You are currently viewing মানুষের সাথে থাকা  ক্বারিন জ্বীন কি মানুষের মনের কথা বলতে পারে!

মানুষের সাথে থাকা ক্বারিন জ্বীন কি মানুষের মনের কথা বলতে পারে!

মানুষের মনের কথা শুধুমাত্র এক আল্লাহ চাড়া কেউ জানেন না। তবে মানুষের ইন্দ্রিয় দিয়ে ক্বারিন জ্বীন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। যেমনঃ আপনি কি ফোনে ম্যাসেজ পাঠালেন তা ক্বারিন জ্বীন পড়তে পারে আপনার চোখ দিয়ে; আপনি যা দেখছেন টিভিতে তা ক্বারিন জ্বীন আপনার চোখ দিয়ে দেখতে পারে; আপনি আয়নায় নিজেকে দেখলে ক্বারিন জ্বীনও আপনাকে দেখতে পারে; আপনি যা শুনছেন তা ক্বারিন জ্বীনও শুনতে পারে এ কারনে আপনি যা দেখছেন ও শুনছেন সে অনুযায়ী সে কুমন্ত্রণা দিতে পারে তবে আপনি কি সিদ্ধান্ত নেবেন তা সে জানে না।এটি শুধুমাত্র গায়েবের মালিক ভাল জানেন।

আমরা মিডিয়ায় “একচক্ষু বিশিষ্ট” বা “all seeing eye” লোগো দেখতে পাই যায় কারন এই লোগো আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেয় ক্বারিন জ্বীনও আপনাকে দেখছে আপনারই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে!মানুষের শরীরের বেশিরভাগ অণু ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্ষেত্রের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির সাথে দুর্বলভাবে যোগাযোগ করে। বিভিন্ন কারণে মানুষের দেহের জীবন্ত কোষে বৈদ্যুতিক, চৌম্বকীয় বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি উৎপন্ন হতে পারে যা Bioelectromagnetism (bioelectricity) নামে পরিচিত।

বর্তমানের ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন টেলিভিশন, ল্যাপটপ, মোবাইল, ইন্টারনেট ইত্যাদির ব্যবহারে Tissue heating, মস্তিষ্কের electrical activity এর উপর প্রভাব বিস্তার ত্রবং radiofrequency ও Ionizing radiation এর কারনে ক্যানসার হয়। তাছাড়া আধুনিক ইলেকট্রনিক্স ও ডিজিটাল প্রযুক্তি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নানা ধরনের রেডিয়েশন আছে যেমনঃ রেডিও ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ, ইনফ্রারেড, এক্সরে, গামা রে, ত্রবং Radiofrequency তরঙ্গ যা electromagnetic ক্ষেত্র তৈরি করে- যার মাধ্যমে জ্বীন-শয়তান মানুষের ডিজিটাল জীবনকে বেশি প্রভাবিত করে কারন জ্বীন-শয়তান ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ ব্যবহার করে যোগাযোগ করতে পারে।

মানুষের auric ক্ষেত্রে কম্পন তরঙ্গের সৃষ্টি হয় এমন কাজগুলো বেশি করলে জ্বীন-শয়তানের মানুষের কাছাকাছি আসে, যেমনঃ বাদ্যযন্ত্র। Aura বা জীবের প্লাজমা ক্ষেত্রের (Phantom Field Effect-high-energy electric field) ছবি তুলতে সক্ষম বর্তমানের Kirlian Photography যা জ্বীনেরও ছবি তুলতে পারে।

আমাদের প্রত্যেক মানুষের সাথে আল্লাহ ক্বারিন জিনকে সংযুক্ত করে দিয়েছে।সে আমাদেরকে দেখে আমরা কি করি এবং আমাদেরকে প্রচারণা দিয়ে থাকে।কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে সে জানে না।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কোনো ব্যক্তি (অবশিষ্ট) নেই; যার সঙ্গে তার সহচর (কারিন) জিন (শয়তান সহচর) নিযুক্ত করে দেওয়া হয়নি।

মানুষকে কুমন্ত্রণা দেওয়া কিংবা প্ররোচনা প্রদানকারী জিন শয়তান মানুষের সঙ্গে থাকার বিষয়টি কুরআনুল কারিমেও সুস্পষ্ট। কেয়ামতের দিন মানুষের সঙ্গী এ শয়তান বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

`তার সহচর (শয়তান) বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমি তাকে অবাধ্য হতে প্ররোচিত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল ঘোর বিভ্রান্ত। আল্লাহ বলবেন, তোমরা আমার কাছে বাক-বিতণ্ডা করো না। অবশ্যই আমি আগেই তোমাদের সতর্ক করেছিলাম।’ (সুরা কাফ : আয়াত ২৭-২৮)

আয়াতের বিশ্লেষণে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন- এটাই হলো নিয়োগকৃত শয়তান। হাদিসে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নামাজ পড়ে, তখন সে যেন তার সামনে দিয়ে কাউকে যেতে না দেয়। যদি সে অস্বীকার করে (বাধা মানতে না চায়) তবে সে যেন তার সাথে লড়াই করে। কেননা তার সাথে তার সঙ্গী শয়তান রয়েছে।’ (মুসলিম)

কারিন জিন বা সঙ্গী জিন-শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ঃ

কারিন জিন বা সঙ্গী জিন-শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সকাল-সন্ধ্যায় সব কাজে নিয়মিত আমল ও দোয়া করার কথা বলেছেন। এসব দোয়া ও আমলই কারিন জিনের কুমন্ত্রণা বা প্ররোচনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট।

এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সময়ের আলোকে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে তাঁর উম্মতকে সকাল-সন্ধ্যার জিকির-দোয়াসহ দৈনন্দিন জীবনে যেসব দোয়া, জিকির ও আমল জরুরি তা শিক্ষা দিয়েছেন। আর তাহলো-

‘টয়লেটে প্রবেশ ও টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর দোয়া, বাড়ি থেকে বের হওয়া ও বাড়িতে প্রবেশের দোয়অ, কাপড় পরা ও কাপড় পরিবর্তন করার দোয়া, খাবার খাওয়ার শুরুতে ও শেষের দোয়া, এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশায়ও রয়েছে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও বদনজর থেকে হেফাজতের দোয়া। আর এসব দোয়ার আমলেই মুমিন মুসলমান কারিন জিন তথা শয়তান সঙ্গী থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।

Leave a Reply