You are currently viewing ক্ষমার এক মহান দৃষ্টান্ত আপগান মুজাহিদিন!

ক্ষমার এক মহান দৃষ্টান্ত আপগান মুজাহিদিন!

আফগান ইসলামপন্থীদের সহনশীলতা, ক্ষমা ও মহানুভবতা দেখে মুগ্ধ না হবার উপায় নেই। বহু ত্যাগের পর, দোর্দণ্ড প্রতাপে বিজয়ী কোন শক্তি শত্রুপক্ষকে এতটা সম্মানের সাথে বুকে স্থান দিবে তা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য। এ যেনো মক্কা বিজয়ের পর অপরাধী মক্কাবাসীদের প্রতি পয়গম্বর মুহাম্মদ ﷺ এর সাধারণ ক্ষমার পুনরাবৃত্তি। ইসলামের শাশ্বত মহানুভবতার প্রতিরূপ।

দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশ জন্মের ৫০ বছর অতিবাহিত হবার পরও আজও এদেশে ৭১এ দু’পক্ষের অবস্থান নিয়ে রাজনীতি চলে। বিজয়ী শক্তি পরাজিত শক্তিকে দেশের হয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে অনিচ্ছুক! স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তির বাইনারি হিসেব বেগবান থাকে যুগ যুগ ধরে। অপরদিকে জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে আফগানিস্তান ইসলামী ইমারত ঘোষণা দিয়েছে,
“যারা পূর্বে কাজ করেছে এবং দখলদারদের সাহায্য করেছে, অথবা এখন যারা কাবুলের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের কাতারে দাঁড়িয়ে আছে, তারা ইসলামী আমিরাতের জন্য উন্মুক্ত এবং তাদের ক্ষমা করা হয়েছে। আমরা আবারো আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি এই দেশ আফগান জনগণের সেবার জন্য।”

এটা শুধু মুখের ঘোষণাই নয়, বাস্তবিক ভাবেই অঙ্গীকার পূরণ করা হচ্ছে। ইমারতের বিরুদ্ধে প্রায় ২৫ বছর যাবত যুদ্ধ করা ইসমাইল খান গতকাল হেরাতে পরাজিত ও বন্দি হবার পর ইমারতের সাথে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন। এরপরও যে পরিমাণ সম্মান ও অতিথিয়তা তিনি পেয়েছেন তা কল্পনাতীত। তাকে শীর্ষ নেতারা সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছেন। বাকি পরাজিত সৈন্যরাও ভুল বুঝতে পারলে যাতায়াতের নগদ অর্থ দিয়ে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাউকে ভারত বা আমেরিকার দালাল বলে প্রতিশোধ নেয়া হচ্ছে না। আর এই ক্ষমা বহু আফগানির হৃদয় জয় করতে বড় ভূমিকা রাখছে।

গতকাল সোহাহিল শাহীন ভারতীয় গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন ৯০% ভূমি ইমারতের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রাজধানী কাবুল ব্যতীত প্রায় সকল বড় শহর ইসলামী সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন কেবল কাবুল নিয়ন্ত্রণের কাউন্টডাউন চলছে। ইমারত চায় আলোচনা মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে রাজধানী অধিকার করতে। একটি এক্সক্লুসিভ গভার্নমেন্ট গড়ে তুলতে। ঘানি সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে প্রতিরোধের মধ্যে দিয়ে অচীরেই রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিতে বাধ্য হবে হয়তো।

হেকমতিয়ারসহ অনেকেই ইমারতের সাথে যোগ দিবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, আসলেই ইউনাইটেড শক্তির বড় প্রয়োজন তাহলে শান্তিপূর্ণ আফগান গঠনের পথ মসৃণ হবে। ইমারতের বিরুদ্ধে পশতুন জাতীয়তাবাদের যে তত্ত্ব আওড়ানো হচ্ছিল তাও ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তাজিক, উজবেক এমনি হাজারাও ইমারতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন। সর্বোপরি একটি ঐক্যবদ্ধ আফগান গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত বলা চলে। ইমারত বিবৃতিতে পরিষ্কার জানিয়েছে, “আমাদের জনগণ ও দেশের সেবার প্রয়োজন, আফগানিস্তান সকলের অভিন্ন বাড়ি, আমরা সবাই মিলে এ দেশটিকে নির্মাণ করবো ও অন্যদের সামনে তুলে ধরবো।”

দীর্ঘ চল্লিশ বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ও ইসলামের শাশ্বত বিধান বাস্তবায়িত হোক। বিশ্ব দেখুক ইসলামী শাসনের সৌন্দর্য। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু থেকে শুরু করে প্রতিটি জীব তার অধিকার ফিরে পাক, বিশ্ব মানবতাপাক আলোর দিশা।

Monir Ahmed Monir

Leave a Reply