You are currently viewing এই অবাধ্যতার শেষ কোথায়।সাইদুল ইসলাম সজীব।

এই অবাধ্যতার শেষ কোথায়।সাইদুল ইসলাম সজীব।

এতো অবাধ্যতা,এতো স্বেচ্ছাচারিতা এতো জুলুম হওয়ার কারণ কি?, বসে বসে এটাই ভাবতেছি!!

ধর্মীয় বিষয়গুলো আমাদের মাঝে জাস্ট এতো ঠুনকো বিষয় হয়ে গেছে, কল্পনা করা যায়না!প্রতিটি পদক্ষেপে মানুষ এখন ধর্মের বাহিরে গিয়ে,সামাজিকতাকে প্রাধান্য দিচ্ছে।বিষয়টি কি খেয়াল করেছেন?সামাজিকতা এখন এমন পর্যায়ে চলে গেছে,রীতিমতো ধর্মকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।এখন তো বলা হয় না যে ধর্ম কি বলবে? বরং বলা হয় সমাজ কি বলবে।বিষয়টি কতটা অস্বাভাবিক!কিন্তু আপনার কাছে হয়তো স্বাভাবিক।ছেড়ে দিতে দিতে আপনার অবস্থা এমন হয়েছ যে ধর্মটাকে আপনার কাছে কোন বিষয়ই মনে হয় না।আমাদের মাপকাঠি হয়েছে এখন এমন।অধিকাংশ লোক যে দিকে আমি ও যাবো সেদিকে।অথচ জাহান্নামীদের সংখ্যা ও কিন্তু বেশি হবে।

নবী (ﷺ) বলেছেন,
আমি তোমাদেরকে জান্নাতীদের সম্পর্কে অবহিত করব না কি? (তারা হল) প্রত্যেক দুর্বল ব্যক্তি এবং এমন ব্যক্তি যাকে দুর্বল মনে করা হয়। সে যদি আল্লাহর নামে কসম খায়, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পুরা করে দেন। আমি তোমাদেরকে জাহান্নামীদের সম্পর্কে অবহিত করব না কি? (তারা হল) প্রত্যেক রূঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় দাম্ভিক ব্যক্তি।” (বুখারী, মুসলিম)

আপনি বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করুন!অধিকাংশ মানুষ এখন নাফরমানীতে ব্যস্ত সময় পার করছে।জান্নাত জাহান্নাম তাদের চিন্তা চেতনা থেকে হারিয়ে গেছে সেই কবে!তাদের জীবন দ্বারা দেখে মনে হয় তাদের বুঝি শেষ নেই!কিন্তু অচিরেই মৃত্যুর শিকল তাদের ঘায়েল করে নেয়।

 

অবাধ্যতার এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছে গেছি আমরা। চারপাশে একটু খেয়াল করে দেখুন না।প্রতিটি কাজে সীমালংঘনকারিতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে মানুষ।উঠতে, বসতে,চলতে ফিরতে,আচার, অনুষ্ঠানে,সব যায়গা অবাধ্যতা যেন ডাল বাত হয়ে গেছে।

সেদিন একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজকে ধিক্কার দিচ্ছি। আপসোস করে পাসের এক ভাইকে বললাম। আহ কেন এলাম,মেয়েদের পোষাক সাজসজ্জা দেখে মনে হয়েছে,যদি এ দৃশ্য দেখার আগে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলতাম।পাশের ভদ্রলোক আমার দিকে এমন ভাবে চোখ তুলে তাকিয়ে আছে। মনে হয় এইমাত্র আমি ভিন্ন কোন গ্রহ থেকে এসেছি, আর উনি আমাকে দেখছেন।টিটকারির সুরে বললেন আরে মসাই, আর কখনো মনে হয় বিয়ের অনুষ্ঠানে আসেননি।এগুলো এখন স্বাভাবিক ঘটনা।এতো বিচলিত হওয়ার কি আছে?

হ্যাঁ মুল কথা এখানেই! অস্বাভাবিক ঘটনাগুলো এখন স্বাভাবিক, আর স্বাভাবিক ঘটনাগুলো এখন অস্বাভাবিক হয়ে গেছে।যা স্পষ্ট কেয়ামতের আলামত ও বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করে।মানুষ এখন গুনাহ কে গুনাহ মনে করে না।গুনাহ তো করে এবং তা প্রকাশ্য করে এবং তাকে হালাল মনে করে।রাসুল সাঃ বলেন কেয়ামতের আগে মানুষ গুনাহকে হালাল বানিয়ে ফেলবে।

আরেহ এটা কোনো গুনাহ হলো?এ বয়সে সবাই একটু আকটু করেই!আরে দূর সবাই করছে আমি করলে কি?আরে ভাই সমাজে এখন এসব নেই আপনি বাড়াবাড়ি করছেন!এখন যুগ পালটে গেছে মডারেশন না করলে,দিনের খেদমত করা যায়?ইত্যাদি ইত্যাদি।

আরেক শ্রেণী আছে,গুনাহ কন্টিনিউ করেই যাচ্ছে এ শ্রেণীটা মোটামুটি ইসলাম মানে!কিন্তু গুনাহ বন্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপট না বন্ধ করে,দ্বীনকে অদিক গুরুত্ব না দিয়ে।নিজের ক্যারিয়ার ডেভলপ, ডেভেলপ, করতে করতে দ্বীন টা শেষ পর্যন্ত তার জোল খোলাশা হয়ে যায়।

এদের শেষ গন্তব্য কোথায় তা সে নিজে ও জানেনা।এক গুনাহ বারবার করতে করতে। অন্তর এমন শক্ত হয়।পরবর্তীতে সে গুনাহ কে আর গুনাই মনে হয় না।নিজের সাথে মিলিয়ে দেখুন!!বেশি ধুর যেতে হবে না।এরা শেষ না পারে চোখের হেফাজত করতে, না পারে, হাতের হেফাজত করতে, না পারে যৌবনের হেপাজত করতে।আর শেষটা এদের বস্তা বন্দী ক্যারিয়ার আর উচ্চ প্রত্যাশা শুধুমাত্র তাদের হতাশায় এনে দেয়।

শেষে এসে বুঝতে পারে আমার জীবনটা বুঝি অবাধ্যতায় কেটেছে।ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায় শেষ একটা হাদিস দিয়ে শেষ করি।

রাসূল (সাঃ) বলেন, “দাজ্জাল এমন সময়ে বের হবে যখন মানুষ ধর্মকে কিছুই মনে করবে না এবং ইলম থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে।”

সেই সময়টা এখন সমাজের চারপাশে লক্ষ্য করা যায়।বুকে হাত দিয়ে বলুন আমি কি মিথ্যে বলেছি?

-আহমাদ (৩/৩৬৭-৩৬৮) [সহীহ: আলবানী]

সাইদুল ইসলাম সজীব
০৪/০৩/২০২৩

Leave a Reply