You are currently viewing দেয়ে আসতেছে মহা ধ্বংসের মালহামা।

দেয়ে আসতেছে মহা ধ্বংসের মালহামা।

“বায়তুল মাকদিস (জেরুজালেমের) সমৃদ্ধি ইয়াসরিব (মদিনার) পতনশীল অবস্থা বয়ে আনবে, ইয়াসরিবের পতনশীল অবস্থার ফলশ্রুতিতে মালহামা (মহাযুদ্ধ) সংঘটিত হবে, মালহামার পথ ধরে কনস্টান্টিনোপলের বিজয় হবে, এবং কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের ফলশ্রুতিতে দাজ্জালের খুরুজ (আবির্ভাব) ঘটবে।”
(সুনান আবু-দাউদ, দারুল কুতুব ইলমিয়া, কিতাবুল মালাহিম, ৪২৯৪)

বর্তমানে আমরা ঠিক মালহামার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, যখন বৈশ্বিক রাজনীতি থেকে শুরু করে কোনো ক্ষেত্রেই ইয়াসরিব বা মদিনা শহরের উল্লেখ করার মতো ভূমিকা বা প্রভাব নেই, অথচ জেরুজালেম বৈশ্বিক রাজনীতির অন্যতম প্রধান চালক।
এরকম আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে শ্রদ্ধেয় শায়খ ইমরান নযর হোসেন ক্রমাগত মুসলিমদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছেন। তাঁর গ্রন্থের বিষয়বস্তু আজকাল আমরা বাস্তব সংবাদ হিসেবে পাঠ করছি। ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, আরব বসন্ত, মধ্যপ্রাচ্য, এবং বিশেষ করে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পর্যালোচনাতে তাঁর বক্তব্য পুরোপুরি সত্যে পরিণত হয়েছে, যা তাঁর আধ্যাত্মিক উচ্চতার পরিচয় বহন করে।
আলোচ্য গ্রন্থে শায়খ ইমরান নযর হোসেনের বেশকিছু বক্তৃতা ও ভাষণের অনুবাদ সংকলিত

হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী যে, এগুলো পাঠকদের জন্য উপকার বয়ে আনবে।

ধেয়ে আসছে মহাধ্বংসের ” মালহামা আটশত কোটি মানুষের পৃথিবীকে মৃত্যুপুরীতে পরিনত করার সেই নিদানের কাল।

মাটির পৃথিবী থেকে মানুষের অস্তিত্ব বিলীনকারী এক মহা বিপর্যয়ের মুখোমুখি আমরা । অতীতে ১৪ কোটি মানুষ নিধনের দুটি বিশ্বযুদ্ধ ,অকাতরে জীবন ও সম্পদ হারানোর মত ভয়ানক ভূমিকম্প,সুনামী,ঝড় , জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার মুখোমুখি হয়েছে মানুষ— কিন্ত মালহামার ধ্বংস অতীতের সব ধ্বংসের মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে । মালহামা পৃথিবীর সকল মানুষকে কয়েকবার হত্যা করার ক্ষমতা সম্পন্ন একটি মহা যুদ্ধের নাম ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দুনিয়ার জীবনে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক , এবং সামাজিক জীবনে সুখে শান্তিতে বসবাস করার জন্য ভারসাম্যপূর্ণ দীনুল হক নবী-রাসূলগনের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন । মানুষ নানা মনগড়া অজুহাতে আল্লাহর দীনে হস্তক্ষেপ করে একে শুধু বিকৃত করেই ক্ষান্ত হয় নাই— ব্যক্তিগত জীবনের কিছু ইবাদত-উপাসনায় দীনকে সীমাবদ্ধ করে সামাজিক সামস্টিক জীবন থেকে একে প্রত্যাখান করেছে । যার পরিনামে সমাজ-সামস্টিক জীবনে অন্যায় ,অবিচার ,যুদ্ধ,হত্যা,রক্তপাত বেড়ে এক চরম ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃস্টি হয়েছে । সমগ্র মানব জাতি স্রস্টার বিধান প্রত্যাখানের অপরাধে আজ চরম অপরাধী ।



অতীতে অন্যান্য নবী-রাসুলগনের উম্মতকে অঞ্চলভেদে আল্লাহ দীনুল হক বিকৃত ও  প্রত্যাখ্যানের অপরাধে শাস্তি দিয়েছেন । এবার সমগ্র মানব জাতি তাদের কৃত অপরাধের কারনে তার  দুই হাতে উপার্জিত  শাস্তি প্রাকৃতিক নিয়মে ভোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে । তাদের তৈরী পারমানবিক বোমার আঘাতে মৃত্যু বরনের ভাগ্যকে সে নিজেই বরন করে নিয়েছে । মালহামা বা এরমাগেডনের যুদ্ধ-- সেই মৃত্যুকে নিশ্চিত করার নিদানের কাল আজ  দরজায় হাজির হয়ে 

গেছে ।

  
বর্তমানে যারা নিজেদের উপার্জিত সম্পদ এবং সময় ব্যয় করে সমাজে ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকল মানুষের  শান্তি, শৃংখলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কাজ--- রাসূলে আকরাম (সাঃ) এর পাঁচ দফার সুননাহ মোতাবেক দিনরাত করে যাচ্ছে---সেই সব মু'মিনদের একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীকে  আল্লাহ  রাব্বুল আলামিন  তার আসীম করুনায় এই মালহামার বিপর্যয় থেকে রক্ষা এবং তাদের চূড়ান্ত  বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ।

বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় আটশত কোটি মানুষ বাস করে—মালহামার প্রেক্ষিতে এর অধিকাংশ মানুষ মৃত্যুবরন করার পর স্বল্প সংখ্যক মানুষ ( হাতে গোনা কয়েক কোটি) ধ্বংসের স্মৃতি নিয়ে পৃথিবীর মৃত্যুপুরীর কংকালকে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকবে । অতীতে হত্যাকান্ড এবং ধ্বংস হয়েছে বিশেষ বিশেষ এলাকা বা দেশে—এবার এ ধ্বংসযজ্ঞ হবে ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে পুরো পৃথিবীব্যাপী । মানুষ তার নিজের দুই হাত দিয়ে এ
নিকটবর্তী ভয়াবহ পরিনাম অর্জন করেছে ।

খৃষ্টানদের বাইবেলে মহাবিশ্বের এ ধ্বংসকে বলা হয়েছে ” এরমাগেডন ” এবং মুসলমানদের হাদীসে বলা হয়েছে ” মালহামা ” । দুটোর অর্থ এবং ভাব বিশ্লেষণ একই রকম—অর্থাৎ মানব জাতিকে ধ্বংসের অভূতপূর্ব ঘটনা । কোরান ও হাদীসে কয়েকটি বড় ঘটনা ঘটার পর পৃথিবী ধ্বংস বা কিয়ামত হওয়ার কথা বলা হয়েছেঃ—
এ গুলো হলোঃ—
১) আখেরী নবীর আবির্ভাব,
২) দাজ্জালের চাকচিক্যময় পশ্চিমা সেকুলার সভ্যতা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে সারা দুনিয়ায় বিস্তারলাভ ,
৩) ইয়াজুজ মাজুজের (নিউক্লিয়ার ওয়ার হেড সজ্জিত) বিশাল বিশাল মরণঘাতি মানবতাহীন সেনাবাহিনী ,
৪) মালহামা বা আরমাগেডন ধ্বংস যজ্ঞ ,এবং
৫) সারা পৃথিবী নিকশ কালো ধোঁয়ায় ৪০ দিন আচ্ছাদিত হয়ে অন্ধকার হয়ে যাওয়ার ঘটনা ।

 
প্রথম তিনটি ইতোমধ্যে ঘটে গেছে---যদিও মানব জাতি  অংগীকারবদ্ধ মু'মিন না হওয়ায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনা অনুধাবন করতে  ব্যর্থ  হয়েছে ।  পরের দু'টি একসংগে ঘটবে অতি নিকটবর্তী সময়ে । মুক্তোর মালার  সুতো ছিঁড়ে যাওয়ার পর এক এক করে  মুক্তোগুলো মেঝেতে  ছিটকে পড়তে থাকে---তেমনিভাবে এসব ঘটনাপ্রবাহের সূত্রপাত হয়েগেছে ,এখন  একের পর এক অনিবার্যভাবে ঘটতে থাকবে । 

মুসা (আঃ) এবং ইসা(আঃ) এর ( স্রস্টা থেকে প্রাপ্ত দীনুল হক বিচ্যূত ) অনুসারী পরকালের জবাবদিহীতা বিহীন , ইহুদী-খৃস্টান ধর্ম কেন্দ্রীক চরম ভোগ ও বস্তু বাদী আদর্শকে বিখ্যাত অস্ট্রীয় সাংবাদিক আল্লামা আসাদ দাজ্জাল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন । দাজ্জালের অভাবের বাইরে সারা পৃথিবীতে এক ইন চি মাটিও আর
অবশিষ্ট নাই ।

মহা ধ্বংসের সেই মালহামা যুদ্ধে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র (পারমানবিক বোমার অধিকারী) দেশগুলো যখন শত শত পারমানবিক এবং হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটাবে তখন—সারা পৃথিবীর আকাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছাদিত হয়ে পড়বে এবং বোমার তেজস্ক্রিয়তায় বড় বড় শহরগুলো তাদের অধিবাসীসহ জনমানবশূন্য ধ্বংসপুরী হয়ে যাবে ।

মালহামা যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক ক্ষতি সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন—

” এমন কোন শহর-জনপদ থাকবে না, যে শহরকে তাদের অধিবাসীসহ আমি কেয়ামত দিবসের পূর্বে ( এই মালহামা যুদ্ধের মাধ্যমে) ধ্বংস করবো না— এটা তো আগেই কিতাবে নির্ধারিত হয়ে গেছে।” —-সুরা ইসরা ,আয়াত–৫৮ ।

ইয়াজুজ মাজুজ প্রসংগটি কোরান এবং বাইবেলে আলোচিত হয়েছে । এদের বিশাল সেনাবাহিনী সমুদ্রের তরংগের মত প্রচন্ড শক্তি নিয়ে সমগ্র প্রথিবী চষে বেড়ানোর ( মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান, ইরাক,সিরিয়ায় চষে বেড়ানোর মত)বিষয়ে কোরানে বলা হয়েছে —

” যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মাজুজকে( মানব জাতিকে ধ্বংস করার জন্য) বন্ধন মুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভুমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে।”
——–সুরা আম্বিয়া—৯৬ ।

পারমামবিক বোমা বিস্ফোরনের প্রচন্ড ধোঁয়ায় পৃথিবী আচ্ছন্ন হয়ে মানুষের মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগ করার বিষয়ে সুরা দুখানের ১০ এবং ১১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ—

” অতএব, আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন, যখন প্রচন্ড ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে অন্ধকার হয়ে যাবে। এটা মানব জাতিকে ঘিরে ফেলবে এবং (মৃত্যু) যন্ত্রনার শাস্তিতে নিপতিত কহরবে।”আসন্ন

মানব জাতির ইতিহাসে আসন্ন মালহামা থেকে বেঁচে
থাকার জন্য— আসুন ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকল মানুষের সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের
জন্য আমরা মু’মিন হয়ে নিজে বাঁচি এবং বিশ্ববাসীকে বাঁচাই । এজন্য সবার আগে প্রয়োজন আল্লাহর হুকুমে’র আনুগত্য এবং আখেরী নবীর সুন্নতের (পাঁচ দফা Methodology ) অনুসরণ ।

Leave a Reply