You are currently viewing খুব কম সময়ের মধ্যে হয়তো বিশ্বের পরিস্থিতি বদলে যাবে। তৈরি হবে নতুন এক মেরুকরণ।তাহলে কি রাসূলের ভবিষ্যদ্বাণী ইসলামের বিজয় আসন্ন।পর্বঃ০২

খুব কম সময়ের মধ্যে হয়তো বিশ্বের পরিস্থিতি বদলে যাবে। তৈরি হবে নতুন এক মেরুকরণ।তাহলে কি রাসূলের ভবিষ্যদ্বাণী ইসলামের বিজয় আসন্ন।পর্বঃ০২

প্রিয় পাঠক গত পর্বে আমি আপনাদেরকে জানিয়ে ছিলাম। দুই মেরুকরণে বিশ্বব্যবস্থা চেঞ্জ হওয়ার প্রথম প্রথম পর্ব নিয়ে। আশাকরি প্রথম পর্বে আমি আপনাদেরকে মোটামুটি কিছুটা বুঝতে পেরেছি। আজ কথা বলব দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে।

নানা কারণে বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান হিসাবে সর্বমহলে স্বীকৃতি পেয়েছে।বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতেছে। এবং কি এই ভূখণ্ডগুলো ধর্মীয়ভাবে ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।বিশেষ করে করে মুসলমানদের জন্য।হাদিসে বর্ণিত শেষ জামানায় এই ভূখণ্ডে একটি বরকত পূর্ণ জি* হাদ অনুষ্ঠিত হবে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘আল্লাহর রসুল (সা.) আমাদের থেকে গাজ*ওয়াতুল হিন্দ (হিন্দুস্তানের যুদ্ধ) করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”। (সুনানে নাসায়ী, খ- ৬, পৃষ্ঠা ৪২)

সুবহানাল্লাহ কতো বরকত ও ফজিলত পূর্ণ। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন।

এখানে মুল ফোকাস করার বিষয় হচ্ছে।মালহামার প্রাথমিক সুচনা শুরু হয়েছে সিরিয়া কেন্দ্রিক।কিন্তু গাজওয়াতুল হিন্দ এর সূচনা কোথা থেকে হতে পারে?অথবা শুরু হয়েছে কিনা?আরেকটা প্রশ্ন তৈরি হতে পারে তাহলে কি দুটি যুদ্ধই সমসাময়িক ভাবে সংঘটিত হবে।আর মালহামার ফজিলত কি?

শেষ থেকে শুরু করি।প্রথম কথা হচ্ছে মালহামা শুরুটা ধর্মযুদ্ধ দিয়ে হবে না,যদিও শেষটা হবে ধর্মযুদ্ধ দিয়ে ।এটি একটি বহু জাতিগত যুদ্ধ হবে।প্রত্যেকে তার নিয়ত অনুযায়ী আমলের ভাগীদার হবে।কেউ এ যুদ্ধের স্বার্থের জন্য জড়িয়ে পড়বে,কেউ ক্ষমতার জন্য,আবার কেউবা ধর্মের জন্য।অর্থাৎ এটি একটি বহু জাতিগত যুদ্ধ হবে।
অতীতে অন্যান্য নবী-রাসুলগনের উম্মতকে অঞ্চলভেদে আল্লাহ দীনুল হক বিকৃত ও প্রত্যাখ্যানের অপরাধে শাস্তি দিয়েছেন । এবার সমগ্র মানব জাতি তাদের কৃত অপরাধের কারনে তার দুই হাতে উপার্জিত শাস্তি প্রাকৃতিক নিয়মে ভোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে । তাদের তৈরী পারমানবিক বোমার আঘাতে মৃত্যু বরনের ভাগ্যকে সে নিজেই বরন করে নিয়েছে ।

অন্য দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় গাজওয়াতুল হিন্দ শুধুমাত্র সরাসরি ধর্মযুদ্ধ হবে এবং পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধর্ম যুদ্ধ।

রাসুল (ﷺ) একদিন পুর্ব দিকে তাকিয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছিলেন, এমন সময় এক সাহাবি রাসুল (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আপনি এমন করছেন কেন!”রাসুল (ﷺ) বললেন, “আমি পুর্ব দিকে বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছি।” সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহুম উনারা জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ(ﷺ) আপনি কিসের বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছেন? রাসুল (ﷺ) বললেন, পুর্ব দিকে মুসলিম ও মুশরিকদের (যারা মুর্তিপুজা করেন) সাথে যুদ্ধ শুরু হবে। যুদ্ধটা হবে অসম। মুসলিম সেনাবাহিনী থাকবে সংখ্যায় সীমিত, কিন্তু মুশরিক সেনাবিহিনী থাকবে সংখ্যায় অধিক।

ঐ যুদ্ধে মুসলিমরা এত বেশি মারা যাবে যে রক্তে মুসলিমদের পায়ের টাকুনি পর্যন্ত ডুবে যাবে। ঐ যুদ্ধে মুসলিমরা তিন ভাগে বিভক্ত থাকবে; এক ভাগ বিশাল মুশরিক বাহিনি দেখে ভয়ে পালিয়ে যাবে, তারাই হলো জাহান্নামী! আর এক ভাগ সবাই যুদ্ধে শহিদ হবেন। শেষ ভাগ আল্লাহর ওপর ভরসা করে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত জয় লাভ করবেন।

রসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন এই যুদ্ধ বদর যুদ্ধের সমতুল্য!(সুবহানাল্লাহ)তিনি আরো বলেছেন, ঐ সময় মুসলিমরা যে যেখানেই থাকুক না কেন তারা যেন সেই যুদ্ধে শরিক হন।

ইবনে নাসায়ী খন্ড ০১,পৃষ্টা ১৫২
সুনানে আবু দাউদ খন্ড ০৬,পৃষ্টা ৪২

উল্লেখিত হাদীস থেকে বোঝা যায় হিন্দুস্থানের যুদ্ধ শুধুমাত্র ধর্মীয় যুদ্ধ হবে এবং ভৌগলিক অবস্থান দিকে আপনি খেয়াল করলে দেখবেন এটি অনেক ত্যাগ এবং কষ্ঠকাঠিন্য যুদ্ধ হবে।যার প্রধান কারণ হচ্ছে এই অঞ্চলগুলোতে মুসলমানদের ছেয়ে মুশরিকদের সংখ্যা অনেক বেশি। যদিও মুসলমানরা কখনো সংখ্যাধিক্য দিয়ে অথবা শক্তি দিয়ে বিজয় অর্জন করেনি। বিজয় অর্জন করেছে ঈমান দিয়ে।দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে জাতিগতভাবে আমাদের সামগ্রিক মুসলমানদের লক্ষ্য করা যায় তাদের ঈমান এবং আকিদা সত্যিকার অর্থেই দুর্বল।সে কেন্দ্রিক এটাই স্পষ্ট যে এ যুদ্ধে মুশরিকদের প্রতিরক্ষা হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা মোসলমানদের সংখ্যা হবে খুবই কম।বরং এ জাতির অধিকাংশ মোসলমানরা মুশরিকদের সাথে নিজের জীবন বাচাতে হাত মেলাবে। অলরেডি হিন্দু স্থানের রাজাকারদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন কিনা জানিনা।সবমিলিয়ে লক্ষ করলে দেখা যায়। আসলে এই যুদ্ধটি হবে অনেক কষ্ট কাঠিন্য এবং ত্যাগের। তাইতো আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এর যুদ্ধের ফজিলত এত বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে।

অন্য দিকে মালহামা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা ভাইদের ও হতাশ হওয়ার অবকাশ নেই।তাদের জন্য ও সুসংবাদ।

রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার খাদিম হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক আমার উম্মতদের দু’টি দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন। আর সেই দুটি দল হচ্ছেন, এক. যাঁরা হিন্দুস্তান বা ভারতের মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। দুই. আর অপর দলটি হচ্ছেন, যাঁরা হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম-উনার সাথে থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ!
√ নাসাঈ শরীফ- কিতাবুল জিহাদ- বাবু গাযওয়াতুল হিন্দঃ হাদীস নম্বর ৩১৭৫।
√ মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৮।
√ আল তারীখুল কাবীর লিল বুখারী ৬/৭৩।
√ তাহযীবুল কামাল ৩৩/১৫২।
√ সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৮০।
√ মুখতাছারে তারীখে দিমাশক্ব ৬/৪৬৭।

পরের বিষয় আসা জাক। মালহামা আর গাজোয়া কি সমসাময়িক সময় শুরু হবে কিনা। প্রিয় পাঠক লিখার শুরুতে আমি আপনাদের প্রাথমিক ধারনা দিয়েছি।এবার আসুন হাদিস থেকে একটু ধারণা নিই।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, “আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আ.) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত। ও মুহাম্মাদ (সা.)! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আ.) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সা.) এর একজন সাহাবী”। বর্ণনাকারী বলেন যে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’। (আল ফিতান, খ- ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)
কা’ব (রা.) বর্ণিত, রসুলাল্লাহ (সা.) বলেন: “জেরুসালেমের [বর্তমান ফিলিস্তিন] একজন রাজা তার একটি সৈন্যদল হিন্দুস্তানের দিকে পাঠাবেন, যোদ্ধারা হিন্দের ভূমি ধ্বংস করে দিবে, এর অর্থ-ভা-ার ভোগদখল করবে, তারপর রাজা এসব ধনদৌলত দিয়ে জেরুসালেম সজ্জিত করবে, দলটি হিন্দের রাজাদের জেরুসালেমের রাজার দরবারে উপস্থিত করবে, তার সৈন্যসামন্ত তার নির্দেশে পূর্ব থেকে পাশ্চাত্য পর্যন্ত সকল এলাকা বিজয় করবে, এবং হিন্দুস্তানে ততক্ষণ অবস্থান করবে যতক্ষণ না দাজ্জালের ঘটনাটি ঘটে”। (ইমাম বুখারী (র.) এর উস্তাদ নাঈম বিন হাম্মাদ (র.) এই হাদিসটি বর্ণনা করেন তার ‘আল ফিতান’ গ্রন্থে। এতে, সেই উদ্ধৃতিকারীর নাম উল্লেখ নাই যে কা’ব (রা.) থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছে)

উপরোক্ত হাদীস গুলো থেকে বুঝা যায় মোটামুটি গাজওয়া এবং মালহামা সমসাময়িক সময়ে সংঘটিত হবে এ বিষয় মোটামুটি পরিস্কার।আবার ভুল ও হতে পারে কারণ সুনির্দিষ্ট এলমের মালিক একমাত্র আল্লহ।

প্রিয় পাঠক উপরের বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করার কারণ হচ্ছে আমি বলেছিলাম ২ মেরু করনে বিশ্বব্যবস্থা চেঞ্জ হবে।যার একটির সাথে আরেকটির মিল থাকায় এ বিষয় অলোচনা করা জরুরি বলে আমি মনে করেছি।

এবার আলোচনায় আসা জাক মুল পয়েন্টে, অর্থাত যে মেরুকরণে চেইঞ্জ হবে দক্ষিণ এশিয়া।তার নাম কাস্মীর, অর্থাৎ কাস্মীরকে ঘিরেই খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি!! কিন্তু কিভাবে বলবো আগামী পর্ব!!অর্থাৎ শেষ পর্বে।

Leave a Reply