। অন্য আরেক দল মনে করেন, ছয় হাযার বছর।(তারীখু ত্বাবারী ১/১০)

ইবনু আববাস(রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,দুনিয়া হ’ল আখেরাতের জুম‘আ সমূহের মধ্যে একটি জুম‘আর সমতুল্য। আর তা হ’ল সাত হাযার বছর। এর মধ্যে অতিবাহিত হয়ে গেছে ছয় হাযার একশ’ বছর।(তারীখু ত্বাবারী ১/১০, ১৬ ; ইবনু আবী হাতেম১৩৯৮৭, ১৮৪৩৪,শাওকানী, ফাৎহুল কাদীর ৩/৫৪৫, রওযাতুল মুহাদ্দিছীন ২৬৪৪, ফাৎহুলবারী ১১/৩৫০-৩৫১)

যাহহাক বিন যিম্ল আল-জুহানী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

রাসূল (ছাঃ) ফজর ছালাতের পর ছাহাবীদেরকে তাদের রাতে দেখা স্বপ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন। আমি স্বপ্নে দেখলাম… হে আল্লাহর রাসূল! আপনি একটি মিম্বারের উপর আছেন যার সাতটি স্তর ছিল। আর আপনি সর্বোচ্চ স্তরে আরোহন করেছেন।… এর ব্যাখ্যায় রাসূল (ছাঃ) বললেন, এর অর্থ হ’ল দুনিয়ার বয়স সাত হাযার বছর আর আমি সপ্তম সহস্রাব্দে পদার্পণ করছি’।(ত্বাবারাণী কাবীর হাদিস নং ৮১৪৬,মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ ১১৭৭২, বায়হাকী, দালায়েলুল নবুঅত ২৯৬০,সুহায়লী, আর-রওযুল উনুফ ৪/২৩০)

মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আসমান ও যমীন ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি দুনিয়ার বয়স ছয় দিন নির্ধারণ করেছেন এবং ক্বিয়ামত সপ্তম দিনে ধার্য করেছেন। ‘তোমার প্রতিপালকের কাছে একটি দিন তোমাদের গণনার এক হাযার বছরের সমান’ (হজ্জ ২২/৪৭)। এর মধ্যে ছয় দিন অতিবাহি(
তাফসীরে ইবনু আবী হাতেম হাদিস নং ১৩৯৮৮,তাফসীরে ইবনু কাছীর ৫/৪৪০, তারীখুল খামীস ১/৩৪)

ওছমান বিন যায়দাহ হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, কুরয ইবাদতে মশগূল থাকতেন। তাকে বলা হ’ল, আপনি কি কিছু সময় নিজেকে বিশ্রাম দিবেন না? তিনি বললেন, পৃথিবীর বয়স সম্পর্কে তোমাদের নিকট কি সংবাদ পৌছেছে? তারা বলল, সাত হাযার বছর। তিনি বললেন, ক্বিয়ামতের দিনের পরিমাণ সম্পর্কে কি সংবাদ পেয়েছ? তারা বলল, পঞ্চাশ হাযার বছর। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ কি দিনের এক সপ্তাংশ সময় আমল করতে সক্ষম হবে, যাতে সে ঐ দিনে নিরাপত্তা লাভ করবে?(আল-মুজালাসা হাদিস নং ৯১৭,সাখাভী, আল-মাক্বাছিদুল হাসানাহ ১২৪৩,সুয়ূতী, আল-হাভী লিল ফাতাওয়া ২/১০৭,ইহ্ইয়াউ ঊলূমিদ্দীন ৭/৬৯)

আনাস বিন মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার জন্য মুসলমানের কোন প্রয়োজন পূরণ করবে, আল্লাহ তার আমলনামায় পৃথিবীর বয়স সাত হাযার বছরের সমপরিমাণ দিনে ছিয়াম ও রাতে ক্বিয়াম করার ছওয়াব লিখে দিবেন।(ইবনু আসাকির ২৩/১৩৩, আল-হাভী ২/১০৫)

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,

‘শাফা‘আত কেবলমাত্র আমার উম্মতের যারা কবীরা গুনাহের উপর মারা গেছে তাদের জন্য হবে। তারা জাহান্নামের প্রথম দরজায় থাকবে। তাদের মুখমন্ডল কালো হবে না, তাদের চোখ সবুজ হবে না, তাদেরকে বেড়ী পরানো হবে না, তাদেরকে শয়তানদের সাথে মিলিত করা হবে না, তাদেরকে মুগুর দ্বারা পিটানো হবে না এবং জাহান্নামের তলদেশে নিক্ষেপ করা হবে না। সেখানে তাদের কেউ এক ঘণ্টা অবস্থান করবে, কেউ একদিন অবস্থান করে মুক্তি পাবে, কেউ একমাস অবস্থান করে মুক্তি পাবে এবং কেউ এক বছর অবস্থান করার পর মুক্তি পাবে। আর সর্বোচ্চ অবস্থান হবে পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে ধ্বংসল হওয়ার সময় পরিমাণ। আর তা হ’ল সাত হাযার বছর।(নাওয়াদিরুল উছূল ২/৩৬,ইবনু আবী হাতেম,১২৩২৮; তাফসীরে ইবনু কাছীর ৪/৫২৬, সূরা হিজরের ২-৩ আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য,ইহয়াউ উলূমিদ্দীন ১/১৬৭৬)

ইবনু আববাস(রা) থেকে বর্ণিত একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, ‘দুনিয়া সাতদিন। প্রতিদিন এক হাজার বছরের সমান। আর রাসূল (ছাঃ)-কে প্রেরণ করা হয়েছে এর শেষদিনে’।(সুয়ূতী, আল-লাআ’লিল মাছনূ‘আ ২/৩৬৯, সুহায়লী, আর-রওযুল উনুফ ৪/২৩৮,উমদাতুল ক্বারী ৫/৫২-৫৩)

উপোরক্ত হাদিস এবং ইমামগণের মতামত বিশ্লেষণ করলে প্রতিয়মান হয়,

** পৃথিবীতে মানুষের মোট মেয়াদকাল ৭০০০ বছর।

** ৬০০০ বছর পুর্বের উম্মাতদের জন্য।

** মুহাম্মাদ (সা) তথা আমাদের হায়াত ১০০০ বছর।

** আল্লাহতালা আমাদের ৫০০ বছর বোনাস দিয়েছেন।

** তাহলে মুসলিম উম্মার মোট হায়াত ১৫০০ বছর।

** এখন ১৪৪০ হিজরী + ১০ =১৪৫০ বছর

**অতিবাহিত হয়েছে ১৪৫০ বছর।

** হায়াত বাকি আছে ৫০ বছর।

** আমরা জানি হাদিসের আলোকে, ইমাম মাহদী ৭-৯-১১ বছর পৃথিবী শাসন করবেন + দাজ্জাল ৪০ দিন যা হবে ১ বছর ২ মাস প্রায় এবং ঈসা (আ) পৃথিবীতে অবস্থান করবেন ৪০ বছর =৪৮ বা ৪৯ বা ৫০ বছর।

** অন্যভাবে ২০২ সালে ইমাম মাহদি
২০২৮ সালে দাজ্জাল এবং ২০৩১ সালে ঈসা (আ) তিনি ৪০ বছর পৃথিবীতে অবস্থান করবে।

অথএব , ২০২১ থেকে ২০৩১ = ১০ বছর + ঈসা (আ) ৪০ বছর =৫০ বছর এবং আমরা জানি অতিবাহিত হয়েছে ১৪৫০ বছর, তাহলে মোট ১৫০০ বছর।

বিঃ দ্র :উপোরক্ত হিসাব হল মুসলিম উম্মার মেয়াদকাল, কেয়ামতের গণনা নয়, হাদিসে উল্লেখ আছে ঈসা (আ) মৃত্যুর পরে পশ্চিম দিকথেকে একটি বায়ুতাড়িত হয়ে সকল মুসলিম মারা যাবে এবং মুসলিম উম্মার হায়াত শেষ হবে তারপর কাফেরদের উপর কেয়ামত হবে। তার জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে।

বই-মাহাদী ও দাজ্জাল।

আরো কিছু কথা তা হলো
মুমিনের স্বপ্ন।
আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে যাবে তখন মুমিনের স্বপ্ন খুব কমই অবাস্তবায়িত থাকবে। আর মুমিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।(বুখারী ৬৫৪৪)

উপরক্ত হাদিসের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (সা) আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে,আল্লাহর পক্ষথেকে সুসংবাদ আসবে যা হতে পারে গায়েবী সংবাদ, কারামাত বা অন্য কিছু।
অনুরূপ ইমাম মাহদী’র আগমন নিয়ে অনেক মুসলিম ভাই বোন স্বপ্ন দেখেছেন তার আগমনের সময় নিয়ে এদের মধ্যে আছেন পৃথিবী বিভিন্ন প্রান্তের আলেম, জ্ঞানী গুনি ও আল্লাহ ওয়ালা।
তাদের দেখা কিছু বিস্ময়কর স্বপ্ন আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

শায়েখ জিয়াদের স্বপ্নঃ

শায়েখ জিয়াদ একদিন আমাকে ডেকে বললেন, আবু জান্দান আজকে আমি একটা ভয়াবহ স্বপ্ন দেখেছি! আমি অনান্যা বারের মত বল্লাম আমাকে বলুন! এখানে একটু বলে রাখি আমি শায়েখের অনেক কারামত এবং সত্য স্বপ্নের চাক্ষুষ সাক্ষী। যাইহোক শায়েখ বলা শুরু করলেন,
ঘটনাটি সেই ২০১২ সালের শায়েখ এবং তার বন্ধু ভীতিকর ও বিষণ আতংকিত হয়ে এক স্থান থকে অন্য স্থানে পালিয়ে যাচ্ছে এভাবে তারা দুইজন অনেকক্ষানি পথ অতিক্রম করলো,
হঠাৎ শায়েখ এবং তার বন্ধু একটা পুকুর দেখতে পেলেন বরাবরের মত এক আগুন্তুক শায়েখকে জিজ্ঞাসা করলেন কোথায় পালাচ্ছ আর কি হয়েছে, শায়েখ বল্লেন আমরা শুনেছি দাজ্জাল বের হয়েছে এবং তার ফেতনা থেকে বাচার জন্য আমরা পালিয়ে যাচ্ছি,
তখন সেই আগুন্তুক বললেন শুন দাজ্জালের আবিভূত হবে ২০২৮ সনে, এরপরই শায়েখের ঘুম ভেজ্ঞে গেল এবং তিনি এমন অনুভুতি অনুভব করলেন যেন তিনি বাস্তবি অনেক পথ অতিক্রম করেছেন।
বিঃদ্রঃ বর্ণনার ক্ষেত্রে শব্দের কিছুটা তারতর্ম হতে পারে।

ব্যাক্ষাঃ শায়েখ এই স্বপ্ন দেখেছেন ২০১২ থেকে ২০১৩ সনের মধ্যে আথচ তখনকার সময়ে দাজ্জাল বা ইমাম মাহদীকে নিয়ে পৃথিবীতে কোন আলোচনা ছিল না বর্তমানে যতো আলোচনা বা ইমাম মাহদী ২০২১-২০২৮ মধ্যে আসবেন যা ইসলামিক স্কলাররা বলছেন সবই ২০১৪ সনের পরথেকে এবং কাজি ইব্রাহিম বা অন্যান্যরা অনুরূপ স্বপ্ন দেখেছেন শায়েখের স্বপ্ন দেখার অনেক পর আথচ শায়েখের সাথে তাদের কোন পরিচিতি নাই যা একটি অলীক ঘটনা,
এখন আসি শায়েখের স্বপ্নের ব্যাক্ষায়,সেই আগুন্তুক শায়েখকে জানালেন যে দাজ্জাল আসবে ২০২৮ সনে আর আমরা হাদিসের আলোকে জানি ইমাম মাহদীর পৃথিবীতে সাত বছর রাজত্ব করবেন এবং তিনি দাজ্জালের আবিভূত হওয়ার আগে আসবেন সেই অনুযায়ী ২০২৮-৭ = ২০২১ সন হল ইমাম মাহদীর আগমনের সময়। আল্লাহু আলাম

হাফেজী হুজুরের স্বপ্নঃ ১

১৯৭৯ অথবা ১৯৮১ সালের কোন এক সকালে মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (রহ) তার মাদরাসার ছাত্রদের কে ডেকে বললেন আজ আমি স্বপ্নে দেখলাম ইমাম মাহদির জন্ম হয়ে গেলো ।(References Mufti kaji Ibrahim)

হাফেজী হুজুরের স্বপ্নঃ ২

ইউসুফ বলেছে, তার এক বন্ধু যে মদীনা ইউনিভার্সিটিতে তার সাথে আরবী সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করত । সে হাফেজ্জী হুজুরের (রহ) খুব ঘনিষ্ট লোক ছিল । সে একবার স্বপ্নে দেখলো যে, হাফেজ্জী হুজুর স্বপ্নে এসে তাকে বলছেন যে ২০১৯ সালে ইমাম মাহদীর (আঃ) বয়স চল্লিশ হবে (অর্থাৎ তাঁর আত্মপ্রকাশের সময় হবে)(References Mufti kaji Ibrahim)

এক বোনের স্বপ্নঃ

আল্লামা খালিদ আল মাগরিবী, বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদের ইমাম, তার একটা বক্তব্যে বল্লেন, ফিলিস্তীনী একজন ঈমানদার সত্যবাদী বোন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখেছেন । তিনি দেখলেন মহানবী (সাঃ) বসে আছেন এবং সকল নবী-রাসুলগণ তাঁর চারপাশে বসে আছেন, যেভাবে কাবা শরীফের চারপাশে মানুষ বসে থাকে । তিনি শোনতে পেলেন সেই সভাতে নবী করীম (সাঃ) ইমাম মাহদীকে নির্দেশ দিচ্ছেন দুইটি কথা মুসলমানদের মধ্যে প্রচার করার জন্য । তার একটি হলো সারা দুনিয়ার মুসলমানরা যেনো সকল প্রকার দলাদলি বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায় এবং দ্বিতীয়টি হলো মুসলমানরা যেনো এক বছরের খাবার কিনে ঘরে মওজুত করে রাখে । এটা সম্ভবত পবিত্র কোরআনের সুরা দোখানের কথা যেখানে বলা হয়েছে একদিন সারা পৃথিবীর আকাশ ধোয়াঁয় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে এবং কিতাব আল ফিতানের হাদীসে রাসুলে করীম (সাঃ) ভবিষ্যতবাণী করে গেছেন যে, চল্লিশ দিন পৃথিবী অন্ধকার হয়ে থাকবে এবং এক বছর কোনো খাদ্যশস্য উৎপন্ন হবে না । সেই বোন স্বপ্নে ইমাম মাহদীকে তার আত্মপ্রকাশের দিন তারিখ জিজ্ঞাসা করলে তিনি “খুব শীঘ্রই” আবির্ভুত হবেন বলে জানান এবং একটি ঘটনার উদাহরণ দেন যেই ঘটনার সাথে সাথে তিনি আবির্ভূত হবেন । সেই বোন উদাহরণটি ভুলে গেলেও “খুব শীঘ্রই” শব্দটি মনে রাখতে সক্ষম হন।(References Mufti kaji Ibrahim)

চলবে…….

Leave a Reply