জাহাজের কবরস্থান বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।
১৮১৩ সালে আমেরিকার তৃতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট “এরন বার(Aaron Burr)” এর কন্যা “থিউডোসিয়া(Theodosia)” (দক্ষিন কেরোলিনা রাজ্যের গভর্নর জোসেফ এস্টোনের স্ত্রী, খুবই বুদ্ধিমতী এবং সুন্দরী কন্যা হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল) বারমুডার ওই এলাকায় গায়েব হয়েছে। থিউডোসিয়া তার পিতার সাক্ষাতের জন্য তখনকার সর্বাধুনিক জাহাজ পেট্রিয়াটে করে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পেট্রিয়াটের ক্যাপ্টেন তখনকার সুদক্ষ নাবিক হিসেবে আমেরিকায় প্রসিদ্ধ ছিল। সাথে তার ব্যক্তিগত ডাক্তার এবং আরো কিছু ঘনিষ্ঠজনও ছিল। কিন্তু তারা কখনোই নিউইয়র্কে পৌছতে পারেনি। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে “এরন বার” তার কন্যাকে খুজে পাওয়ার জন্য তখন সাধ্যমত অনেক চেষ্টা করেছিল।
কিন্তু না পাওয়া গেছে কন্যার খবর, না জাহাজের কোন হদিস।
১৮১৪ সালে আমেরিকার প্রসিদ্ধ সামুদ্রিক জাহাজ Wasp কেও বারমুডা গিলে ফেলেছে। জাহাজের ক্যাপ্টেন কোন সাধারন মানের ক্যাপ্টেন ছিলনা; মার্কিন জনসাধারণের কাছে নায়ক হিসেবে পরিচিত “জনষ্টন ব্লেকলে”।সে ব্রিটিশ শক্তিশালী সামুদ্রিক জাহাজ “Reindeer” কে স্বীয় দক্ষতা দিয়ে মাত্র ২৭ মিনিটেই পরাজিত করেছিল। এরপর আর কেউ জানতে পারেনি যে- ব্লেকলে তার ষ্টাফ এবং জাহাজ নিয়ে কোন জগতে গিয়ে পৌছেছে। না মার্কিন সরকার, না মার্কিন সামুদ্রিক গবেষক টিম। অথচ তখনকার মার্কিন সামুদ্রিক গবেষক টিম পানির গভীর পর্যন্ত এত ভাল করে চিনত, যেমননাকি পাড়ার অলি-গলিকে মানুষ চেনে। কিন্তু অত্যাধিক খোঁজাখুঁজির পরও কোনই নাম-নিশানা কি তারা পায়নি?!! তাহলে কি বারমুডার ট্রাইএংগেল তাদের গিলে ফেলেছে? নাকি ব্লেকলের অত্যাধিক যোগ্যতা দেখে “গোপন শক্তি” তাকে নিজের জন্য বেছে নিয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) সময় মার্চ ১৯১৮ তে মার্কিন সামুদ্রিক জাহাজ সাইক্লোপস(USS Cyclops) ওই এলাকায় গায়েব হয়েছে। যাতে যুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহারের জন্য সাড়ে চৌদ্দহাজার টন মাল মজুদ ছিল। তাছাড়া তিনশত কর্মীও তাতে কর্মরত ছিল। এরও কোন নাম-নিশানা পাওয়া যায়নি।
জশোয়াস্লোকাম(Joshua Slocum) এমন এক ক্যাপ্টেন, শুধু মার্কিন ইতিহাসেই নয়; সামুদ্রিক বিষয়ে সে সারাবিশ্বজুড়ে সুনাম অর্জন করেছিল। বাল্যকাল থেকেই পানির ঢেউয়ের সাথে খেলে বেড়ে ওঠা এক যুবক। সেই সর্বপ্রথম সমুদ্র পথে সারাবিশ্ব ভ্রমণ করেছিল। সর্বদা সামুদ্রিক ঝড় আর তুফান মোকাবেলা করাই যার অভ্যাস ছিল। ১৯০৯ সালে Spray নামক নিজস্ব জাহাজে করে রওয়ানা হয়েছিল। অতঃপর বারমুডার ওই ভয়ানক এলাকায় সে তার জাহাজসহ চিরদিনের জন্য গায়েব হয়ে যায়। গায়েব হয়ে যাওয়া জাহাজের তালিকায় নাম যোগ হওয়া ছাড়া আর কোন হদিস পাওয়া যায়নি।
চলবে ইনশাআল্লাহ,,,
লেখক—সাইদুল ইসলাম