You are currently viewing কি ঘটবে  হিন্দুস্থানের সেই বরকত পূর্ণ গাজওয়াতুল হিন্দের যুদ্ধে।

কি ঘটবে হিন্দুস্থানের সেই বরকত পূর্ণ গাজওয়াতুল হিন্দের যুদ্ধে।

‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ বা ইমাম মাহদী এর আত্মপ্রকাশের পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশের মধ‍্যে হিন্দু/মুশরিক এবং মুসলিমদের মধ‍্যে যে ভয়াবহ যুদ্ধটি সংগঠিত হবে তার নাম কি? বর্তমানে এই প্রশ্নটি যদি কোনো মুসলিমকে জিজ্ঞেস করা হয় তার ঠিকঠাক উত্তর পাওয়া তো অনেক পরের বিষয়, এদের বিরাট একটা অংশ এই শব্দ দু’টির সাথে পরিচিত কি না তা নিয়েই যথেষ্ট সন্দেহ আছে! কিন্তু এই মুসলিমদের বিরুদ্ধে-ই যারা যুদ্ধে নামবে, তারা এইসব শুধু জানেই না, অনেক অ‍্যানালাইস এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ করে, হিসেব-নিকেষ করে পূর্ণ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে! তারা ঠিকই জানে, ভবিষ‍্যতে পৃথিবীতে এমন কিছু একটা হবে এবং সেটা নিশ্চিত!

কিন্তু মুসলিমরা ? এরা এখনো বিভোর নিজেদের বিলাসিতা, আরাম-আয়েশ, স্বার্থসিদ্ধি ইত‍্যাদি নিয়ে! তার উপরে এন্টারটেইনমেন্ট-এর মায়াবী দুনিয়ায় অমুসলিমরা মুসলিমদেরকে এমনভাবে বিভোর বা মোহগ্রস্থ করে রেখেছে যে সেখান থেকে বের হয়ে আসাটা কারো কারো জন‍্য অনেক কঠিন একটি ব‍্যাপার! বিলাসিতা, নগ্নতা, অশ্লীলতা এবং খেলাধূলার মত আন্তর্জাতিক মানের জুয়া দিয়ে এই মুসলিমদের ব্রেন-ওয়াশটা এমনভাবে করে নিচ্ছে যে, এসবের গভীরে গিয়ে না ভাবলে এর রহস‍্য উদঘাটন করা সম্ভব-ই না! নো, নেভার! এই লেখার বিষয় যখন সেটা না, তাই আপাতত: সেদিকে আর না যাই। বুদ্ধিমানদের জন‍্য ইশারাই যথেষ্ট!

নবী করীম (স.) ভবিষ‍্যত পৃথিবীকে নিয়ে যতগুলো ভবিষ‍্যতবাণী করে গিয়েছেন তার অধিকাংশই আজ প্রমাণিত। আর যে কয়েকটা বাকি আছে সেগুলোও খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। সেরকমই একটি ভবিষ‍্যতবাণী হল- ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’! ‘গাজওয়া’ অর্থ হল ‘যুদ্ধ’; আর ‘হিন্দ’ মানে হল ‘হিন্দুস্থান’ বা ভারতীয় উপমহাদেশ। অর্থ‍‍্যাৎ, পুরোটা এক করলে দাঁড়ায় ‘হিন্দুস্থানের যুদ্ধ’! আরো পরিস্কার করে বললে- যে যুদ্ধটা হবে পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের মধ‍্যে। হাদীসে বর্ণিত ‘হিন্দ/হিন্দুস্থান’ হল অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশ যা গ্রেটার খোরাসানের কিছু অংশ, পাকিস্থান, ভারত, বাংলাদেশ, বার্মা ও শ্রীলঙ্কা নিয়ে গঠিত। আর এই যুদ্ধটা হবে ভারতীয় উপমহাদেশের অমুসলিম-হিন্দু-মুশরিক এবং একদল খাঁটি মুসলিমদের মধ‍্যে!

এ নিয়ে নবী করীম (স.)-এর বেশ কয়েকটি হাদীস আছে। তারমধ‍্যে দু’টি হাদীস হল- হযরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হযরত মুহাম্মদ (সা.) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন। আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের কারণে)। এবং যে মুসলিমেরা (যুদ্ধ শেষে বেঁচে যাবে বা) ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ.) কে শাম দেশে (বর্তমান সিরিয়ায়) গিয়ে পাবে। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন- আমি যদি সেই গাজওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে (এই যুদ্ধে) অংশগ্রহণ করতাম । যখন (সেই যুদ্ধে) আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরে আসতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা(আ.) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সা.), সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আ.)-এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম; আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সা.) এর একজন সাহাবী।বর্ণনাকারী বলেন যে (এ কথা শুনে) হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মুচকি হাসলেন এবং বললেন- ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন।(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)

আরেকটি হাদীস হল- হযরত সাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ‍্যে এমন দু’টি দল আছে আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে; আরেকটি দল তারা, যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে ।
(সুনানে নাসায়ী; খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা- ৪২)

এই হাদীসগুলো দিয়ে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, এই যুদ্ধটা নির্ধারিত! এটা অবশ‍্যই হবে। অনেকেই বলে থাকেন যে, মুহাম্মাদ বিন কাসিম-এর সিন্ধু (ভারত) অভিযানের মধ‍্য দিয়েই ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ হয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ মনে করে থাকেন যে, সুলতান মাহমুদ গজনভী’র মাধ‍্যমেও নাকি ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ হয়ে গেছে! এক্ষেত্রে তারা চরম এক ভ্রান্তির মধ‍্যে অাছেন। বিশ্বের অনেক বড়-বড় স্কলার, ইসলামি বিশেষজ্ঞ এবং আলেমদের মতও এটাই। এখানে বিষয়টার অত ব‍্যাখ‍্যা-বিশ্লেষণে না-গিয়ে শুধু দু’টো প্রশ্নের উত্তর বের করার চেষ্টা করলেই অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এক, হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ হবে সমগ্র ভারত উপমহাদেশের মধ‍্যে। কিন্তু মুহাম্মাদ বিন কাসিম বা সুলতান মাহমুদ গজনভী’র অভিযান সেভাবে হয়নি! সবচেয়ে বড় কথা, তাদের লড়াইটাও শুধু হিন্দু-মুশরিকদের মধ‍্য হয়নি। ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে দেখলে প্রমাণ মিলবে!

দুই, ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ হয়ে যাবার পরে সমগ্র ভারত থেকে ‘হিন্দুত্ববাদ’ মিটে যাবার কথা। কিন্তু তাদের অভিযানের পর সেটাও হয়নি।

এভাবে বললে আরো অনেক কিছুই বলা যায়। তাই ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ যে সামনে হবে এটা নিয়ে সন্দেহ নাই! আর এসবের কারণগুলোও বর্তমানে খুব স্পষ্ট। নবী করীম (সা:)- এর কথা অনুযায়ী খোরাসান (বর্তমান আফগানিস্থান) থেকে কালিমাখচিত কালোপতাকাধারীদের উত্থান এবং তাদের কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া; পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ভারতের কাশ্মীর সীমান্তে ৭ লক্ষ সেনা মোতায়েন, পাক-ভারত-বাংলাদেশের হকপন্থী ইসলামী দলগুলো আলোচনায় উঠে আসা, পানি নিয়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুসলিমদের নির্যাতন নিয়ে ভারতের ভেতরে মুসলিমদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, সেভেন সিস্টারস তথা ভারতের ৭ টি অঙ্গরাজ্যের স্বাধীনতার দাবি নিয়ে আন্দোলন, হিন্দুত্ববাদের উগ্রতা, মায়ানমারের গণহত‍্যা, মুসলিমদের বিনা অপরাধে নির্যাতন, ভারতে সমকামিতার বৈধতা, পরকিয়ার ব‍ৈধতা, মসজিদে নামায পড়া এবং মসজিদের জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, মিথ‍্যাবাদিদের দৌরাত্ম, বিচারহীনতা, অন‍্যায়ভাবে জেল-জুলুম ইত‍্যাদি অনেক কারণগুলোই ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’-এর প্রতি ইঙ্গিত করছে। বিশ্বের অনেক বড় বড় বিশেষজ্ঞ, আলেম এবং স্কলারদের ধারণা আগামী ২/৩ বছরের মধ‍্যেই এই ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ সংগঠিত হতে পারে (বাকিটা আল্লাহ আলাম)। কারণ, এটা কখন হবে তা একমাত্র আল্লাহ-ই ভাল জানেন। কিন্তু এটা হবার পূর্বে যে সিনট্রমগুলো দেখা যাবে তার অধিকাংশই এখন প্রকাশিত। তাই এসবের উপর ভিত্তি করে স্কলাররা যে ধারণা করেছে তা একেবারেই অযৌক্তিক বা উড়িয়ে দেবার মত নয়; এবং তাদের ধারণা এটা যে, এটা এমন-ই এক কঠিন যুদ্ধ হবে, তারা যা ধারণা করছেন, তা তাদের ধারণারও বাইরে! এতটাই ভয়াবহ হবে সে যুদ্ধ! যা নবী করীম (স.)-এর নবুওয়ের পর থেকে নিয়ে আজ অবধি পৃথিবীতে এত ভয়াবহ যুদ্ধ আর সংগঠিত হয়নি! বাদ যাবে না বাংলাদেশও!

  • তাই এ যুদ্ধটা নির্ধারিত। এবং এ যুদ্ধে মুসলমানদের জয় সুনিশ্চিত!
  • কারণ, এ যুদ্ধে আল্লাহ্‌ মুমিনদেরকে সাহায‍্য করবেন!
  • হাদীসদ্বারা স্পষ্ট যে, এ যুদ্ধে যারা শহীদ হবেন এবং যারা বিজয়ী হয়ে ফিরবেন আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন।
  • এ যুদ্ধে যারা বিজয়ী হবেন তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ.) অর্থ‍্যাৎ হযরত ঈসা (আ.) কে শাম দেশে (বর্তমান সিরিয়া) গিয়ে পাবেন। তখন তিনি পৃথিবীতেই থাকবেন।
  • যারা হযরত ঈসা (আ.)-এর সঙ্গী হবেন আল্লাহ তাঁদেরকেও জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দেবেন।
  • আজকে যারা ক্ষমতার জোরে যখন যা খুশি তাই করে বেড়াচ্ছেন, যখন যাকে ইচ্ছে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, হত‍্যা করছে, অন‍্যায়-অত‍্যাচার করে নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখছে- তাদের অবস্থাটা হবে খুব ভয়াবহ! এতটাই করুণ পরিণতি হবে এদের, যা ধারণারও বাইরে!
  • আর এই ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ শুরু হবে ইমাম মাহদী (আ.)-এর আত্মপ্রকাশের কিছুকাল আগ থেকেই। স্কলারদের মতে যার অনেকগুলো সিনট্রম-ই আজ প্রকাশিত!

আর নামধারী মুসলিম, ধর্মব‍্যবসায়ী, মুখে-মুখে ইসলাম মানা মুসলিম, মুনাফিক ইত‍্যাদি টাইপের লোকগুলোর অবস্থা তখন কি হবে? ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ শুরু হবার পরই এদের আসল চেহারাটা বেরিয়ে আসবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তখন এরা হয় পালিয়ে বেড়াবে, না-হয় হিন্দু-মুশরিকদের সাথে গিয়ে যোগ দেবে!

আল্লাহ ন‍্যায়বিচারক! তাই দুনিয়াতে বোধহয় তাদেরকে এভাবেই লাঞ্চিত, অপদস্ত করবেন! পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই চলছে ব‍্যাপক প্রস্তুতি! আর আমরা…! এভাবে দিন যাবে তো! ?

This Post Has One Comment

  1. Mahbub Hasan

    ভাই দয়া করে ভাই একটা ব্লগ দেন যে- কিভাবে নিজের ঈমানি শক্তি বড়াবো । দয়া করে ভাই যত দিন যাচ্ছে মানে হচ্ছে আমি ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি । ভাই অন্তর টা দেখানোর মত না যে কিভাবে দেখাবো । দয়া করে ভাই একটা ব্লগ চাই । যে কি আমল করলে ঈমানি শক্তি বৃদ্দি হবে । ধন্যবাদ।

Leave a Reply