You are currently viewing কাজিন ফিতনা ও করনীয়।সাইদুল ইসলাম সজীব

কাজিন ফিতনা ও করনীয়।সাইদুল ইসলাম সজীব

আমার কাছে একটা বিষয় খুব বেশি অস্বাভাবিক এবং খারাপ লাগে।আমাদের অধিকাংশ পরিবার গুলোতে চাচাতো ভাই,চাচাতো বোন, সম্পর্ক গুলোকে ভাই সম্পর্ক সাথে গুলিয়ে ফেলা।আপনার চাচাতো ভাই,কিন্তু সে সত্যিকার অর্থে কখনো ভাই হতে পারে না। কারণ সে গায়রে মাহরাম।এ কথাটি আমরা জেনেও জানিনা। আর এ দেশের অধিকাংশ পরিবারের চাচাতো ভাই বোন সম্পর্ক গুলো কতটা অশ্লীল পর্যায়ে তা আশা করি সবারই জানা। ২ একটা ভয়ংকর ঘটনা তো আপনাদের আগেই বলেছি।

সাধারণন নন প্রাকটিচিং ইসলামী পরিবারগুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম।কিন্তু কিছু ইসলামি চেতনায় বিশ্বাসী পরিবার গুলোতে এ জাহিলিয়াতটা খুবই প্রগাঢ়।কাল আমার পরিচিত এক বোনকে দেখলাম,তার কাজিন চাচাতো ভাইয়ের সাথে রিকসায় করে পাশাপাশি বসে চলে যেতে।বিষয়টা আমার কাছে এত বেশি অস্বাভাবিক মনে হয়েছে জাস্ট আমি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। উনার চিন্তা চেতনা যে খারাপ তা না।জাস্ট বিষয়টিকে সাধারণ বিষয় হিসেবে মনে করা।আর অতি সাধারণ বিষয় মনে করা, অস্বাভাবিক বিষয়গুলো স্বাভাবিক হয়ে যাওয়া কেয়ামতের বড়ো আলামত।

উনার মতো হয়তো সবার যুক্তি ও তো আমার বয়সে ছোট, আর ছোট ভাইয়ের মতোই। তো কি হয়েছে?আরে আমার চাচাতো ভাইকে আমি নিজের ভাইয়ের ছেয়ে বেশি জানি,আমার চাচাতো ভাই খুব ভালো,ওকে চোখ বন্দ করে বিশ্বাস করা যায়,ওর সাথে এক সাথে কোচিং প্রাইভেটে যাওয়া যায়,একসাথে রিকশায় উঠা যায়,কাছাকাছি পাশাপাশি গল্প করা যায়, ও তো আমার ভাই তো কি হয়েছে।আপনি সবই জানেন কিন্তু যে বিষয়টি জানেন না তা হলো অন্তরের খবর,আপনার ভাইয়ের মতো মনে করা চাচাতো ভাইটা আপনাকে নিয়ে কি ভাবছে!বন্ধুদের আড্ডায় আপনাকে নিয়ে কি অস্থির মন্তব্য করতেছে,আর জা জানেন না তা হল ইসলামি সারিয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো ইরশাদ করেন – “খবরদার! কোন পুরুষ যেন কোন মেয়েলোকের সাথে একাকী না থাকে। কেননা, যখনই কোন পুরুষ কোন মেয়েলোকের সাথে একাকী হয়, তখনই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায় এবং তাদের পিছনে লাগে।” (তিরমিযী)

 

চাচাতো, খালতো, মামাতো, ফুফাতো বোনকে বিয়ে করা অনুমোদিত। তালতো ভাইবোন বা বেয়াই-বেয়াইনসহ এ চার প্রকার বোনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত্, সামনাসামনি কথা বলাও হারাম। আর ‘দুলহাভাই ভাই’য়ের মতো ও ‘শালি বোনে’র মতো বললেও এ সম্পর্কগুলো দ্বারা দায়িত্ববোধ ও শ্রদ্ধার গুরুত্ব তৈরি হলেও এ সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে পর্দার বিধান শিথিল নয়। আর দেবর হলো হাদিসের ভাষায় ‘সাক্ষাত্ যম’।দেখা যায়, সামাজিক কাজ কর্মে আমরা কিছু মানুষকে আপন ভাবতে শিখি এবং তাদের সঙ্গে বন্ধনে জড়িয়ে যাই। অথচ ঐ সম্পর্কগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে আদৌ আত্মীয়তার সম্পর্ক নয়।

চার দিকে প্রতীয়মান কাজিন ছেলে, সে তার মেয়ে কাজিনের শরীরে অবাদে হাত দেয়।এবং সেটাকে খুব স্বাভাবিক মনে করে। ঠিক তেমনি মেয়েটাও কিছু মনে করেনা, কারণ ভাই – বোনই তো..!
কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে কাজিনের সাথে কাজিনের এই সমাজে কি বিয়ে হয় না?

উত্তরঃ
অবশ্যই হয়। তাহলে কাজিনদের সাথে আপন ভাই বোনের মত উন্মুক্ত চলাফেরা কেন? যেখানে বিপরীত দিক থেকে প্রচন্ড যৌবনের লালসা?সেখানে চরিত্র টিকিয়ে রাখা কতটা নিরাপদ? প্রিয় বাবা-মা আপনারা কি ভাবছেন? স্রেফ কি তারা শুধু ভাই বোন?এতো আত্মবিশ্বাস আপনার কোথা থেকে আসে!!

সুতরাং মা, বোনদের বলবো, কাজিন নামক এই নন-মাহরাম থেকে নিজেকে দূরে রাখুন । আপনি হয়তো কাজিনকে ভাই-ই ভাবেন, কিন্তু সে যে আপনাকে নিয়ে ফ্যান্টাসিতে ভোগেনা তার নিশ্চয়তা কি?
নিজের সর্বোচ্চ হেফাজত করুন ।

মনে রাখবেন কাজিন আপনার ভাই,কিন্তু সে আপনাকে বিয়ে করতে পারে।আর আপন ভাই কখনো বোনকে বিয়ে করতে পারে না। অতএব নিজের মনগড়া যুক্তি দিয়ে এসবপাতানো সম্পর্ক গুলো হারাম, হারাম,হারাম।

সাইদুল ইসলাম সজীব
১৫/০২/২০২৩

Leave a Reply