বর্তমানে আরব উপদ্বীপে তেমন কোন নদী-নালা নেই। গাছপালার সংখ্যা খুবই কম। চাষাবাদের উপযোগী ভূমির পরিমাণ অতি নগণ্য। কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে আরব উপদ্বীপের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং তা গাছপালা ও নদী-নালায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَعُودَ أَرْضُ الْعَرَبِ مُرُوجًا وَأَنْهَارًا
‘‘ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা যে পর্যন্ত না আরব উপদ্বীপ গাছপালা ও নদী-নালায় পূর্ণ হবে’’।[1]
হাদীসের প্রকাশ্য বর্ণনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে আরব দেশসমূহে কিয়ামতের পূর্বে পানির অভাব হবেনা। তাতে প্রচুর পরিমাণ নদী প্রবাহিত হবে। ফলে গাছ-পালা ও নানা উদ্ভিদ উৎপন্ন হবে এবং বন-জঙ্গলে ভরে যাবে।
[1] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুয্ যাকাত।
🖋️প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে ফসল হবে না
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُمْطَرَ النَّاسُ مَطَرًا لَا تُكِنُّ مِنْهُ بُيُوتُ
الْمَدَرِ وَلَا تُكِنُّ مِنْهُ إِلَّا بُيُوتُ الشَّعَرِ
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যতদিন না আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এতে মাটির তৈরী ঘরগুলো ভেঙ্গে পড়বে এবং পশমের ঘরগুলো রক্ষা পাবে’’।[1] তিনি আরো বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُمْطَرَ النَّاسُ مَطَرًا عَامًّا وَلَا تَنْبُتَ الْأَرْضُ شَيْئًا
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যেপর্যন্ত না ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। কিন্তু যমিনে কোন ফসলই উৎপন্ন হবেনা’’।[2] স্বাভাবিক নিয়ম হলো বৃষ্টির মাধ্যমে যমিনে ফসল উৎপন্ন হবে। কিন্তু কিয়ামতের পূর্বে স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যাবে।
[1] – মুসনাদে আহমাদ, আহমাদ শাকের সহীহ বলেছেন। [2] – মুসনাদে আহমাদ, ইমাম হায়ছামী মাজমাউয্ যাওয়াদে বর্ণনা করেছেন, (৭/৩৩০)। ইমাম ইবনে কাছীর বলেনঃ হাদীছের সনদ খুব ভাল। নেহায়া
ফুরাত নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় বের হবে
কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে ফুরাত নদী থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় বের হবে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَحْسِرَ الْفُرَاتُ عَنْ جَبَلٍ مِنْ ذَهَبٍ يَقْتَتِلُ
النَّاسُ عَلَيْهِ فَيُقْتَلُ مِنْ كُلِّ مِائَةٍ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ وَيَقُولُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْهُمْ لَعَلِّي أَكُونُ أَنَا الَّذِي أَنْجُو
‘‘তত দিন পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা যতদিন না ফুরাত নদী থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় বের হবে। মানুষেরা এটি দখল করার জন্যে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এ যুদ্ধে শতকরা নিরানববই জনই নিহত হবে। তাদের প্রত্যেকেই বলবেঃ আমিই এযুদ্ধে রেহাই পাবো এবং স্বর্ণের পাহাড়টি দখল করে নিবো’’।[1]
( মনে রাখবেন এই যুদ্ধ কে “মালহামা” যুদ্ধ বলে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং নিচের হাদিসে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেখান থেকে কোন কিছু গ্রহণ না করতে )
তিনি আরো বলেনঃ
(يُوشِكُ الْفُرَاتُ يَحْسِرُ عَنْ كَنْزٍ مِنْ ذَهَبٍ فَمَنْ حَضَرَهُ فَلَا يَأْخُذْ مِنْهُ شَيْئًا)
‘‘অচিরেই ফুরাত নদী থেকে একটি স্বর্ণের গুপ্তধন বের হবে। সে সময় যে ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হবে সে যেন তা থেকে কোন কিছুই গ্রহণ না করে’’।[2]
[1] – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। [2] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান ওয়া আশরাতুস-সাআ