You are currently viewing ফিৎনার জামানায় বিয়ে ছাড়া একজন অসহায় যুবকের বাস্তব  চিত্র।

ফিৎনার জামানায় বিয়ে ছাড়া একজন অসহায় যুবকের বাস্তব চিত্র।

প্রিয় উম্মাহর সচেতন অভিভাবক সম্মানিত মা ও বাবারা। হৃদয়ের গভীর থেকে আপনাদের উদ্দেশ্যে বিয়ে নিয়ে কয়েকটি কথা।

আপনারা জানেন বর্তমানে সারা পৃথিবীতে পেত্নার মোহামারি,যে সময় নিজের ঈমান টিকিয়ে রাখা বড় কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারীর ফেতনা যেন আজ পরমাণু অস্ত্রের আকার ধারণ করেছে। আর এই অস্ত্রের মূল কারিগর হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব এবং তাদের মিডিয়াগুলো। তারা আমাদের সম্মানিত মা ও বোনদের শুধু ভোগের সামগ্রী বানিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করতেছে।

ফেতনা নিয়ে যদি আমি উদাহরণ দিই।


ধরুন আপনি একজন ছাত্র, আপনার বয়স বয়স ২০ বছর।
আপনি বাসা থেকে বের হলেন। উদ্দেশ্য আপনার কলেজে যাওয়া।আপনি যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটতেছেন।দেখলেন কিছু মেয়ে টাইট ফিট জামা পরা আপনার পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে। এক কথায় তাদের পোশাক-পরিচ্ছেদ খুবই নোংরা।

আপনি বললেন হায় আফসোস তারা কি পর্দা সম্বন্ধে বে-খবর তারা কি জানেনা পর্দা তাদের প্রতি ফরজ ইবাদত । আপনি ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য দ্রুত হাঁটতেছেন। হাঁটতে হাঁটতে আপনি একটি বাজার এসে পৌঁছেছেন।তারপর দেখলেন এখানে পোশাক-পরিচ্ছদ পরার পরেও বিশ্ব নবীর হাদিস অনুযায়ী কিছু অর্ধ উলঙ্গ নারী। আপনি বললেন হায় আফসোস পূর্বের অবস্থায় তো ভালো ছিল।

আপনি হতভম্ব হয়ে ফেতনা থেকে মুক্তির জন্য,পাশের একটি মার্কেটে ঢুকে গেলেন।পূর্বের তুলনায় এখানের মানুষগুলো আরো বেপরোয়া।

এগুলো দেখে আপনার নফস আপনাকে খারাপ কামনা-বাসনা সিগন্যাল দিচ্ছে। আপনি ভয় পেয়ে এক দৌড়ে আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে গেলেন। কিন্তু হায় একি অবস্থা, ওখানেও শান্তি নেই। আপনি বললেন না, আর রুম থেকেই বের হওয়া যাবে না। না হয় আমি ফেতনার কাছে হেরে যাবো। তাড়াতাড়ি আপনি আপনার রুমে চলে গেলেন।সেখানে আপনি একা কি আপনার রুমে নিস্তব্ধ হয়ে বসে রইলেন।

একা একা রুমে অনেকক্ষণ থাকার পরে আপনার ভিতরে একঘেয়েমি চলে আসছে।ভাবলেন মোবাইলটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ অনলাইন ইউজ করি। অনলাইন চালাতে চালাতে হঠাৎ আপনার সামনে একটি থাম্বনিল। অমুক তমুক সেলিব্রিটির সাড়ে তিন মিনিটের ভিডিও না দেখলে মিস করবেন। যা সচরাচর আমরা দেখতে পাই।

আপনি ভাবলেন সাড়ে তিন মিনিটের ভিডিও একটু দেখি না কি আছে। গভীর থেকে আরো গভীরে আপনি রুমে একা,আপনার পাশে কেউ নেই। আপনি আপনার হাতের শেষ ছোট্ট দাজ্জালি বস্তুুর মাধ্যমে পুরো অশ্লীললতায় হাবুডুবু খাচ্ছেন।আপনার যৌবন শক্তি শেষ হওয়া পর্যন্ত আপনি ফেতনায় নিমজ্জিত আছেন।

আল্লাহর নামে শপথ করে বলি ওয়াল্লাহি আপনি কিন্তু পরাজিত হয়ে গেলেন। ফিতনা আপনাকে পরাজিত করে দিয়েছে। আপনি ক্লান্ত খুবই ক্লান্ত।

আপনি ক্লান্ত হয়ে বলতেছেন হে আমার রব।আমার ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা করো প্রভু। আমি ওয়াদা করতেছি আমি আর কখনো এমনটি করবো না।

কিন্তু না দু একদিন ফর পরে আপনি আপনার ওয়াদা ভুলে গেছেন। আপনি আল্লাহকে দেওয়া ওয়াদা ভঙ্গ করেছেন। আপনি আবারো ফেতনায় নিমজ্জিত হয়ে গেছেন।এজন্য একটি মহামারী ক্যান্সার।

প্রিয় উম্মার সম্মানিত বাবা এবং মা, সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ। আমি আপনাদের অনুরোধ করি ওয়াল্লাহি। আপনার সন্তানকে এমন একটা ফেতনা থেকে বাঁচাতে হলে, তাকে সারপ্রাইজ হিসেবে গাড়ি-বাড়ি নয়।অন্য কোন সামগ্রী নয়, আপনার সন্তানকে একটি বউ এনে দেন।তাছাড়া আপনার সন্তানের চরিত্র কখনোই, হেফাজত হবে না।কখনোই না!!

দুঃখজনক হলেও সত্য কিছু ভদ্রলোককে দেখা যায়, বয়স হয়ে গেছে কিন্তু বিয়ে করতেছে না। তাদেরকে যখন জিজ্ঞেস করি ভাই কি খবর। তখন বলে ভাই আমি পারতেছি আমার যৌবন হেফাজত করতে। কেউ আমাকে গালি দিলেও কিছু বলার নাই। গত আট বছর ফেতনা নিয়ে পড়াশোনা করি যতটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছি। তার আলোকেই বলতেছি, তার মত মিথ্যুক আর কেউ নেই।

কিন্তু ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজকে বলতে হচ্ছে, আমাদের বাবা-মার কাছে সন্তানের চরিত্র বড় নয় তারা কথিত সমাজ ব্যবস্থার, গোলামী নিয়ে ব্যস্ত। আর এদিকে তাদের সন্তানেরা তাদের চরিত্র বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। ফলে সমাজে দেখা দিচ্ছে দর্শনের মত ন্যাক্কার গঠনা। জিনার সয়লাব।

যেসব ছেলে মেয়ে তার চরিত্র হেফাজতের জন্য বিয়ে করতে চায়। কিন্তু তাদের বাবা-মা কথিত সমাজ ব্যবস্থার কথা বলে তাদেরকে ধমক দিয়ে বলতেছেন এত সকাল বিয়ে করলে মানুষ কি বলবে। সমাজ কি বলবে, তুই কি চাস তোর কারনে সমাজে আমরা ছোট হই। এবং ট্রেন্ডের কারণেই।

আল্লাহর নামে শপথ করে বলি,আপনার সন্তানের জিনার দায়ভার কাল কেয়ামতের ময়দানে অক্ষর অক্ষরে আল্লাহর কাঠগোড়ায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে হিসাব দিতে হবে। সেদিন আল্লাহ হবেন নিজেই বিচারক। আর সাক্ষী থাকবেন আপনাদের সন্তানদের দুনিয়ায় থাকা অবস্থায় যৌবনের খেয়ানত করা জিনার গুনা গুলি। ঐদিন আপনাদের এই নষ্ট-ভ্রষ্ট সমাজ ব্যবস্থা আপনাদেরকে বাঁচাতে আসবেনা। আপনার সন্তানরা বলবেন হে আমার রব আমি যদি জাহান্নামে যেতে হয় তাহলে আমাদের সাথে আমাদের বাবা-মা কেও নিয়ে চলুন। জাহান্নামের আগুনে হবে ঐদিন আপনাদের জন্য উত্তম ব্যবস্থা।

আজকে কথিত লেবাসধারী ধার্মিকতার নামে ভন্ড। যার পশ্চিমাদের, ট্রেন্ড বাল্যবিবাহ নামক নষ্ট ভ্রষ্ট শব্দ নিয়ে রাজনীতি করেন,এরা একেকটা বেজন্মা এবং দুশ্চরিত্রের অধিকারী। আমি এমন কিছু বেজন্মা কে দেখেছি, যাদের ম্যাসেঞ্জার পুরো অশ্লীলতায় ভরা। তারা আরেকজনের সমালোচনা করে, যে তাদের চেয়ে ৯৮ শতাংশ ভালো।

আজকে আমাদের অভিভাবকগণ মূর্খতায় নিমজ্জিত হয়ে গেছে। তাদের কাছে আল্লাহর সিদ্ধান্তর ছেয়ে, সামাজিক স্ট্যাটাস বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পদ্মার মত একটি ফরজ বিধান,সমাজ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। আমাদের আলেম সমাজ মৃত সুন্নতের কথা বলেন। তারা কি জানেনা আমাদের সমাজে পর্দা নামক মৃত ফরজ ও পাওয়া যায়।

আজ দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, কার আমাদের মাহরাম কারা গায়রে মাহরামা এ বিষয়ে আমরা খুবই বেখবর। আপন ভাই আপন ভাইয়ের মেয়ে, আপন বোন আপন বোনের মেয়ে চাড়া।

চাচাতো ভাই, খালাতো ভাই, ফুফাতো ভাই। চাচাতো বোন, খালাতো বোন, ফুফাতো বোন, এবং তাদের মেয়ে ছেলে। উভয় উভয়কে শরীয়ত অনুযায়ী বিয়ে করা যায়। তাদের সাথে পর্দা করা ফরজ।

কিন্তু না বলে পারতেছি না, কথিত ওই নষ্ট-ভ্রষ্ট সমাজ ব্যবস্থার কাছে আরও একটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সুন্নত সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে,প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় এ বিধান সমাজে বিদ্যমান রয়েছে। আজকে চাচাতো বোন এর মেয়ে, চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে, খালাতো ভাইয়ের মেয়ে, খালাতো বোনের মেয়েকে বিয়ে করা যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।আল্লাহর কাছে তা পছন্দনিয়, এবং জায়েজ।কিন্তু আমাদের কাছে তা নিন্দনীয় হায় আফসোস। আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে সমাজে চড়িয়ে পড়তেছে অসান্তি।

প্রিয় উম্মার সম্মানিত অভিভাবক বাবা ও মা, বিয়ের সম্পর্ক যৌবনের সাথে, ক্যারিয়ার গড়ার জন্য পড়ে রয়েছে আজীবন। অথচ আমাদের দেশে বলা হয় /আগে ক্যারিয়ার গড়ো তারপর বিয়ে কর।/ পরিণতিতে পার্কে পার্কে অবাধ প্রেমলীলা, ধর্ষণের সেঞ্চুরি আর ডাস্টবিন গুলোতে বেওয়ারিশ শিশু লাশের ছড়াছড়ি যা কুকুর, কাক আর শকুন মিলে ভাগাবাটি করে খায়। আর এর জন্য মূলত দায়ী আপনাদের ইসলাম বিমুখ মানসিকতা। আল্লাহর শপথ করে বলি ওয়াল্লাহি।আল্লাহর নামে শপথ করে বলি ওয়াল্লাহে।আপনাদের এমন মানসিকতার জন্য আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে। সমাজব্যবস্থাকে লাথি মেরে সংশোধন হোন। ফিরে আসুন আপন নীড়ে।

সত্যের সন্ধানে হে যুবক আপনাদের উদ্দেশ্যে কয়েকটি কথা।

‘যে যুবকের এখন বিয়ের বয়স, কিন্তু নানান প্রতিকূলতায় তার বিয়ের ব্যবস্থা হচ্ছেনা, সে কি কখনো আল্লাহর কাছে হাত তুলে বলেছে, ‘ইয়া আল্লাহ! আমার শরীরে এখন যৌবনের উন্মত্ত উন্মাদনা। আমার সামনে-পেছনে, ডানে-বায়ে, উপরে-নিচে সবখানে ফিতনা আর ফিতনা। ফিতনার এই মায়াজাল ভেদ করে নিজের চরিত্রকে শুদ্ধ রাখাটা আমার জন্য দুঃসাধ্য, কঠিন হয়ে উঠেছে। ইয়া রব! যদি আমার কোন ভালো চাকরি না হয়, যদি আমার আর্থিক অবস্থার কোন পরিবর্তন না হয়, তাহলে বিয়ে করাটা আমার জন্য একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়বে। মাবূদ! আমি ফিতনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাই। আমি চাই একটি হালাল সম্পর্ক যেখানে আমার চোখ শীতল হবে, আমার হৃদয় তৃপ্ত হবে, আমার অন্তর প্রশান্ত হবে। আপনি তো সমস্ত ঐশ্বর্যের মালিক। আপনিই পথের ভিখারিকে রাজা বানান, আবার রাজাকে বানান পথের ভিখারি। মাবূদ! আপনার অঢেল, অফুরন্ত ঐশ্বর্য থেকে আমার জন্য কিছু রিযিক নির্ধারিত করুন। আমার জন্য বিয়েটাকে সহজ করে দিন।

সর্বশেষ যে কথাটি বলব আমাদের সমাজের সংস্কার প্রয়োজন। আর এই সংস্কারের জন্য প্রয়োজন। কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ যারা এক আল্লাহর গোলামী ছাড়া অন্য কোন কারো গোলামী করে না। হোক সমাজের বা অন্য কিছুর।

আল্লাহ মজলুমের আর্তনাদ সহ্য করেন না। উনি মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ।এ সময় দরকার ছিল আল্লাহর ডাইরেক একশন। তাইতো একেকবার করোনো ভাইরাস দিয়ে,একেকবার আগুন দিয়ে, একেকবার দুর্যোগ দিয়ে নাস্তানুবাদ করে চাড়ছে জালেমদের। তাদের জন্য এটাই প্রযোজ্য।

হে আমার রব কথিত সমাজ ব্যবস্থার দাবীদার,,ইসলাম বিমুখ এই জাহেল আমাদের সমাজের অভিভাবকদেরকে তুমি হেদায়েত দাও না হয়, তোমার লানতে এদেরকে ধ্বংস করে দাও।

This Post Has 3 Comments

  1. Mahbub Hasan

    সঠিক বলছেন প্রিয় ভাই। কয়েক সাপ্তাহ আগে আমি আমার আম্মাকে এই বিয়ের কথা বলি কিন্তু আমার আম্মা আমার সামনে কেদে দিয়ে আমাকে মটিভেশনাল এটাক করেছেন, যাতে করে আমি আর বিয়ের কথা না বলি । আমি কি করবো বুঝতে পারছি না ভাই। গুনাহ থেকে নিজেকে বাচানো অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে । আপনার দোয়ার মধ্যে আমাকে একটু সামিল রাখিয়েন ভাই। আমার জন্য একটু দোয়া করিয়েন । যাতে করে আমার বাবা মা তারাতারি আমাকে বিয়ে করিয়ে দেন । আমিন।

    1. jibon

      allah sahajjo korun

  2. jibon

    ontorer kotha bolcen prio vai

Leave a Reply