You are currently viewing তালেবান কি সেই দল, শেষ জামানায় যে দলটির কথা হাদীসে বর্ণিত ইমাম মাহদীর দল বলা হয়েছে!! পর্ব ০১

তালেবান কি সেই দল, শেষ জামানায় যে দলটির কথা হাদীসে বর্ণিত ইমাম মাহদীর দল বলা হয়েছে!! পর্ব ০১

বিস্তারিত!!

খোরাসানের কালো পতাকাবাহী দলের আগমন

আবদুল্লাহ ইবনে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
রাসুলুল্লাহ(সা) বলেন “পূর্বদিক (খোরাসান) থেকে কিছু লোক বের হয়ে আসবে, যারা ইমাম মাহদির খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে এবং খিলাফত প্রতিষ্ঠা করবে। ( সুনানে ইবনে মাজা, খণ্ড ৩, হাদিস নং ৪০৮৮)

অপর বর্ণনায়, হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু (সা) বলেছেন,“যখন তোমরা দেখবে, কালো পতাকাগুলো খোরাসানের দিক থেকে এসেছে, তখন তাদের সাথে যুক্ত হয়ে যেও। কেননা
তাদেরই মাঝে আল্লাহর খলীফা মাহদি থাকবে”
(মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৭৭,কানজুল উম্মাল, খণ্ড ১৪, পৃষ্ঠা ২৪৬,মিশকাত শরীফ, কেয়ামতের আলামত অধ্যায়)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, একদা আমরা নবী করীম (সা) এর খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উনি বলতে ছিলেন,
“ঐ দিক থেকে একটি দল আসবে (হাত দিয়ে তিনি পূর্ব দিকে ইশারা করলেন)। তারা কালো পতাকাবাহী হবে। তারা সত্যের (পূর্ণ ইসলামী শাসনের) দাবী জানাবে, কিন্তু তাদেরকে দেওয়া হবে না। দুইবার বা তিনবার এভাবে দাবী জানাবে, কিন্তু তখনকার শাসকগণ তা গ্রহণ করবে না। শেষ পর্যন্ত তারা (ইসলামী শাসন ব্যবস্থার দায়িত্ব) আমার পরিবারস্থ একজন লোকের (ইমাম মাহদির) হাতে সোপর্দ করে দিবে। সে জমিনকে ন্যায় এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে ভরে দিবে, ঠিক যেমন ইতিপূর্বে অন্যায় অত্যাচারের মাধ্যমে ভরে দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যদি কেউ ঐ সময় জীবিত থাকো, তবে অবশ্যই তাদের দলে এসে শরীক হয়ে যেও – যদিও বরফের উপর কনুইয়ে ভর দিয়ে আসতে হয়”।
(আবু আ’মর আদ দাইনিঃ ৫৪৭, মুহাক্কিক আবু আবদুল্লাহ সাফেঈ হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন)

হযরত হাসান (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী করীম (সা) (আহলে বাইত) লোকদের উপর আশু বিপদাপদের বর্ণনা দিয়ে বলছিলেন,
“শেষ পর্যন্ত আল্লাহ পাক পূর্ব দিক থেকে কালো পতাকাবাহী লোকদেরকে পাঠাবেন। যারা ঐ কালো পতাকাবাহী লোকদেরকে সাহায্য করল, আল্লাহ তায়ালাও তাকে সাহায্য করবেন। যে তাকে ছেড়ে দিল, আল্লাহ তায়ালাও তাকে ছেড়ে দেবেন। তারপর ঐ কালো পতাকাবাহী দল এমন এক ব্যক্তি (ইমাম মাহদি) এর কাছে আসবে – যার নাম আমার নামের মতো হবে। তারা ঐ ব্যক্তি (ইমাম মাহদি) এর উপর শাসনব্যবস্থার দায়িত্ব সোপর্দ করবে। সুতরাং, আল্লাহ তায়ালাও তাদেরকে সহযোগিতা করবেন”
(আল-ফিতান, নুয়া’ইম ইবনে হাম্মাদঃ ৮৬০)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সা) নিকট উপস্থিত হলাম। এ সময়ে বনু হাশিমের কয়েকজন যুবক এসে হাজির হল। তাদের দেখার পর রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চোখদুটো লাল হয়ে গেল এবং চেহারার রং বদলে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, এই অবস্থা দেখে আমি বললাম, ‘আমরা আপনার চেহারায় অপ্রীতিকর কিছু দেখতে পাচ্ছি যে! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,“আমরা আহলে বাইতের জন্য আল্লাহ দুনিয়ার পরিবর্তে আখিরাতকে নির্বাচন করেছেন। আমার পরিবারের সদস্যরা আমার অবর্তমানে বিপদ, দেশান্তর ও অসহায়ত্বের শিকার হবে। এমনকি পূর্ব দিক থেকে এমন কিছু লোক আগমন করবে, যাদের পতাকা হবে কালো। তারা কল্যাণ (নেতৃত্ব) প্রার্থনা করবে; কিন্তু এরা (বনু হাশিম) দেবে না। অগত্যা তারা যুদ্ধ করবে ও জয়লাভ করবে। এবার তারা যা (নেতৃত্ব) প্রার্থনা করেছিল, (বনু হাশিম) তা প্রদান করবে। কিন্তু এবার তারা তা (নেতৃত্ব) গ্রহণ না করে আমার বংশের এক ব্যক্তি (ইমাম মাহদি) কে তা (নেতৃত্ব) ফিরিয়ে দিবে। সেই ব্যক্তি (ইমাম মাহদি) পৃথিবীটাকে ন্যায়নীতি দ্বারা এমনভাবে ভরে দিবে, যেমনটি পূর্বে তা অবিচারে পরিপূর্ণ ছিল। তোমাদের যে লোক সেই সময়টি পাবে, সে যেন উক্ত বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে যায় বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে গিয়ে হলেও”।(সুনানে ইবনে মাজা, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৬৬)

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন,“যখন কালো পতাকাগুলো পূর্ব দিক (খোরাসান) থেকে বের হবে, তখন কোন বস্তু তাদেরকে প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না। এমনকি এই পতাকাকে ইলিয়ায় (বাইতুল মুকাদ্দাসে) উত্তোলন করা হবে (খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবে)”।
(সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং ২২৬৯,মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ৮৭৬০)

প্রতিহত করতে না পারলেও সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা তৈরির ব্যাপারে বর্ণনা এসেছে। ইমাম জুহরি বলেছেন, আমার কাছে এই বর্ণনা পৌঁছেছে যে,

“খোরাসান থেকে কালো পতাকা বের হবে। সেটি যখন খোরাসানের ঘাঁটি থেকে অবতরণ করবে, তখন ইসলামের খোঁজে অবতরণ করবে। কোন বস্তু তাদের মাঝে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে না অনারবদের পতাকাগুলো ব্যতীত, যেগুলো পশ্চিম দিক থেকে আসবে”।(কানাজুল উম্মাল, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা ১৬২)

ইমাম যুহরি বলেছেন,“পূর্ব থেকে কালো পতাকা এগিয়ে আসবে, যাদের নেতৃত্ব দেবে এমন এক দল লোক, যারা হবে ঝুলপরিহিত খোরাসানি উস্ট্রীর মতো, লম্বা চুল ও দাঁড়ি বিশিষ্ট। তাদের বংশ হবে গ্রামীণ আর নাম হবে উপনাম। তারা দামেস্ক নগরীকে জয় করবে। তাদের থেকে তিন ঘণ্টার জন্য রহমত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে”। (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২০৬)
খোরাসান থেকে বের হওয়া এই কালো পতাকাবাহী এই বাহিনী ইমাম মাহদীর হাতে বাইয়াত গ্রহণের পূর্বে ইরাকের কুফা নগরীতে সিরিয়ার বনু কাল্ব গোত্রীয় কুরায়শি শাসকের (হাদিসের বর্ণনাগুলোতে ‘সুফিয়ানি’ হিসাবে এসেছে) মোকাবিলা করবে।

আরতাত (রাঃ) বলেন,“সুফিয়ানি কুফায় প্রবেশ করবে। তিনদিন পর্যন্ত সে দুশমনদের বন্দীদেরকে সেখানে আটকে রাখবে এবং সত্তর হাজার কুফাবাসীকে হত্যা করে ফেলবে। তারপর সে আঠার দিন পর্যন্ত আঠার দিন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে তাদের (কুফাবাসীদের) সম্পদগুলো বণ্টন করবে। তাদের (কুফাবাসীদের) মধ্যে একদল খোরাসানে ফেরত যাবে। সুফিয়ানির সৈন্যবাহিনী আসবে এবং কুফার বিল্ডিংগুলো ধ্বংস করে সে খোরাসানবাসীদেরকে তালাশ করবে। খোরাসানে একটি দলের আবির্ভাব ঘটবে, যারা ইমাম মাহদির দিকে আহ্বান করবে। অতঃপর মাহদি ও মানসুর (একজন সেনাপতি) উভয়ে উভয়ে কুফা থেকে পলায়ন করবে। সুফিয়ানি উভয়ের তালাশে সৈন্য প্রেরণ করবে। অতঃপর যখন মাহদি ও মানসুর মক্কায় পৌঁছে যাবে, তখন সুফিয়ানির বাহিনীকে ‘বায়দা’ নামক স্থানে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। এরপর মাহদি মক্কা থেকে বের হয়ে মদিনায় যাবেন এবং ওখানে বনু হাশেমকে মুক্ত করবেন। এমন সময় কালো পতাকাবাহী লোকেরা এসে পানির উপর অবস্থান করবে। কুফায় অবস্থিত সুফিয়ানির লোকেরা কালো পতাকাবাহী দলের আগমনের কথা শুনে পলায়ন করবে। কুফার সম্মানিত লোকেরা বের হবে যাদেরকে ‘আসহাব’ বলা হয়ে থাকে, তাদের কাছে কিছু অস্ত্র শস্ত্রও থাকবে এবং তাদের মধ্যে বসরা’বাসীদের থেকে একজন লোক থাকবে। অতঃপর কুফাবাসী সুফিয়ানির লোকদেরকে ধরে ফেলবে এবং কুফার যে সব লোক তাদের হাতে থাকবে, তাদেরকে মুক্ত করবে। পরিশেষে কালো পতাকাবাহী দল এসে মাহদির হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে”।(আল ফিতানঃ ৮৫০)

‘মানসুর’ সম্পর্কে হযরত হিলাল ইবনে আমর বর্ণনা করেন, আমি হযরত আলী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি,রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন,“এক লোক মা-আরউন্নহর (নদীর ওপার) থেকে রওনা হবে, যার নাম হবে হারছ হাররাছ। তার বাহিনীর সম্মুখ অংশের সেনাপতির নাম হবে মানসুর, যে (খেলাফত বিষয়ে) মুহম্মদ বংশের জন্য পথ সুগম করবে বা শক্ত করবে, যেমনটি কুরাইশ আল্লাহর রাসুলকে ঠিকানা দান করেছিল। তার সাহায্য সহযোগিতা করা কিংবা তার ডাকে সাড়া দেওয়া প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য বলে বিবেচিত হবে”।(সুনানে আবী দাউদ, হাদিস নং ৪২৯০)

আমু নদীর ওপারে অবস্থিত মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে ইসলামের পরিভাষায় ‘মা-আরউন্নহর’ বা ‘নদীর ওপার’ বলা হয়। উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান,কাজিকিস্তান এর অন্তর্ভুক্ত যা কিনা বৃহত্তর খোরাসানের একটি অংশ।

মুহম্মদ বিন হানাফিয়্যা (রহঃ) বলেন,“বনু আব্বাস থেকে পতাকাবাহী দল বের হবে। অতঃপর খোরাসান থেকে কালো পতাকাবাহী অন্য আরেকটি দল আত্মপ্রকাশ করবে। তাদের পাগড়ীগুলো কালো বর্ণের হবে এবং জামা সাদা বর্ণের হবে। কালো পতাকাবাহী দল সুফিয়ানি (সিরিয়ার বনু কাল্ব গোত্রীয় কুরায়শি শাসক) এর সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে দেবে। শেষ পর্যন্ত তারা বাইতুল মুকাদ্দাসে এসে উপস্থিত হবে এবং তাদের নেতৃত্ব ইমাম মাহদির হাতে সোপর্দ করে দেবে। তাদের কাছে সিরিয়া থেকে তিনশত লোক আসবে। এদের (খোরাসান থেকে কালো পতাকাবাহী) বের হওয়া এবং মাহদির হাতে নেতৃত্ব সোপর্দ করার মাঝে ৭২ মাসের (৬ বছরের) ব্যবধান থাকবে”।(কিতাব আল ফিতানঃ ৮৫১)

হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন,“তোমাদের ধনভাণ্ডারের নিকট তিনজন খলীফা সন্তান যুদ্ধ করতে থাকবে। কিন্তু ধনভাণ্ডার তাদের একজনেরও হস্তগত হবে না। তারপর পূর্ব দিক (খোরাসান) থেকে কতগুলো কালো পতাকা আত্মপ্রকাশ করবে। তারা তোমাদের সাথে এমন ঘোরতর লড়াই লড়বে, যেমনটি কোন সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে লড়েনি”।

বর্ণনাকারী বলেন, তারপর নবীজি(সা) আরও একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেন,
তারপর আল্লাহর খলীফা মাহদির আবির্ভাব ঘটবে। তোমরা যখনই তাঁকে দেখবে, তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদি এজন্য তোমাদেরকে বরফের উপর দিয়ে হামাগুড়ি খেয়ে যেতে হয়, তবুও যাবে। সে হবে আল্লাহর খলীফা মাহদি”।(সুনানে ইবনে মাজা,খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫১০)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন,“কালো পতাকা পূর্ব দিক থেকে আর হলুদ পতাকা পশ্চিম দিক থেকে আগমন করবে। সিরিয়ার কেন্দ্রভূমি তথা দামেস্কে উভয় পক্ষের মোকাবিলা হবে”।(আল ফিতান, নুয়া’ইম ইবনে হাম্মাদ)

উমর বিন মুররাহ আল জামালী (রাঃ) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“নিশ্চই খোরাসান থেকে একদল কালো পতাকাবাহী লোকের আবির্ভাব ঘটবে এবং তাঁদের একদল তাঁদের ঘোড়াগুলো দড়ির সাহায্যে বাইতাল লাহ্যিয়া (গাজা, ফিলিস্তিন) এবং হারাস্তার (দামেস্ক, সিরিয়া) মধ্যবর্তী স্থানে জাইতুন গাছের সাথে বাধবে”।
আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ‘সেখানে কি কোন জাইতুন গাছ আছে’?
তিনি বলেন,
“যদি সেখানে জাইতুন গাছ নাও থাকে তাহলে শীঘ্রই সেখানে জাইতুন গাছ জন্মাবে এবং খোরাসান থেকে কালো পতাকাবাহী দল বের হয়ে আসবে এবং তারা তাঁদের ঘোড়াগুলো এইসব জাইতুন গাছের সঙ্গে বাঁধবে”।(কিতাব আল ফিতানঃ ৮৬১, পৃষ্ঠা ২১৫)
(আগামী পর্বে বিশ্লেষণ থাকবে ইন্সা-আল্লাহ)

চলবে,,,

লেখকঃনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

লেখক গবেষক, শেষ জামানা।

দ্বিতীয় পর্বঃ

https://akhirujjaman.com/archives/108

This Post Has 5 Comments

  1. hm mahmud

    জাযাকাল্লাহ

  2. AndrewWab

    Very valuable message

  3. AndrewWab

    What excellent words

  4. Fluoxibene

    Wonderful, what a webpage it is! This weblog provides helpful information to us, keep it up.

  5. Davidbes

    Hallo, ek wou jou prys ken.

Leave a Reply