You are currently viewing হারাম রিলেশন নিয়ে চমৎকার কিছু কথা।

হারাম রিলেশন নিয়ে চমৎকার কিছু কথা।

সাইদুল ইসলাম সজীব (হাফিজাহুল্লাহ)

কিছুদিন আগে চারদিকের সয়লাব হয়ে যাওয়া হারাম রিলেশন নিয়ে মাইজদী হাউজিং কথা বলছিলাম এলাকার এক প্রিয় ভাই Masud Alam এর সাথে। তখনই চিন্তা করলাম এটা নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখব। দেখুন আমার লিখা আপনারা হয়তো অনেকে বিরোধিতা করবেন।তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি বরাবরই সমাজবিরোধী একজন মানুষ। ফান্ডামেন্টাল ইসলাম মানার চেষ্টা করি। আসুন এবার মূল কথায় আসি।

আমাদের মধ্যে যারা হারাম রিলেশনে জড়িত আছেন। তাদের প্রতি কিছু পরামর্শ। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। খেয়াল রাখবেন আপনি যতদিন হারাম রিলেশনে জড়িত থাকবেন আপনার কোন ইবাদত কবুল হবে না।
.
যেহেতু হারাম রিলেশন কবিরা গুনাহ।বিবাহ ব্যতিত একটা মেয়ের সাথে একটা ছেলের কথা বলা- তাকে দেখা। ফেসবুক বা অন্য কোনো মাধ্যমে তার সাথে চ্যাটিং করা। এসব সবই কবিরা গুনাহ।
.

হারাম রিলেশনে আছেন মানে আপনি গুনাহের মাঝে আছেন।আপনি যদি তাকে অন্তর দিয়ে ভাবেন তাহলে আপনার অন্তর কলুষিত হবে।
.

এমন অবস্থায় আপনার সামনে সমাধানের পথ তিনটা।
.
***আপনি তাকে ভুলে যাবেন তার সাথে সম্পর্কচ্ছিন্ন করবেন? আমি মনে করি না!!একজন মানুষ একজন মানুষকে পছন্দ করতেই পারে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের বাবা-মা ছেলেমেয়েদের পছন্দ প্রাধান্য না দেয় হারাম রিলেশন এর অন্যতম কারণ।

বরং আপনার কাছে তার ছবি থাকলে ডিলেট করে দেন।অনলাইনে অফলাইনে যাতে যোগাযোগ কমানো যায় সেই চেষ্টা করুন।

*** দ্রুত আপনি আপনার আর তার পরিবারকে জানাবেন।পারিবারিক ভাবে বিয়ের ব্যবস্থা করে নিবেন।যদি পরিবার না মেনে নেয় ভিন্ন চিন্তা করুন।যদি দুজন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন।সেটি অবশ্য খারাপ কিছু নয়। তখন আপনার করণীয় কি এবিষয়ে সামনে বলতেছি।

***আমাদের সমাজে যেহেতু পরিবার নিজেই বাধার সৃষ্টি করে বিয়েতে। অনেক সময় ছেলে মেয়ের হারাম সম্পর্ক জেনেও বিয়ের ব্যবস্থা করে না। আবার ১৮/২১ বয়স না হলে বিয়ের ব্যবস্থা করলে সরকারের পক্ষ থেকেও বাধার সৃষ্টি হয়।
.
সেহেতু আপনি যদি বুঝেন পারিবারিক ভাবে বিয়ে করা সম্ভব নয় আর তাকে ছাড়াও আপনার পক্ষে সম্ভব না তেমন অবস্থায় আপনার জন্য সহজ রাস্তা হলো গোপনে দুজন বন্ধুকে সাক্ষি রেখে তাকে বিয়ে করে নেয়া।
.

আমি ব্যক্তিগতভাবে সম্পর্কচ্ছিন্ন করার চেয়ে গোপনে বিয়ে করার পক্ষে।
.
তার কারন হলো মানুষের জীবন হলো ৫০/৬০ বছরের। তার মধ্যে ১৫ বছর পরে বিয়ে সঙ্গী প্রেম এসব আসে জীবনে..! ৩০-৪০ বছর জীবনের অনেক ঝামেলার মধ্য দিয়ে যায়। তখন ক্যারিয়ার- ব্যবসা বানিজ্য এসব নিয়েই বেশি পেরেশানী থাকে। আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষই ৪০ এর পরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বৃদ্ধ হয়ে যায়।দুর্বল হয়ে যায়। আবেগ অনুভতি প্রকাশ কলার জন্য এই বয়স কখনই উত্তম সময় নয়। তাছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে এই বয়স তাদের যৌবনের শেষ।
.

সব মিলে আপনার কাছে রোমান্স করার জন্য সময় থাকে ১৫ বছর। কারন ৩০ এসে যদি বিয়ে করেন তারপরও আপনি কোনো দিন কিশোর কিশোরীর যুবক যুবতির প্রেমের ফিলিংসটা পাবেন না।তখন সংসার করা লাগে তাই করতে হবে।যাকে আমার বাসায় আমি বলি একেবারে ঢেঁড়স। ক্ষুধা লাগছে তাই খাও কোন ফিলিংস নেই।

যুবক বয়স হলো: বয়ঃসন্ধিকাল থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত। মানে ১৫ থেকে ৩০।
.
আমাদের বর্তমানে যে সময়ে আছি তাতে বাবা মা ১৫ বছরে বিয়ে দিবেন তো দুরের কথা ৩০ পার হয়ে গেলেও ছেলের যে বিয়ে দরকার সেটাই প্রয়োজন মনে করেন না।
.

আর অনেক সময় যদি কেউ ১৮/২০ বছরেও লজ্জা ভুলে বিয়ের কথা পরিবারকে বলে তবে খুব নির্লজ্জ ভাবে শুনতে হয় ” এখনও নাক টিপলে দুধ বের হয় আবার বিয়ে করার সখ জাগছে”।জগদীশ আংকেল টম 😡😡বাবা মা।

এই যখন আমাদের সামাজিক বর্তমান অবস্থা তখন যদি আপনি প্রথম অপশনটা গ্রহন করেন মানে রিলেশন থাকলে তা ত্যাগ করে ধৈর্যধারণ করবেন তবে মোটামুটি আপনি নিশ্চিত থাকেন যুবক বয়সে বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা নাই।৩০ পার করেই বিয়ে করতে হবে। ছেলেদের জন্য তখন মোটামুটি মেয়ে পাওয়া গেলেও মেয়েদের জন্য এই বয়সে এসে বিয়ে করা অনেকটা প্রায় অসম্ভব হয় যায়।
.

এখন আসেন আমি কেন তিন নাম্বারটা বেচে নিতে বলি তার ব্যাখ্যায় আসি।
.
কোর’আনে আল্লাহ তা’আলা সুরা নুরের ৩২ নাম্বার আয়াতে বলছেন:
যারা অবিবাহিত তাদের বিয়ে করিয়ে দাও – তারা যদি হয় দারিদ্র তবে আল্লাহ তাদেরকে সচ্ছলতা দান করবেন।
.
যেহেতু বিয়ে করতে গেলে খাওয়াবি কি পড়াবো কি এরকম একটা চিন্তা তৈরি হয় / বিশেষ করে যারা বেকার -চাকরি নাই এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এমন চিন্তা আসবেও। তাছাড়া দরিদ্র পরিবার হলে বাবা মা চিন্তা করবে এই অভাবের সংসারে আরো একজন যুক্ত হলে অভাব বেড়ে যাবে।
.

যেহেতু আমাদের সমাজে বিয়ের জন্য প্রথমেই যে অজুহাতটা আসে বউ খাওয়াবি কি? এই ব্যাপারটা আল্লাহ নিজেই সমাধান দিয়েছেন।
.
রাসুল (স:) বলেন : তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর জন্য ওয়াজিব তার মধ্যে এক ব্যক্তি হলো যে চরিত্র রক্ষার জন্য বিয়ে করে।
.

আপনি যদি দরিদ্র হন আর বিয়ে করতে ভয় পান সে জন্য আল্লাহ আপনাকে বিয়েতে উৎসাহিত দিয়ে সাহায্য করার ঘোষনা দিয়েছেন।
.
এরপরও যদি আপনি বিয়ে না করেন. ভয় পান.. অজুহাত দাড় করান তখন আল্লাহ পরের আয়াতে বলছেন তাহলে রোজা রাখো- যতদিন না আল্লাহ তোমার অবস্থার পরিবর্তন করে( মানে সচ্ছলতা দান করে)
.
এই ব্যাপারটা খেয়াল করুন: আপনাকে রোজার জন্য অপশন দেওয়া হইছে কিন্তু তার জন্য আলাদা কোনো বেনিফিট নাই।
.
অথচ বিয়ে করলে আল্লাহ সাহায্যের ঘোষনা করছেন ।

.এছাড়া উপমহাদেশের বিখ্যাত স্কলার। আব্দুল্লাহ আজম রাহিমাহুল্লাহ। উনার ফতোয়া তো বলেছেন।রাসুল সালালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটা হাদিস উদ্বৃতি দিয়ে। যদি কোন উপযুক্ত ছেলে মেয়ে। ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য বিয়ে করতে চায়। এবং পরিবার যদি অসম্মতি জানায়। তাহলে গোপনে বিয়ে করা বৈধ।

যেহেতু ধৈর্যধারণ করলে আপনার আলাদা কোনো লাভ নাই। বরং যৌবন নষ্ট, আনন্দ নষ্ট। আবেগ অনুভতি নষ্ট। এবং বিশাল রোমান্টিক এক সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন। আর আপনার জন্য দ্বীন পালন করাটাও ঝুকির মাঝেই থাকবে। যে কোনো মুহুর্তে গুনাহ করার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
..
অপরদিকে যে বিয়ে করবেন সে তো রোমান্স মজা মাস্তি আনন্দফুর্তি করতেই পারলো পাশাপাশি এগুলো করার মাধ্যমে তার সওয়াবও হবে।
.
তাহলে অবশ্যই বিয়ে করে নেয়াটাই সবচেয়ে উত্তম।
.
শেষ কিছু কথা বলি যারা বিয়ে করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে :
.
*বোন বিয়ে করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সে ধার্মিক কি না, আর সে আপনার পরিবারের সমমর্যাদার কি না।
-অধার্মিক এবং পরিবারের জন্য লজ্জার হলে এমন বিয়ে মেয়ের বাবা ভেঙ্গে দিতে পারবে। দ্বিতীয়তো হলো ধার্মিক না হলে আপনার নিজের দ্বীন দুনিয়া উভয়ই ধ্বংস হবে।
.
*বিয়ের পরে গুনাহ করার শাস্তি অনেক ভয়ংকর। তাই বিয়ের পরে সমস্তপ্রকার গুনাহ থেকে বেচে থাকুন। রাসুল স: বলেছেন: বিয়ে দ্বীনের অর্ধেক পুর্ন করে। বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে তুমি নিজে জিম্মাদার। তাই সে বাকি অর্ধেকও ভালোভাবে পুর্ন করো।
.
*কিছুদিন পর তালাক দিয়ে দিবো এই নিয়তে বিবাহ বৈধ হবে না।যাকে বিয়ে করছেন পরিবার যদি পরে বাধা হয় তবে রাখতে পারবেন নাকি রবিন্দ্রোনাথের গল্পের নায়কের মতো বাইরে মামাভিতরে মা বলে কেটে পরবেন?।
পুরুষ মানুষ অস্তিত্বহীন হয় না।আপনি বিয়ে করছেন এটা জেনে আপনাকে আপনার পরিবার হত্যা করবে না। যদি পরিবার না মানে নিজের স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করুন( স্ত্রী হিসেবে এটা তার হক।

রাসুলের একজন সাহাবি।বেখেয়ালে একজন মহিলার গোসলের দৃশ্য দেখে ফেলেছে। এই বয়ে উনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। গোপনে যিনা করার চেয়ে। গোপনে বিয়ে করা উত্তম নয় কি???

Leave a Reply