You are currently viewing তালেবান কি সেই দল, শেষ জামানায় যে দলটির কথা হাদীসে বর্ণিত ইমাম মাহদীর দল বলা হয়েছে!! পর্ব ০২

তালেবান কি সেই দল, শেষ জামানায় যে দলটির কথা হাদীসে বর্ণিত ইমাম মাহদীর দল বলা হয়েছে!! পর্ব ০২

সুসংবাদ প্রাপ্ত দলের পরিচয়। ১ম পর্বের বিশ্লেষণ)

১ম পর্ব এর সবগুলো হাদিস পর্যবেক্ষণ করলে প্রতীয়মান হয়ঃ

★খোরাসানের যে বাহিনীটি বের হবে তাদের পতাকা হবে কালো।

★তাদের পাগড়ীগুলো কালো এবং জামা সাদা বর্ণের হবে।

★তাদের পোশাক ঢিলে ঢালা এবং চুল ওয়ালা হবে,পাশাপাশি গ্রাম থেকে তাদের আবির্ভাব হবে।

★মুল নামের পরিবর্তে তারা উপনামে পরিচিত পাবে।

★তাদের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে পশ্চিমা শক্তি।

★তারা এ সকল প্রতিবন্ধকতাকে বিজয় করে খোরাসান থেকে ইরাকের দিকে যাবে।

★এক পর্যায়ে এই কালো পতাকাবাহী খোরাসানিদের সঙ্গে ইমাম মাহদি (যদিও তার আত্মপ্রকাশ হয়নি) নিয়েই মক্কাতে পৌছবে।
সেখানে কোন এক খলীফার তিনপুত্রের দ্বন্দের প্রেক্ষিতে যখন হজ্জ মৌসুমে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটবে, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তার আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এবং তার সাথে উপস্থিত থেকে এই খোরাসানের কালো পতাকাবাহীরাই প্রথম বাইয়াতের সৌভাগ্য অর্জন করবে।
পরে তিনি সিরিয়ার অভিমুখে যাত্রা করে বনু কাল্ব গোত্রীয় কুরায়শি শাসক এর সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে দেবে। (যা হাদিসে ‘কালবের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত)।
যেহেতু এই বাহিনী ইমাম মাহদির নেতৃত্বাধীন থাকবে, হাদিসে বর্ণিত সকল যুদ্ধেই এই কালো পতাকাবাহী খোরাসানি বাহিনীর সকল যোদ্ধা ইরাক, বৃহত্তর সিরিয়া (সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, প্যালেস্টাইন, বাইতুল মাকদিস) তে কাল্বের যুদ্ধ, পেছন দিককার শত্রুর সাথে যুদ্ধ, রোমানদের (পশ্চিমা খ্রিস্টানদের) সাথে মহাযুদ্ধ থেকে শুরু করে ইস্তাম্বুল বিজয় পর্যন্ত সব যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করবে। কারণ, তারা ইমাম মাহদির খেলাফত প্রতিষ্ঠাকে সহজ করে দিবেন। এবং সর্বশেষে সকল বিজয়ের পর যখন জেরুজালেমে খেলাফত প্রতিষ্ঠা হবে, তখন তারা সেখানে এই কালো পতাকা উড়িয়ে তাদের ঘোড়াগুলোকে জাইতুন গাছের সাথে বেধে তারা ক্ষান্ত হবে।

★যেহেতু খোরাসানেত বাহিনী ইমাম মাহদির সাথে Related সো এটা আখেরী জামানার হবে

এবার আমরা খোরাসানের দিকে তাকাই। আশির দশকে খোরাসানের কেন্দ্রস্থল আফগানিস্তান তৎকালীন পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বারা আক্রান্ত হয়। দীর্ঘ দশ বছরের (১৯৭৯ – ১৯৮৯) যুদ্ধের পর পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন শুধু পরাজিতই হয়নি, কয়েক বছরের মাথায় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেজ্ঞে যায়।

১৯৮৯ সালে রাশিয়ানরা ফিরে গেলে তাদের দালালদেরকে কাবুল থেকে হটিয়ে ১৯৯২ সালে ইসলামিক স্টেট অফ আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় এবং জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করে একটি রঙ্গিন পতাকা গ্রহণ করা হয়।
অবশেষে গ্রাম্য এক মাদ্রাসার শিক্ষক (মুল্লা মুহাম্মাদ গুটি কয়েক দরিদ্র ছাত্রদের নিয়ে শুরু হয় জিহাদ ফি ছাবিলিল্লাহ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসলেন অনেক মুজাহিদ একের পর এক প্রদেশ তাদের নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকে। অবশেষে ১৯৯৬ সালে কাবুলের নিয়ন্ত্রন নেওয়ার পর তারা দেশের আনুষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রনের ঘোষণা দেয়। জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত রঙ্গিন পতাকা হটিয়ে উড়িয়ে দেয় ইসলামিক ভূখণ্ডের সত্যিকার পতাকা ‘লিওয়া’ – সাদার ভিতরে কালো রঙ্গের কালিমা খচিত। আর সেনাবাহিনীর পতাকা হল ‘ আর রায়া’ – কালোর ভিতরে সাদা রঙ্গের কালিমা খচিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও যুদ্ধের সময় কালো পতাকা ব্যবহার করতেন, যা ‘উকাবা’ নামে পরিচিত।

শুরু হল খোরাসানের কেন্দ্রস্থলে কালো পতাকাবাহী দলের যাত্রা। পশ্চিমা বিশ্ব হারালো তাদের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রন। শুরু হল দাজ্জালি মিডিয়ার প্রচার যুদ্ধ। মিডিয়াতে দেখাতে লাগলো এই দলকে। কিন্তু এ কারা। জামা সাদা বর্ণের আর পাগড়ীগুলো কালো বর্ণের। পোশাক ঢিলে ঢালা , অনেকেই চুল ওয়ালা, পশ্চিমা মিডিয়াই বিশ্বকে জানিয়ে দিল এরা সব পশ্চাৎপদ গ্রামীন। মাদ্রাসার ছাত্র। পশ্চিমা মিডিয়া বিশ্বের সামনে এদেরকেে উপনামে পরিচয় করিয়ে দিল (হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী তাদের নামের পরিবর্তে তারা উপনামে পরিচিত হবে)।

সময় গড়িয়ে এল ২০০১। এবার সরাসরি প্রতিবন্ধকতার পালা। (হাদিসের অনুয়ায়ী যদিও তাদের কেউ প্রতিহত করতে পারবে না, কিন্তু যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে পশ্চিমা শক্তি)।

২০০১ এ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সমগ্র পশ্চিমা জোটের স্থল ও আকাশ যোগে আক্রমণ। জোট ও তাদের মিত্রদের (জাতীয়তাবাদী) পতাকার সংখ্যা ২০১১ সালে এক পর্যায়ে ৪৯ এ এসে ঠেকলঃ আলবেনিয়া, আরমেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বুলগেরিয়া, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, এল সালভাদর, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জর্জিয়া, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জর্ডান, রিপাবলিক অব কোরিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবারগ, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, মন্তেনিগ্রো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া রিপাবলিক অফ মেসিডোনিয়া, টোঙ্গা,, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

এখন পর্যন্ত ৪৯ টি দেশের অনেকেই চলে গেছে আফগানিস্তান ছেড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালের শেষ পর্যন্ত সকল সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করেছে।

খেয়াল করার বিষয় হল, বর্তমানে ঠিক সিরিয়াতে যখন বনু কাল্ব গোত্রের শাসক বাশার আল আসাদ আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত খোরাসানের এই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে জুন ২০১৩ তে ১২০জন যোদ্ধা সিরিয়াতে যোগ দেয়। (সূত্রঃ ডন, জুলাই ১৪, ২০১৩)।

আর এই বাহিনী যদি ইমাম মাহদি আগমনের পূর্বে আত্মপ্রকাশকৃত সেই বাহিনী হয়, তবে তাদেরকে আর একটি শর্ত পূরণ করতে হবে। হযরত ইয়াজিদ ইবনে সানাদি বর্ণনা করেন, হযরত কাব (রাঃ) বলেছেন,“মাহদির আত্মপ্রকাশের একটি লক্ষণ হল, পশ্চিম দিক থেকে পতাকা আসবে। বনু কানদা’র এক খোঁড়া ব্যক্তি সেই বাহিনীর নেতৃত্ব দেবে”। (আস সুনানুল ওয়ারিদাতুল ফিল ফিতান)

অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হল, ২০০১ সালে যখন পশ্চিমারা খোরাসানের এই কালো পতাকাবাহী বাহিনীটিকে আক্রমণ করে তখন তাদের জয়েন্ট চীফ কমান্ডার ছিল এয়ার ফোর্স জেনারেল রিচার্ড মাইয়ের (Richard Myers)। তার এক পা খোঁড়া।

সে জন্ম গ্রহণ করে কানসাস শহরে যার কিনা কানাডার সাথে সীমানা এবং এই শহরের বেশির ভাগ অধিবাসী কানাডা থেকে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে সেই শুরু থেকে। আর কানাডাকে আরবীতে ‘কানদা’ (كندا) বলে। বাকিটা আল্লাহই ভালো জানেন।

উপরক্ত হাদিসের সকল নিদর্শন বাস্তবায়ন করে কালো পতাকাবাহী সেই দল ইমাম মাহদীর আগমনের অপেক্ষায়।

১ম পর্বঃ

https://akhirujjaman.com/wp-admin/post.php?post=99&action=edit

This Post Has 0 Comments

  1. hm Mahmud

    জাযাকাল্লাহ খায়ের ভাই

Leave a Reply