You are currently viewing দরজায় কড়া নাড়ছে তৃতীয়  বিশ্বযুদ্ধ মালহামা তুল কুবরা।  পর্বঃ০১

দরজায় কড়া নাড়ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ মালহামা তুল কুবরা। পর্বঃ০১

শায়েখ আনোয়ার আল আওলাকি (রাহিঃ) ২০১১ এর ৩০শে সেপ্টেম্বর অ্যা/মেরি/কান সন্ত্রা/সীদের ড্রোন হামলায় শহীদ (ইনশা আল্লাহ্‌) হন। উনি যখন আল মালহামা নিয়ে লেকচার দেন তখন ও সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয়নি, যুদ্ধের কোন আভাস ও পাওয়া যায়নি, ৬-৭ বছর আগে বলে যাওয়া উনার কথা গুলোর সাথে বর্তমান অবস্থাকে মিলিয়ে দেখার অনুরোধ রইলো…

আল মালহামা হল একটি যুদ্ধ। একটি অত্যন্ত তীব্র ও ভয়ঙ্কর মহাযুদ্ধ। আল মালহীম হল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক যুদ্ধের সম্মীলনে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ। একটি দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত। যা বছরের পর বছর ধরে চলবে। এটা হল অনেকগুলো ছোট যুদ্ধের সম্মীলনে একটি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ এবং রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, আল মালাহীম সংঘঠিত হবে মুসলিম এবং আর রোমানদের মধ্যে।

কারা এই “রোমান”? রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম]-এর সময়ে “রোমান” বলতে কোন রাজনৈতিক সত্ত্বা বা শক্তিকে বোঝানো হতো না বরং একটি জাতিকে বোঝানো হতো সেই সময়ের রোমানরা ছিল – ইউরোপিয়ানরা সুতরাং “রোমান” নামটি প্রযোজ্য হবে ইউরোপ এবং এর বর্ধিত অংশগুলোর জন্য উত্তর আমেরিকা (আমেরিকা, কানাডা) ও অস্ট্রেলিয়া। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম] বলছেন রোমান এবং মুসলিমদের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ চলবে, এবং এর নাম আল মালাহামা এবং এসব ঘটনাবলী সংঘঠনের সময়ে-মাহদীর আবির্ভাব ঘটবে এবং ঈসা বিন মারইয়াম [আলাইহিস সালাম] অবতরন করবেন এবং দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। এসবই ঘটবে আল-মালাহামার সময়। সুবহান’আল্লাহ, আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি পশ্চিমা বিশ্ব রোমানদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে এবং মালহামার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে, আর মুসলিমরা এখনো ঘুমাচ্ছে, আলোচনা আর শান্তির গালগল্প বিশ্বাস করে বিভ্রান্ত হচ্ছে।

ইউরোপীয়ানরা খ্রিস্টান ধর্মের একটি বিকৃত রূপ পেয়েছিল। তাঁরা কখনোই ঈসা [আলাইহিস সালাম] – এর প্রকৃত ধর্মে ঈমান আনেনি। তাঁরা শুরুতে ছিল মুশরিক আর তারপর তাঁরা খ্রিস্টান ধর্মের এমন একটি রূপের অনুসারী হয়েছে যা শিরক। তাঁদের অবস্থা প্রাচ্যের খ্রিস্টানদের মতো না, যারা এক সময় ঈসা [আঃ] সত্যিকার অনুসারী ছিল। দীর্ঘদিন ধরে তাওহীদের আলো থেকে দূরে অন্ধকার ও অজ্ঞানতার মধ্যে ইউরোপ বসবাস করছে। ইউরোপিয়ানরা বুনিয়াদি ভাবে একটি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ধর্মকে বিকৃত করেছে। আমি খ্রিস্টান ধর্মের যেই বিকৃত রূপ তাঁরা অনুসরণ করে তাঁর কথা বলছি যেটা অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় একটি ধর্ম “কেউ তোমার একগালে আঘাত করলে তুমি অপর গাল পেতে দাও” [বাইবেলঃ ম্যাথিউ ৫:৩৮]। এর চাইতে বেশি শান্তিপ্রিয় হওয়াতো সম্ভব না।

ইউরোপ এমন এক সত্ত্বা যা শয়তানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা রাখে। কারণ ইসলামের সাথে লড়াই করার জন্য শয়তান সবচাইতে খারাপদেরকেই খুঁজছে। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম] – এর হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি কিছু নির্দিষ্ট ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে এই দীর্ঘ যুদ্ধ শুরু হবে, যার শুরুতে মুসলিমরা থাকবে খুবই দুর্বল আর এই যুদ্ধ শেষ হবে মুসলিমদের দ্বারা পুরো দুনিয়া শাসিত হবার মাধ্যমে। এটা হবে সবচেয়ে মারাত্মক ফিতানের সময় আবার একই সাথে সবচেয়ে বেশি বরকতময় সময়। এই সময়েই আল মাহদী এবং ঈসা [আলাইহিস সালাম] আসবেন এবং এই সময়েই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে।

এখন একথাগুলোর অর্থ এই না যে সব রোমানরাই ইসলামের শত্রু হবে। কারণ ইসলাম প্রতিনিয়ত মানুষের হৃদয় জয় করে নিচ্ছে। এই ব্যাপারটা খুবই কৌতুহল উদ্দীপক যে যদিও রোমানরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের মধ্যে অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করছে এবং আমরা হাদীস থেকে জানি রোমান আর্মি মুসলিমদেরকে ওইসব রোমানদের হস্তান্তর করতে বলবে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং মুসলিমরা বলবে “আমরা কখনোই আমাদের ভাইদের তোমাদের হাতে তুলে দেবো না”। যদিও তাঁদের বর্ণ এবং জাতীয়তা ভিন্ন তাও তাঁরা আমাদের ভাই, কারণ এখন তাঁরা মুসলিম এবং ইসলাম প্রতি আনুগত্য অন্য যেকোন পরিচয়ের চাইতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘটনা সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত আছে। এবং এ ব্যাপারে বুখারী ও মুসলিম শরীফে সাহীহ হাদীস বর্ণিত আছে, যেমন মুসলিম শরীফের একটি হাদীস হলঃ রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম] বলেছেন- রোমানরা তোমাদের আক্রমণ করবে এবং আস শামের আল আমাকে তাঁবু খাটাবে (অবস্থান গ্রহণ করবে)। মদিনা থেকে একটি বাহিনী তাঁদের মোকাবেলা করতে যাবে। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু ওয়ালাইহী ওয়া সাল্লাম] বলেন – “এবং তাঁরা হবে তাঁদের সময়কার শ্রেষ্ঠ মুমিন” এবং এই মুসলিম বাহিনী তাঁদের অবস্থান গ্রহণ করবে, এবং রোমানরা তাঁদের বলবে – “ আমাদের লোকদের আমাদের হাতে তুলে দাও”, অর্থাৎ ওইসব রোমান যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং মুসলিমরা বলবে, “ আমরা কখনোই আমাদের ভাইদের তোমাদের হাতে তুলে দেবো না”। সুতরাং উভয় দল যুদ্ধ যুদ্ধ করবে, মুসলিম বাহিনীর এক-তৃতীয়াংশ হার স্বীকার করে পালিয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাললাহু ওয়ালাইহী ওয়া সাল্লাম] বলেছেন – “আল্লাহ্‌ কখনোই তাঁদের তাওবাহ কবুল করবেন না”। জিহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া কবীরা গুনাহর একটি [সাহীহ বুখারী – কিতাব ৫১, হাদীসঃ২৮]।

চলবে,,,

Leave a Reply