You are currently viewing কাবা ঘর ধ্বংস; কিয়ামতের আলামত।

কাবা ঘর ধ্বংস; কিয়ামতের আলামত।

ইন্নাল হামদুলিল্লাহ, ওয়াস স্বালাতু ওয়াস সালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ, ওয়া ‘আলা ‘আলিহি ওয়া স্বাহবিহি আজমাঈন, আম্মা বা’আদ।

কা’বা, যাকে বাইতুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর ঘর বলা হয়, যেটি হলো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘর। এটি সাধারণ কোনো ঘর নয়। এটি সেই ঘর যার সম্পর্কে কোরআন-হাদীসে অসংখ্যবার বলা হয়েছে। এই ঘরকে পছন্দ করে না এমন কোনো মুসলিম পাওয়া যাবে না। মুসলিম তার টাকা-পয়সা, জায়গা-জমি সম্পদ ইত্যাদি কুরবান করে দেয় কেবলমাত্র এই ঘরের সামনে একটা রাকাত নামাজ পড়ার জন্যে, হাতে হাত রেখে দুআ করার জন্যে, এটিকে চুম্বন করার জন্যে। এই ঘর সর্বপ্রথম নির্মাণ করেছিলেন আমাদের আদি পিতা আদম (আলাইহিমুস সালাম)। এরপর ধারাবাহিক ইব্রাহীম (আলাইহিমুস সালাম) থেকে আমাদের শেষ নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিভিন্নভাবে নির্ণামনাধিক কাজ করেছেন। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটিতে বসিয়েছেন জান্নাতী পাথর হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর)। লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ে লালন করে এই কা’বা। কারণ এই ঘর সরাসরি সাত আসমান উপরে আরেকটি কা’বার সাথে সংযুক্ত যাকে বলা হয় বাইতুল মা’মুর, যেখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ফেরেশতাগণ তাওয়াফ করে।

কিন্তু যদি কখনো বলা হয়, এই বাইতুল্লাহ, কা’বাকে ভেঙ্গে ফেলবে, তখন আপনার কেমন লাগবে? আপনার হৃদয়, মস্তিষ্ক কখনো সেটা মানবে? কখনই মানবে না। কারণ ইসলামের ইতিহাসে জানা যায় যে যারাই এর ক্ষতি করতে এসেছিল তারা সবাই ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, এই কা’বাকে ভাঙ্গা হবে। কিন্তু সেটা কিভাবে?

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “আবিসিনিয়ার এক লোক কা’বা ঘরকে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ করবে; তার উভয় পায়ের নলা ছোট ছোট হবে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১৯৭)

আরেক বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “যুল সুওয়াইক্বাতাঈন (ذوالسويقتين) নামক এক হাবশী ব্যক্তি কা’বা ঘর ধ্বংস করবে।” (মুসনাদে আহমাদ)

আবিসিনিয়ার বর্তমান নাম ইথিওপিয়া (🇪🇹), যেটি বর্তমানে আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে অবস্থিত। এই আবিসিনিয়া নিয়ে অনেক সোনালী ইতিহাস আছে। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রাযিঃ) এর জন্মভূমি ছিল আবিসিনিয়া। অনেক সাহাবার (রাদিআল্লাহু আনহুমা) ঘটনা আছে।

এটা হওয়ার আগে ঈমাম মাহ’দী (আলাইহিস সালাম) আসবেন, এর সাত/নয় বছর পর দা”জ্জা”ল আসবে, তারপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) এসে দা”জ্জা”লকে হত্যা করে সারা বিশ্বে খিলাফাত কায়েম করবেন।

কিন্তু ব্যাপারটা সেটা নয়। কথা হলো, আমরা জানি আল্লাহ তাআলা তার ঘরকে সবসময় সুরক্ষায় রাখলে এখন কেনো বিচূর্ণ হতে দিবেন। মূল কারণ তো মহান আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। তবে বিজ্ঞ হক্কানী ওলামামাশায়েখগণ কিছু কারণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যেমন:

মুসলিমদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলা কা’বা ঘরকে ধ্বংস করবেন। মুসলিম তা নিজ চোখে দেখতে পাবে কিন্তু কিছুই করতে পারবে না। তখন অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাবে যে আদৌ আল্লাহ তাআলা আছেন কিনা যাকে এতদিন আমরা আমাদের রব্ব হিসেবে মেনেছি। এই সুযোগ পেয়ে নাস্তিকরা মুসলিমদের বিভিন্ন কথা বলে তাদের ঈমানহারা করবে, যেহেতু হাদীসে বর্ণিত আছে কিয়ামতের আগে ঈমান ধরে রাখা হাতে আগুন রাখার চেয়েও কঠিন হবে।

আরেকটি কারণ হলো, ঈসা ইবনে মারিয়াম (আলাইহিস সালাম) এর মৃত্যুর পর মানুষ এত পরিমাণে জাহেল হবে যে তারা নামাজ, রোজা, যাকাত, হজ্জ সহ প্রায় সব রকম ইবাদত করা ছেড়ে দিবে, এমনকি মুখে “আল্লাহ” বলাও তাদের জন্য কঠিন হবে। তখন বাইতুল্লাহর দিকে মুখ ফিরিয়ে ইবাদত করার মতো কেউ থাকবে না। আর এই সমস্ত কারণেই হয়তো আল্লাহ তাআলা তার ঘর ধ্বংস করে দিবেন।

আল্লাহু আজ্জাওয়াযাল যেনো আমাদের প্রত্যেককে মৃত্যুর আগে তার ঘরে যাওয়ার তৌফিক দান করেন এবং ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করেন।

আমিন।

Leave a Reply